রাজবংশী সমাজের প্রাণপুরুষ ঠাকুর পঞ্চানন বর্মা
কোচবিহারের রাজবংশী সমাজের প্রাণপুরুষ ঠাকুর পঞ্চানন বর্মা (Panchanan Barma)। সমাজ সংস্কারক পঞ্চানন বর্মা রাজ বংশী (Rajbanshi) সমাজের বিশেষত নারী শিক্ষার জন্য তাঁর জীবন ভর কাজ করেছেন। তাঁর কাজের জন্য পরতে হয়েছে রাজ রোষেও, তবুও বিরত হননি তিনি। কোচবিহারের এক অখ্যাত গ্রামে জন্মে গোটা উত্তরপূর্ব ভারতের রাজবংশী সমাজের সংস্কার সাধনে নিয়োজিত করে ছিলেন নিজেকে। পিছিয়ে পরা রাজবংশী সমাজকে দিয়েছিলেন ক্ষত্রিয়র মর্যাদা।
কোচবিহার (Cooch Behar) জেলার মাথাভাঙ্গা মহকুমার খলিসামারী গ্রামে ১৮৬৫ সালে তাঁর জন্ম। পিতা খোসাল সরকার ছিলেন একজন জোতদার এবং মাথাভাঙ্গা মহকুমা কাচারির মোক্তার। পঞ্চানন বর্মা কোচবিহার ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন, কলকাতা সরকারি সংস্কৃত কলেজ থেকে সংস্কৃতে এম.এ এবং ১৮৯৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএল ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯০১ সালে তিনি রংপুরে আইন ব্যবসা শুরু করেন।
তিনি রাজবংশীদের প্রথম এম এ, আইনের স্নাতক বলে জানা যায়। রাজবংশী জাতির জনক বলে অনেকে পঞ্চাননকে অভিহিত করেন। বিশেষজ্ঞদের দাবি, শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকার পরেও কাজ না পেয়ে তিনি রাজ্য ছেড়ে রংপুরে চলে যান। অনেকের দাবি, মহারাজার সঙ্গে মতবিরোধ হওয়ায় তাঁকে রাজ্য ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
পঞ্চানন বর্মা তাঁর আইনপেশার পাশাপাশি রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি ১৯২০, ১৯২৩ ও ১৯২৬ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি রংঙ্গুর সাহিত্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং রঙ্গপুর সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন (১৩১৩-১৩১৯)। নিজ সম্প্রদায়ের উন্নতিকল্পে তাঁর যোগ্য নেতৃত্ব এবং সরকারের কাজে সহযোগিতার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ‘রায় সাহেব’ এবং Member of British Empire (MBE) উপাধিতে ভূষিত হন। ১৯৩৫ সালে তাঁর মৃত্যু হয়।