কোনও পার্টি করত না মঈদুল, বলল তার বোন, মৃত্যুর তদন্তে পুলিশ
মইদুল ইসলাম মিদ্যার দেহের অভ্যন্তরীণ আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। হাঁটুতে চোট ছিল। এমনটাই বলছে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট। ভিসেরা রিপোর্ট আসলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে। এর পাশাপাশি উঠছে একাধিক প্রশ্নও, ১১ থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি কোথায় ভর্তি ছিলেন মইদুল? কেন তাঁকে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়নি? পুলিসেও বা খবর দেওয়া হল না কেন?
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে বলেন,’যে কোনও মৃত্যু দুঃখজনক।’ তদন্ত করে মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যেই তদন্তে নেমে পড়েছে পুলিস। সেই সঙ্গে পুলিসি তদন্তে উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন। আজ, সোমবার সকাল ৭টা নাগাদ মৃত্যু হয় মইদুল ইসলামের। ১৪ ফেব্রয়ারি রাত ২টো নাগাদ লাইফ লাইন নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় তাঁকে। ১১ ফেব্রুয়ারি নবান্নে অভিযানে আহত হয়েছিলেন মইদুল ইসলাম। তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল একটি ক্লিনিকে। এই ১১ থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি কোথায় ভর্তি ছিলেন? কীভাবে চিকিৎসা হয়েছিল তাঁর? সেটাই জানতে চাইছেন তদন্তকারীরা। কারণ, ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, মইদুলের শরীরে অভ্যন্তরীণের আঘাতের চিহ্ন নেই। হাঁটুতে ঘর্ষণজনিত চোট রয়েছে। মইদুলের চিকিৎসায় গাফিলতি হয়েছে কিনা, সেই দিকটাই মূলত খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রশ্ন উঠছে, কেন সরকারি হাসপাতাল ছেড়ে মইদুলকে ক্লিনিকে ভর্তি করা হল? তার উপরে এই ধরনের ঘটনায় স্থানীয় থানায় জানাতে হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। এক্ষেত্রে তা করা হয়নি। গতকাল, রবিবার বিকেল ৪টে নাগাদ মইদুলের খবর জানানো হয় পুলিসকে। পুলিস সূত্রে খবর, ওই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে জেরা করা হবে। জানতে চাওয়া হবে, কেন তারা পুলিসকে বিষয়টি জানায়নি? এ দিন ফুয়াদ হালিমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে পুলিস সূত্রে খবর।
মইদুল কোনও দল করতেন না। বামেদের নবান্ন অভিযানে যে তিনি যাচ্ছেন এ কথা পরিবারের কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পাননি। এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করল গত ১১ ফেব্রুয়ারি বাম ছাত্র যুবদের নবান্ন অভিযানে আহত হয়ে পরে প্রাণ হারানো মইদুল ইসলাম মিদ্যার বোন।
বাম যুব কর্মীর মৃত্যু ঘিরে সকাল থেকেই উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। বাম-ডান দলমত নির্বিশেষে প্রত্যেকেই এই ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলেছে। সিপিএম, কংগ্রেসের দাবি, পুলিশই নৃশংসভাবে খুন করেছে ৩১ বছর বয়সী ডিওয়াইএফআই নেতা মইদুল ইসলাম মিদ্যাকে। এই প্রেক্ষিতে তাঁর পরিবারের এক সদস্যের দাবি ভিন্ন। মৃত মহিদুলের বোনের কথায়, ‘কেউ জানতাম না যে দাদা নবান্ন অভিযানে অংশ নিতে যাচ্ছে।’ তাঁর আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, ‘দাদা (মইদুল) কোনও পার্টি করত না। তাঁকে বৃহস্পতিবার কয়েকজন ভুলিয়ে-ভালিয়ে নিয়ে গিয়েছিল।’ মৃত মইদুলের বোনের আরও দাবি, যে চারজন গত বৃহস্পতিবার তাঁদের বাড়িতে আসেন তাঁরা কেউ এলাকার বাসিন্দা নন। পূর্ব পরিচিতও নন। মইদুলের শোকার্ত পরিবারের দাবি, তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তাঁকে ‘ভুলিয়ে-ভালিয়ে’ নিয়ে যাওয়া হয়।