আজ উত্তরবঙ্গে দু’টি শিল্পতালুকের উদ্বোধন করবেন মমতা
শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে চালু হচ্ছে আরও দু’টি শিল্পতালুক। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকার অনুমোদিত শিল্পতালুকগুলি বিন্নাগুড়ি ও ফুলবাড়িতে তৈরি হয়েছে। ভবিষ্যতে দু’টি জায়গায় বিনেয়োগ হবে ৪০০ কোটি টাকা। এতে সরাসরি কর্মসংস্থান হবে ৩০০০ জনের। আজ, সোমবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে শিল্পতালুকগুলির উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করার একসপ্তাহের মধ্যে পার্কগুলি চালু হওয়ায় রীতিমতো উচ্ছ্বসিত তৃণমূল কংগ্রেস। বিধানসভা ভোটের মুখে তারা প্রচারে বিষয়টিকে হাতিয়ার করছে। পাশাপাশি তারা শিল্পবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে তৎপর হয়েছে।
রবিবার পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, শিলিগুড়ি এবং ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি এলাকায় শিল্পস্থাপনের ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে দু’টি শিল্পতালুক তৈরি হয়েছে। সেগুলির উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই অবস্থায় শিল্পস্থাপনে যাতে কোনওরকম সমস্যা না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। তাই শিল্পবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর।
ওই শিল্পতালুকগুলির মধ্যে ‘শিল্পব্রত’ অন্যতম। ফুলবাড়ির বিন্নাগুড়ি মৌজায় সেটি অবস্থিত। প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রায় ২৭ একর জমির উপর ওই তালুকটি গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে শিল্পের ৯২টি ইউনিট গড়া যাবে। ইতিমধ্যে তিনটি ইউনিটের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রায় ৫০ কোটি টাকা খরচ করে এই পার্ক গড়া হয়েছে। কয়েক বছরের মধ্যে এখানে বিনিয়োগ হবে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। এতে সরাসরি কর্মসংস্থান হবে প্রায় ১০০০ জনের।
আরএকটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক গড়া হয়েছে ফুলবাড়িতে। প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রায় আড়াই বছর ধরে চেষ্টা চালিয়ে ৪৫ একর জমির উপর সংশ্লিষ্ট পার্ক গড়া হয়েছে। এখানে ৮০টি ইউনিট তৈরি করা সম্ভব। ইতিমধ্যে চারটি ইউনিট চালু হয়েছে। সেগুলি হল ফোম, কাঁটাতার ও চা পাতার দু’টি প্যাকেজিং ইউনিট। আরও ২০টি ইউনিট তৈরির কাজ চলছে। পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় প্রায় ১২ কোটি টাকা খরচ করে এই পার্ক গড়া হয়েছে। দু’বছরের মধ্যে এখানে ২০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ হবে বলেই আশা করছি। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় উদ্যোগপতিরা যোগাযোগ করেছেন। প্রস্তাবিত ইউনিটগুলি তৈরির পর সরাসরি ২০০০ লোকের কর্মসংস্থান হবে।
সংশ্লিষ্ট দু’টি শিল্পতালুক জলপাইগুড়ি জেলায় অবস্থিত হলেও সেগুলির সঙ্গে শিলিগুড়ির যোগাযোগ ব্যবস্থা মসৃণ। সড়ক, রেল ও বিমানবন্দরের দূরত্ব খুব বেশি নয়। প্রশাসনের আধিকারিকরা জানান, রাজ্য সরকারের অনুমোদন নিয়ে শিল্পতালুকগুলি গড়েছে বেসরকারি সংস্থা। তাই প্রশাসনিক পরিভাষায় এগুলিকে বলা হয় স্টেট অ্যাপরুভড ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক। অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট পার্কগুলির রাস্তা, বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের ব্যবস্থা সহ প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়েছে রাজ্য সরকার। একইসঙ্গে পার্কগুলি গড়তে উদ্যোগপতিদের উৎসাহ ভাতাও প্রদান করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট পার্কগুলির সঙ্গে শিলিগুড়ির যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত ভালো। সড়ক, রেল ও আকশপথে দ্রুত পার্কগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন উদ্যোগপতিরা।
গত সপ্তাহে শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ উৎসবের মঞ্চ থেকে শিল্প স্থাপনের বিষয়ে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সাতদিনের মধ্যে আজ, রাজ্য সরকার অনুমোদিত দু’টি শিল্পতালুকের উদ্বোধন হবে। এ নিয়ে শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গে বেশ কয়েকটি শিল্পতালুক হল।