বাজেট এবং কৃষি আইন নিয়ে রাজ্যসভায় কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক সুখেন্দুশেখর
সরকার বলছে কৃষি আইন নিয়ে একাধিক আলোচনা হয়েছে। তবে আরটিআইয়ের মারফৎ সেই সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তার যা উত্তর এসেছে, তাতে সবাই হতবাক। কৃষি আইন (Farm Laws) ইস্যুতে রাজ্যসভায় এই ঘটনা উল্লেখ করে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তুমুল তোপ দাগেন তৃণমূলের সুখেন্দু শেখর রায় (Sukhendu Shekhar Roy)।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ কিছুদিন আগেই বলেছিলেন, যে কৃষি আইনকে কার্যকরী করার আগে বহু বৈঠক করা হয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। সেই কথা ধরেই মোদী সরকারকে একহাত নিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের তরফ থেকে প্রশ্ন করা হয়, যদি আলোচনা হয়েই থাকে ,তাহলে তার রেকর্ড থাকবে। অথচ এই ইস্যুতে আরটিআই করার পর দেখা যাচ্ছে এর কোনও রেকর্ডই নেই।
তৃণমূলের (Trinamool) রাজ্যসভা সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় এদিন বলেন, ‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ জানিয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষের সঙ্গে তাঁদের আলোচনা হয়েছে কৃষি আইন নিয়ে। একটি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যম আরটিআইকে প্রশ্ন করে, কোন কোন কৃষি সংগঠনের সঙ্গে সরকার আলোচনায় বসেছে?আরটিআইয়ের ইনফরমেশন কমিশনার জানিয়েছেন এই নিয়ে কোনও রেকর্ড নেই। কার কথা বিশ্বাস করব? মন্ত্রী নাকি আরটিআই?’
২০২১ বাজেট অধিবেশন নিয়ে বক্তব্য রাখার সময় সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় বলেন, ‘কৃষিক্ষেত্রকে কর্পোরেট সেক্টরের কাছে বিকিয়ে দিচ্ছে মোদী সরকার। এই জায়গা থেকেই তৃণমূল বিরোধিতার রাস্তায় হাঁটছে।’
এছাড়াও বাজেটে বাংলায় ৬৭৫ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষণাকে ‘ললিপপ’ বলে কটাক্ষ করেন সাংসদ। এদিন রাজ্যসভায় বাজেটের (Budget) প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, কেন্দ্র বাংলার সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করে থাকে। চারটি রাজ্যে নির্বাচন আসন্ন। স্বাভাবিকভাবেই বাজেটে সেই রাজ্যগুলির উপর বিশেষ নজর ছিল। কিন্তু বাংলার ক্ষেত্রেই বরাদ্দ সবথেকে কম।’ সাংসদ আরও বলেন, ‘গত ১০ বছরে ৩১ ও ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক চওড়া করতে পারেনি কেন্দ্র, আর এখন ৬৭৫ কিলোমিটার হাইওয়ে তৈরির কথা বলছে।’
১০ বছরে রাজ্য সরকার রাস্তা তৈরির কতটা কাজ করেছে, সেই হিসেবও রাজ্যসভায় দেন সুখেন্দু শেখর। তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকার গত ১০ বছরে ৮৮,৮৪১ কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা তৈরি করেছে, ৫,১১১ কিলোমিটার স্টেট হাইওয়ে তৈরি করেছে।’ আম্পান নিয়েও এদিন অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, ‘১০০০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অথচ আজ পর্যন্ত এক টাকাও দেওয়া হয়নি।’ তাঁর দাবি, স্বাধীন ভারতে কোনও সরকার এভাবে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরিস্থিতিতে কোনও রাজ্যের প্রতি এরকম অবিচার করেনি। এটা লজ্জাজনক।’
বাজেটের পরিসংখ্যান তুলে ধরে সাংসদ বলেন, ‘১৪.৪ শতাংশ আর্থিক বৃদ্ধির যে হিসেব দেওয়া হচ্ছে, তা কিসের কিসের ভিত্তিতে দেওয়া হচ্ছে? এই হিসেব আদতে ভিত্তিহীন।’ ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের তথ্যও তুলে ধরেন সাংসদ। বলেন, ‘বিশ্ব ব্যাঙ্ক যে পরিসংখ্যান দিয়েছিল তাতে ভারতের জিডিপি ৯.৬ শতাংশ পতনের দিকে এগোচ্ছে। কেন্দ্র সেই রিপোর্ট অস্বীকার করলেও কোনও ইতিবাচক যুক্তি দেখাতে পারেনি।’