ভেঙেই ফেলা হবে পোস্তার উড়ালপুল
পাঁচ বছর পর অবশেষে পোস্তা উড়ালপুল(Posta Flyover) ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার(Govt of West Bengal)। ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ বিধানসভা ভোটের মুখে ভেঙে পড়েছিল নির্মীয়মাণ এই উড়ালপুলটি। ওই ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন ২৮ জন। উড়ালপুল ভাঙার পর তার ভবিষ্যৎ কী হবে, তা ঠিক করতে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি তৈরি করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। প্রথমে খড়্গপুর আইআইটি’র বিশেষজ্ঞরা উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। কিন্তু তাদের রিপোর্ট অস্পষ্ট থাকায় প্রখ্যাত ব্রিজ বিশেষজ্ঞ ভি কে রায়নাকে দায়িত্ব দেয় সরকার। তিনি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণের পর নির্মীয়মাণ উড়ালপুলটি ভেঙে ফেলার পরামর্শ দেন। সেই মতামতকেই গুরুত্ব দিতে চলেছে রাজ্য সরকার। ভাঙার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রেলের অধীনস্থ সংস্থা রাইটসকে।
পোস্তা উড়ালপুল তৈরির সময় থেকেই আপত্তি জানিয়েছিলেন সেখানকার বাসিন্দারা। ২০১৬ সালের সেই দুর্ঘটনার পর বিভিন্ন জায়গায় তাঁরা দরবার করলেও লাভ হয়নি। এই উড়ালপুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে এতদিন অন্ধকারে ছিলেন তাঁরা। গত পাঁচ বছরে অনেকেই নিজেদের পুরনো বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। ভেঙে পড়া উড়ালপুলের ধারে থাকার ঝুঁকি নিতে রাজি নন তাঁরা। এই সমস্যার সমাধান হলে পোস্তা কি ফিরবে আগের অবস্থায়? উত্তরের অপেক্ষায় বাসিন্দারা।
বাম আমলে উড়ালপুলটি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেএমডিএ। উড়ালপুলের নকশা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। পোস্তা এলাকার ঘিঞ্জি পরিবেশে উড়ালপুল করা যায় কি না, তা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন ইঞ্জিনিয়াররা। শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক চাপে কেএমডিএ তা তৈরি করতে বাধ্য হয়। দক্ষিণ ভারতের একটি সংস্থা এটি তৈরির দায়িত্বে ছিল। সেটি ভেঙে পড়ার পর এর ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে দোটানায় ছিল তৃণমূলের সরকার। প্রশ্ন উঠেছিল, উড়ালপুল ভাঙতে গেলে নতুন করে কোনও বিপদ হয় না তো? মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় দফায় দফায় বৈঠক করে উড়ালপুলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে পন্থা বের করার চেষ্টা করেন।
টালা ব্রিজের ভবিষ্যৎ যিনি ঠিক করেছিলেন, সেই ব্রিজ বিশেষজ্ঞ ভি কে রায়নাকেই এই দায়িত্ব দেয় সরকার। তাঁর পরামর্শেই পোস্তা উড়ালপুল ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিল সরকার। ভেঙে ফেলার পরে ওখানেই নতুন করে তৈরি হবে এই উড়ালপুল। মাঝেরহাট ব্রিজ, টালা ব্রিজের পর পোস্তা তথা বিবেকানন্দ উড়ালপুল ভাঙার সাহসি সিদ্ধান্ত নিল সরকার। এব্যাপারে কেএমডিএ’র চেয়ারম্যান তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আমরা বিশেষজ্ঞের মতামতকে
যাচাই করেই ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। রাইটসকে এই দায়িত্ব দেওয়া
হয়েছে। তারাই ঠিক করবে, কারা ভাঙবে। ভেঙে ফেলে নতুন করে তৈরি করা হবে পোস্তা উড়ালপুল। ভবিষ্যতে উল্টোডাঙা থেকে
পোস্তা পর্যন্ত উড়ালপুল করারও পরিকল্পনা রয়েছে।