কৃষক অভিযানেও এনআরসি নিয়ে প্রশ্নের মুখে বিজেপি, অস্বস্তি
কৃষক বিরোধী তকমা মুছতে রাজ্য জুড়ে কৃষক সম্পর্ক অভিযান চালিয়েছে বিজেপি। দলের পক্ষ থেকে এই অভিযানে বিপুল সাড়া পাওয়ার কথা বলা হলেও বেশকিছু সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় প্রচারে গিয়ে দলীয় কর্মীদের এনআরসি বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রচারকদেরই একাংশ। প্রাথমিকভাবে ওই কৃষকদের এনআরসি নিয়ে আশ্বস্ত করা হলেও তাতে আখেরে কতটা সুবিধা হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে দলের অন্দরেই। তবে বিজেপির কৃষক মোর্চার পক্ষ থেকে বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও মালদহের মতো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলায় কৃষক সম্পর্ক অভিযানের ক্ষেত্রে যে ১০০ শতাংশ গ্রামে পৌঁছনো যায়নি, তা অবশ্য মেনে নিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। উল্লেখ্য, মালদহের বাসিন্দাদের অনেকেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত ও কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। কৃষক সম্পর্ক অভিযানে তাঁদের কাছেও পৌঁছনোর চেষ্টা করে বিজেপি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের কৃষক বন্ধু ভাবমূর্তি তুলে ধরার পাশাপাশি সংখ্যালঘু কৃষকদের দলের পক্ষে টেনে আনারও চেষ্টা করা হয়। তবে সেই চেষ্টা কতটা ফলপ্রসূ হয়েছে তা নিয়ে প্রচারকদেরই একাংশ সন্দিহান। এই কর্মসূচির সঙ্গে লাগাতার যুক্ত থাকা বিজেপি কর্মীদের একাংশ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মালদহের কিছু জায়গায় কৃষকরা এনআরসি নিয়ে প্রশ্ন করেছেন। তাঁদের অনেকেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত। এনআরসি লাগু হলে কী পরিণাম হতে পারে, এতে তাঁদের ক্ষতির সম্ভাবনা কতখানি ইত্যাদি প্রশ্ন তাঁরা করেছেন। প্রায় দু’দশক ধরে দলের সঙ্গে যুক্ত থাকা এক বিজেপি কর্মী বলেন, এনআরসি নিয়ে আমার স্পষ্ট ধারণা নেই। তবে দেশের নাগরিকদের একটি সুস্পষ্ট তালিকা সরকারের কাছে রাখা হবে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই বলে জানি। এতে দেশের লাভ হলেও কারও কোনও ক্ষতি হবে না। এটুকুই তাঁদের বুঝিয়েছি। মালদহে এসে সর্বভারতীয় বিজেপি সভাপতি কৃষক সম্পর্ক অভিযানের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করলেও এখনও আমরা ১০০ শতাংশ গ্রামে পৌঁছতে পারিনি। মালদহে ১০০ শতাংশ গ্রামের কৃষকদের কাছে পৌঁছনো সম্ভব না হওয়ার কথা স্বীকার করলেও এনআরসি নিয়ে বিড়ম্বিত প্রশ্নের মুখে পড়ার কথা উড়িয়ে দিয়েছে কৃষক মোর্চা নেতৃত্ব। বিজেপির কৃষক মোর্চার রাজ্য সভাপতি মহাদেব সরকার বলেন, একথা ঠিকই মালদহের ১০০ শতাংশ গ্রামের কৃষকদের কাছে আমরা পৌঁছতে পারিনি। প্রচার অভিযান এখনও চলছে। তবে সব সম্প্রদায়ের কৃষকরাই আমাদের অভিযানে অভূতপূর্ব সাড়া দিয়েছেন। এনআরসি সম্পূর্ণ একটি ভিন্ন বিষয়। ওই বিষয়ে কৃষকরা আলাদা করে জিজ্ঞাসা করেননি।
সংগঠনের উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী বলেন, এনআরসি নিয়ে কিছু ভুল ধারণা তৈরির চেষ্টা কিছু মানুষ করে আসছে। তবে মালদহের বিশেষত আম ও রেশম চাষীরা আন্তরিকভাবে আমাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।