পরিবর্তন যাত্রার আগে সিউড়িতে গেরুয়া সন্ত্রাস
তৃণমূলের(TMC) পতাকা খোলার প্রতিবাদ করায় এবং দলবদলের ঘটনায় সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিজেপির(BJP) বিরুদ্ধে। এক তৃণমূল কর্মীকে বেধড়ক মারধর করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে পরিবর্তন যাত্রার রথ সিউড়িতে(Siuri) ঢোকার কথা। তার আগে বুধবার রাতে সিউড়ির চৈতালি মোড় সংলগ্ন এলাকার ওই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। এনিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে তৃণমূল। পুলিস এই ঘটনায় চন্দন মাল নামে এক বিজেপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিস জানিয়েছে, এখনও চার অভিযুক্ত বিজেপি কর্মী পলাতক রয়েছে। তাদের খোঁজ চালানো হচ্ছে।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সিউড়ি-২ ব্লকের পুরন্দরপুরে তৃণমূলের মহিলা জনসভায় যোগ দেন বিজেপির যুব সহ সভাপতি অনিন্দ্য সিংহ এবং সম্পাদক কুন্তল ভট্টাচার্য সহ অন্যান্য বিজেপি কর্মীরা। কিছুদিন আগে সিউড়িতে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে বিজেপির জেলা পার্টি অফিসে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ ও মারামারি হয়। এই ঘটনার পরই বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মী সমর্থকরা তৃণমূলে যোগদান করেন। তারপর থেকেই তৃণমূল কর্মীদের উপর বিজেপি ব্যাপক সন্ত্রাস শুরু করেছে বলে অভিযোগ। ওইদিন আকবরকে মারধর করা হয়। তৃণমূলের অভিযোগ, বুধবার রাতে পার্টি অফিস থেকে বাড়ি ফিরছিলেন যুব কর্মী শেখ আকবর। সেই সময় বিজেপির কয়েকজন কর্মী পরিবর্তন যাত্রা উপলক্ষে শহরের বিভিন্ন জায়গায় দলীয় পতাকা টাঙাচ্ছিল। তারা নিজেদের দলীয় পতাকা লাগানোর পাশাপাশি তৃণমূলের পতাকাগুলি খুলে ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছিল। আকবর তা দেখে প্রতিবাদ করে। সেই সময় বিজেপি কর্মীরা তাঁর উপর চড়াও হয়। তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, বুধবার রাতে আমাদের কর্মীরা দলীয় পতাকা টাঙাচ্ছিল। সেই সময় তৃণমূলের কয়েকজন তাতে বাধা দেয়। তারপর বিভিন্ন এলাকা থেকে তৃণমূল লোকজন নিয়ে এসে আমাদের কর্মীদের মারধর করে। মিথ্যা মামলায় আমাদের যুব কর্মীদের ফাঁসিয়েছে। তিনি আরও বলেন, দু’জন যুব কর্মী দল ছেড়ে তৃণমূলে গিয়েছে। এতে কিছু যায় আসে না। ওরা ধান্দাবাজ ছিল। সময় মতো চলে গিয়েছে তাতে দলের উপকার হয়েছে।
তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মহম্মদ আব্দুল সফি বলেন, বিজেপি সন্ত্রাস করে নির্বাচন করতে চাইছে। আমাদের এক কর্মীকে রাস্তায় ফেলে ব্যাপক মারধর করেছে। সে এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ওরা যদি ভাবে সন্ত্রাস করে নির্বাচন করবে, তাহলে ভুল ভাবছে। এর জবাব ওরা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে পাবে।
এছাড়াও বুধবার রাতে বীরভূমের সাঁইথিয়া থানার শ্রীনিধিপুর গ্রামে একটি পুজোকে কেন্দ্র করে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ঘটনায় উভয় পক্ষের দু’জন কর্মী সমর্থক জখম হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে ওই গ্রামে কালীপুজো উপলক্ষে খিচুড়ি ভোগ খাওয়ানোর আয়োজন করা হয়। যেখানে একটি স্থানীয় বিবাদকে কেন্দ্র করে দু’দলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপির লোকজন জোর করে গ্রামে ঢুকে তাদের মারধর করেছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। পুলিস জানিয়েছে, ওই ঘটনায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।