জাতীয় সড়ক ও সেতু সংস্কার – কেন্দ্রকে চিঠি শতাব্দীর
জাতীয় সড়ক ও জেলার আটটি সেতুর সংস্কারের দাবিতে এবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গাদকারিকে (Nitin Gadkari) চিঠি দিলেন বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায় (Satabdi Roy)। চিঠি পেয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দ্রুত মেরামতের আশ্বাস দিয়েছেন বলে সাংসদের দাবি। এই উদ্যোগে খুশি জেলার মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অনেক আগেই জাতীয় সড়কের পিচ, পাথর উঠে গিয়েছে। ক্রমাগত যানবাহন চলাচলের জেরে কার্যত ধুলোর ঝড় চলছে এলাকায়। রাস্তার দু’পাশে গাছের পাতা, টিনের চাল, বাড়ির দেওয়াল, খেতের ফসল সবই ধুলোয় ধূসর হয়ে রয়েছে। জাতীয় সড়ক লাগোয়া বাসিন্দাদের ক্ষোভ, এর জেরে শ্বাসকষ্টের মতো রোগ বাড়ছে। তেমনই ভাঙাচোরা সড়কে চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। কখনও যাত্রীবোঝাই বাস উল্টে যাচ্ছে, কখনও লরির যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। বছর পাঁচেক ধরে বেহাল হয়ে থাকলেও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। বহুবার এলাকার মানুষ পথ অবরোধ করে মেরামতের দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু আশ্বাস ছাড়া কিছুই মেলেনি। সড়কের উপর থাকা ব্রিজগুলি ওঠার মুখে বিপজ্জনক বোর্ড লাগিয়ে দায় সারা হয়েছে। যে কোনও দিন সেই ব্রিজগুলি ভেঙে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সমস্যার সমাধানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে চিঠিতে সাংসদ লিখেছেন, দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের সংযোগকারী এই সড়ক দিয়ে প্রচুর পণ্য ও যাত্রীবাহী যানবাহন চলে। জেলায় পাথর শিল্পাঞ্চল, প্রচুর নদনদী থাকায় পাথর ও বালিবোঝাই ভারী যানবাহন চলাচল করে। সড়কের উপর থাকা বহু পুরনো সেতুগুলি বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। যে কোনওদিন সেগুলি ভেঙে যোগাযোগ ব্যাহত হতে পারে। তাই মানুষের স্বার্থের কথা ভেবে নাকপুর চেকপোস্টের কাছে গম্ভীরা ব্রিজ, মল্লারপুর আরওবি, কার্গিল সেতু, খইরাকুড়ি সেতু, চন্দ্রভাগা সেতু, বক্রেশ্বর সেতুর দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন। নলহাটি থেকে মোড়গ্রাম পর্যন্ত সড়কের অবস্থাও বেহাল। অবিলম্বে মেরামতের দাবি করছি।
শতাব্দীদেবী বলেন, এর আগে পার্লামেন্টে সড়কের বেহাল অবস্থার কথা তুলে ধরেছিলাম। সেই সময় কিছুটা কাজ হয়েছিল। কিন্তু বহু জায়গায় সড়ক ও সেতুগুলির অবস্থা খারাপ। তাই নীতিন গাদকারির সঙ্গে দেখা করে চিঠি দিয়েছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।
সড়কের দায়িত্বে থাকা এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনয়ার নিশিকান্ত সিং বলেন, রাস্তার সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। নির্দেশ এলেই কাজ শুরু হবে।
নলহাটির বাসিন্দারা বলেন, জাতীয় সড়কের বিস্তীর্ণ অংশ এখন নিত্যযাত্রীদের কাছে বিভীষিকা। বেহাল দশার কারণে বাসের ঝাঁকুনিতে সিটে বসে থাকা দায়। বাস মাঝেমধ্যে একদিকে কাত হয়ে চলছে। এর জেরে যাত্রীরাও আতঙ্কিত। তার উপরে জানালা বন্ধ করেও ধুলো ঢোকা আটকানো যাচ্ছে না। সড়কের এই ধুলো শুধু এলাকাবাসী নয়, মোটর বাইক চালকদের কাছেও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। চাকা পিছলে পড়ে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন তাঁরা। অথচ এই রাস্তা ধরে অনেকেই কলকাতা-বোলপুর রুটে যাতায়াত করেন। তারাপীঠ ও জেলায় বিভিন্ন সতীপীঠ থাকায় পর্যটকদের গাড়ির পাশাপাশি, এই রাস্তা গিয়ে দিনভর পাথর, বালিবোঝাই বহু ট্রাক চলে। লাগোয়া মুর্শিদাবাদ ও ঝাড়খণ্ড থেকে রামপুরহাট মেডিক্যালে আসতেও অনেকে এই রাস্তা ব্যবহার করেন। রাস্তার সংস্কার হলে সকলেরই দুর্ভোগ কমবে।