কলকাতায় আরও ৭টি ‘বাংলার বাড়ি’ গড়তে উদ্যোগী পুরসভা
কলকাতায় বস্তিবাসীদের পুনর্বাসনের জন্য আরও ৭টি ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্প হাতে নিল কলকাতা পুরসভা। অনুমোদনের জন্য তা পাঠানো হয়েছে রাজ্য সরকারের কাছে। জমি চিহ্নিত করা হয়ে গিয়েছে। ছাড়পত্র মিললেই শুরু হবে কাজ। খরচ হবে আনুমানিক ৬০ কোটি টাকা।
বাংলার বাড়ি প্রকল্পে যে নতুন নির্মাণগুলি হবে, সেগুলি হল, উত্তর কলকাতার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রসগোল্লা বস্তি, কুঁদঘাটের ব্রিক ফিল্ড রোড, খিদিরপুরের অরফ্যানগঞ্জ মার্কেট এলাকা, উল্টোডাঙ্গার হরিজন বস্তি ও খালপাড়ে বাসন্তী কলোনির একাংশে, ইএম বাইপাসের ধারে নেতাজি কলোনি এবং উত্তর কলকাতার ১৫ নং ওয়ার্ডের লালাবাগান লেনে।
প্রায় সাত বিঘা জমির উপর জে কে ঘোষ রোডে রসগোল্লা বস্তিতে ২৪টি আবাসন তৈরি হবে। থাকবে ৩৮৪টি ফ্ল্যাট। ব্রিক ফিল্ড রোডে তিনটি আবাসন তৈরি করা হবে। থাকবে ৪৮টি ফ্ল্যাট। এখানে পুনর্বাসন দেওয়া হবে টালিনালার পার্শ্ববর্তী অংশের বস্তিবাসীদের। জানা গিয়েছে, মাসখানেকের মধ্যেই এই প্রকল্পের কাজ শুরু করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। এছাড়াও টালিনালা সংলগ্ন অঞ্চলের কিছু ঝুপড়িবাসীকে পুনর্বাসন দেওয়া হবে খিদিরপুরের অরফ্যানগঞ্জ মার্কেটের ভিতরের ফাঁকা জায়গায়। এখানে চারটি আবাসনে থাকবে ৬৪টি ফ্ল্যাট। উল্টোডাঙ্গার খালপাড়ে বাসন্তী কলোনির অপর অংশের বস্তিবাসীদের সরিয়ে সেখানে নতুন ফ্ল্যাট তৈরির প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সেখানেও ধাপে ধাপে ১৩টি বহুতল বানানো হবে। থাকবে ২০৮টি পরিবারের থাকার জায়গা। একইসঙ্গে ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে শহরের ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে সবথেকে বড় নির্মাণ হতে চলেছে। ভিএসএনএল টাওয়ারের পাশে হরিজন বস্তি এলাকায় তৈরি করা হবে ২৮টি আবাসন। থাকবে ৪৪৮টি ফ্ল্যাট। উত্তর কলকাতার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ২ নম্বর লালাবাগান লেনে দু’টি ফ্ল্যাটে ৩২টি পরিবারকে পুনর্বাসন দেওয়া হবে। সব প্রকল্পের ডিপিআর তৈরি হয়ে গিয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। পাশাপাশি, বাইপাসের ধারে পুড়ে যাওয়া নেতাজি কলোনিতেও তৈরি হবে ‘বাংলার বাড়ি’ (Banglar Bari)। বস্তিবাসীরাই এই প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। যদিও এই প্রকল্পের ডিপিআর
এখনও প্রস্তুত হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী, প্রত্যেকটি ফ্ল্যাটের জন্য বরাদ্দ পাঁচ লক্ষ টাকা। এর সঙ্গে পাঁচিল দেওয়া, পানীয় জলের ব্যবস্থা, নিকাশি নালার তৈরি সহ আনুষঙ্গিক খরচ ধরা হয় আরও কয়েক কোটি টাকা। আপাতত, ছ’টি প্রকল্পের প্রজেক্ট রিপোর্ট তৈরি। মোট বরাদ্দের অঙ্ক ৬০-৬২ কোটি টাকা।
‘বাংলার বাড়ি’ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বস্তিবাসীদের প্রদান করা হয়। তবে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আবাসিকদের। এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে কলকাতা পুরসভা। কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বলেন, আমরা বিনামূল্যে বাড়ি বানিয়ে দিচ্ছি। কিন্তু প্রতিটি আবাসনে কো-অপারেটিভ বানিয়ে রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে আবাসিকদের।
কলকাতায় প্রথম ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে ‘মায়ের বাড়ি’ বানানো হয়। বর্তমানে উত্তর কলকাতার ক্যানাল ইস্ট রোডে একটি প্রকল্প শুরু হচ্ছে। বেহালাতেও দু’টি প্রকল্পের কাজ চলছে। সব মিলিয়ে আপাতত ১১টি ‘বাংলার বাড়ি’র কাজ হাতে নিয়েছে কলকাতা পুরসভা।