ফিরে দেখা পুলওয়ামা হামলা
২০১৯- এর শুরুতেই দেশের বুকে নেমে এসেছিল এক অভিশাপের কালো অন্ধকার। দিনটা ছিল ১৪ ই ফেব্রুয়ারী, ভালোবাসার দিন। ঠান্ডা মাথায় এই পৈশাচিক ঘটনাকে পরিণতি দেওয়া হয়। গত দু’দশকে সশস্ত্র বাহিনীর উপর ঘটে যাওয়া হামলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ধংসাত্বক হামলা।
১৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু শ্রীনগর জাতীয় মহাসড়কে নিরাপত্তা বাহিনীর একটি গাড়ির ওপর একটি স্করপিও দিয়ে এক আত্মঘাতী হামলা করে সন্ত্রাসবাদীরা। সেই বোমা হামলায় অন্তত ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান নিহত হন । ঘটনাটি ঘটে পুলওয়ামা জেলার আওয়ান্তিপুরা এলাকায়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতীয় বাহিনীর ওপর এটাই সবচেয়ে বড় হামলা।
উল্লেখ্য, জম্মু-কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে এই হামলা হয়। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তরফে জানা যায়, সিআরপিএফের প্রায় ৭৮টি গাড়ি লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়। হামলায় বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছিলেন ।
ওই হামলায় প্রায় ৩৫০ কেজি বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছিল। সন্ত্রাসী সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ এই হামলার দায় স্বীকার করে। সংগঠনটির একজন মুখপাত্র বলেছিল, এটি আত্মঘাতী হামলা। আদিল আহমাদ এই হামলা চালান। তিনি ২০১৮ সালে আদিল সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে যোগ দেয়।
ওই ৭৮টি গাড়িতে সিআরপিএফ-এর প্রায় আড়াই হাজার জওয়ান ছিল। পুলওয়ামার (Pulwama) অবন্তীপুরার কাছে কনভয় পৌঁছতেই, উলটো দিক থেকে একটি এসইউভি গাড়ি কনভয়ের কাছাকাছি চলে আসে। তারপরেই ঘটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। পাশেই ছিল চুয়ান্ন নম্বর ব্যাটেলিয়নের বাস। বিস্ফোরণে উড়ে যায় জওয়ানদের বাসটি। হামলার জেরে বহু জওয়ানের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। রক্তাক্ত রাজপথ। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে জওয়ানদের দেহাংশ, গাড়ির যন্ত্রাংশ। শ্রীনগর-অনন্তনাগ হাইওয়ে তখন যেন যুদ্ধক্ষেত্র।
ওই হামলার নেপথ্যে শুধু জঙ্গিরাই নয়, রয়েছে আরও বেশ কয়েকজন ষড়যন্ত্রকারী, এমন সন্দেহ বরাবরই ছিল ভারতীয় গোয়েন্দাদের। পুলওয়ামায় কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের কনভয়ের উপর হামলা করতে ব্যবহৃত ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস বা আইইডি তৈরির জন্যে অনলাইনে আমাজন থেকে রাসায়নিক কিনেছিল অভিযুক্তরা।
জঙ্গিহানার (Terror Attack) ভয়াবহ ছবি দেখে সেদিন শিউরে উঠেছিল গোটা দেশ। আজও দগদগে সেই ক্ষত প্রতি ভারতীয়র মনে।