সরস্বতী পুজোর থিমেও রাজনীতির ছোঁয়া
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজ ক্যাম্পাসে এ বার সরস্বতী পুজোর থিম, কৃষক আন্দোলন। কেন্দ্রের কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে প্রায় পাঁচ মাস ধরে চলতে থাকা কৃষক আন্দোলনকে এ বার তুলে আনা হয়েছে বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজের সরস্বতী পুজোয়। আয়োজক বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সমর্থক, সদস্যেরা।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বার পড়ুয়াদের সরস্বতী পুজো (Saraswati Pujo) করার অনুমতি দেননি। পুজো যাতে হয় সে জন্য ছাত্রদের পক্ষ থেকে কর্তৃপক্ষকে আবেদন জানানোও হয়েছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ অনড় ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ছাত্রছাত্রীরা ক্যাম্পাসে আসছেন না। তাই এ বছর আর ক্যাম্পাসে পুজো না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ আর নেই। ফলে পুজোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কাকে টাকা দেবে, সেই প্রশ্নও বড় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় শনিবার জানিয়েছিলেন, ছাত্রছাত্রীদের সরস্বতী পুজো করতে দেওয়া উচিত। যদি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অফিস খোলা থাকে, তা হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুজো করতে দিতে অসুবিধা কোথায়? টিএমসিপি রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যও ওই দিন জানিয়েছিলেন, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় সর্বত্র কোভিড বিধি মেনে পুজো করা হবে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধুনালুপ্ত টিএমসিপি নেতৃত্বাধীন ছাত্র সংসদের সভানেত্রী রুমানা আখতার এ দিন জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ক’টি ক্যাম্পাসে পুজো হয়, এ বারও তা হচ্ছে। টিএমসিপি সম্পূর্ণ নিজেদের খরচে এই পুজো করছে। কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তারা কোনও সহায়তা নেয়নি। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেই। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী নিজেই চেয়েছেন পুজো হোক।
বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজে (Ballygunge Science College) যেমন কৃষক আন্দোলনকে (Farmers Protest) পুজোর থিম করা হয়েছে। অন্যান্য ক্যাম্পাসের পুজোগুলিতে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পকে তুলে ধরা হয়েছে। কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসের টিএমসিপি কর্মী রনি ঘোষ জানালেন, স্বাস্থ্যসাথী, কন্যাশ্রী, দুয়ারে সরকার রাজ্য সরকারের এই রকম নানা উদ্যোগকে পুজোয় তুলে ধরা হয়েছে।
মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের সরস্বতী পুজো করতে দিতে না চাওয়ায় দু’দিন ধরে কলেজে টিএমসিপির নেতৃত্বে ছাত্র বিক্ষোভ হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ তাঁদের সিদ্ধান্তে অটল। কলেজে টিএমসিপি-র ইউনিট সভাপতি তন্ময় সরকার জানালেন, কর্তৃপক্ষ রাজি না হওয়ায় তাঁরা শুধু ঘটপুজোর বেশি আর কিছু করতে পারবেন না। তাঁর আফশোস, অথচ ওই কলেজেরই সকাল এবং সান্ধ্য কলেজে পুজো হচ্ছে।