বাম-কংগ্রেস-আব্বাস জোট চূড়ান্ত
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য জোট করে লড়ার কথা অনেক আগেই ঘোষণা করেছিল দুই শিবির। কয়েক দফা আলোচনায় বসার পর অবশেষে মঙ্গলবার বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব পারস্পরিক আসন রফার কাজ চূড়ান্ত করল। তাদের এই জোটে ভাইজানের দল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট ও তাদের সহযোগীদের শামিল করতে বদ্ধপরিকর বাম শিবির। কংগ্রসেরও এই মহাজোটের উদ্যোগে বিশেষ আপত্তি নেই। তবে সিদ্দিকিরা যে সংখ্যা বা আসনগুলি দাবি করে তালিকা পাঠিয়েছে তাতে জোটের প্রধান দুই শিবিরেরই কিছু আপত্তি রয়েছে। আজ বুধবার এনিয়ে আইএসএফ-এর সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনায় বসে জট কাটানোর চেষ্টা করবে সিপিএম (CPM) ও কংগ্রেস (Congress) নেতৃত্ব। এই কারণে এদিন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী (Adhir Chowdhury) যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে বাম-কংগ্রেস জোটে সিদ্দিকির দলের শামিল হওয়ার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিলেও মহাজোটের শরিকরা কে, কত আসনের ভাগীদার হবে তার সংখ্যা এদিন জানাননি। একই সঙ্গে ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশে কংগ্রেস সর্বশক্তি নিয়ে যোগ দেবে বলে অধীর এদিন ঘোষণা করেছেন।
এদিন বেলায় আলিমুদ্দিনের বাম শিবিরে তরফে সিপিএমের তিন শীর্ষ নেতা বিমান বসু (Biman Bose) , সূর্যকান্ত মিশ্র ও মহম্মদ সেলিম কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। অধীর ছাড়াও তাঁর সঙ্গে দলের তরফে ছিলেন আব্দুল মান্নান, প্রদীপ ভট্টাচার্য, নেপাল মাহাত ও মনোজ চক্রবর্তী। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে বৈঠক চলে। বৈঠকে এদিন আসনওয়াড়ি আলোচনায় পারস্পরিক বিনিময় সূত্র ধরে কংগ্রেসের জন্য ৮৮টি আসন চূড়ান্ত হয়। এর আগে কংগ্রেসের জন্য ৯২টি আসনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এদিন অবশ্য কংগ্রেস তাদের কোটায় সব মিলিয়ে ১০৮-১১০টি আসনের জন্য তদ্বির করে। তবে ভাইজানের দলের পাশাপাশি আরজেডি, এনসিপি প্রভৃতি ছোট দলগুলি বাম-কংগ্রেস জোটের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মহাজোট গঠনের প্রস্তাব দেওয়ায় অত আসন অধীরদের জন্য বরাদ্দ করা সম্ভব হবে না বলে জানান বিমানরা।
সূত্রের খবর, কংগ্রেসের সঙ্গে আসন বণ্টনের বোঝাপড়া ইতিবাচক হলেও ভাইজানের দল বা তার সহযোগীদের নিয়ে জট এদিনও থেকে গিয়েছে। সোমবার বেশি রাতে আলিমুদ্দিনে ভাইজানের ভাই তথা আইএসএফ-এর চেয়ারম্যান নৌশাদ সিদ্দিকির সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন বিমান-সেলিমরা। সেই বৈঠকে নৌসাদ তাঁদের ও সহযোগীদের জন্য ন’টি জেলায় ৭২টি আসনের একটি তালিকা তুলে দেন বিমানদের। সেই তালিকা দেখেই অবশ্য সিপিএম নেতৃত্ব অত আসন দেওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই বলে সাফ জানান। যদিও সেই বৈঠকেই কিছু আসন কমানোর ইঙ্গিত দেন নৌশাদ। যদিও অধীর মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর ও দুই ২৪ পরগনার কয়েকটি আসনে ভাইজানদের দাবির সঙ্গে এদিন একমত হতে পারেননি। এদিন বিমান-অধীররা তাঁদের জোটে শামিল করার ইঙ্গিত দিয়েছেন শুনে নৌশাদ বলেন, আমরা অন্তত ৫০টির মতো আসন চাইব। বুধবারের আলোচনায় সেটা স্পষ্ট করেই জানাব। ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য আমরাও চাই।
বিমান এদিন খানিকটা ঘোষণার সুরেই বলেন, বাম-কং জোটে আইএসএফ শামিল হতে চলেছে। যদিও অধীরের কথায় ততটা স্পষ্ট বার্তা ছিল না। তিনি বলেন, আইএসএফ (ISF), আরজেডি, এনসিপির মতো দলগুলি আমাদের জোটের প্রতি আস্থা দেখিয়েছে। তাই তাদের প্রতি সম্মান দেখাতে আমরা বাম-কংগ্রেসের আসন সংখ্যা এখন ঘোষণা করছি না। দু’-একদিন আরও আলোচনার পর আসন নিয়ে ঘোষণা করা হবে।