প্রতিশ্রুতি রাখেনি কেন্দ্র, রাজ্যের উদ্যোগে খুলল বীরপাড়া চা বাগান
রাজ্য সরকারের উদ্যোগে মঙ্গলবার মাদারিহাটের বন্ধ বীরপাড়া(BirPara) চা বাগানও (Tea Garden)খুলল। একটি গ্রুপের সাতটি বন্ধ বাগানের মধ্যে রাজ্য সরকার এর আগে গ্যারগেন্দা, ডিমডিমা, হান্টাপাড়া, ধুমচিপাড়া ও তুলসীপাড়া বাগান খুলে দিয়েছে। মঙ্গলবার বীরপাড়া বাগান খোলায় শ্রমিকদের মধ্যে খুশির হওয়া ছড়ায়। ওই গ্রুপের আর একটি বন্ধ বাগান থাকল, লঙ্কাপাড়া। ভোটের আগে বাগান খোলায় এদিন বীরপাড়া চা বাগানের শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস উদ্দীপনা ছিল।
এদিন শ্রমিকদের পুজো ও অন্যান্য ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের পর ফিতে কেটে বাগানটি খোলা হয়। বাগান খোলার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাগানের নতুন মালিক সুরজিৎ বক্সি, শ্রমদপ্তরের বীরপাড়ার সহকারী শ্রম কমিশনার নীল ছেত্রী সহ তৃণমূল কংগ্রেস, বাম ও কংগ্রেসের চা শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের(Bengal Election 2021) আগে বীরপাড়ায় এসে সংশ্লিষ্ট ওই গ্রুপের সাতটি বন্ধ চা বাগান অধিগ্রহণ করে খোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছিলেন। কেন্দ্রের তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও সেই সময় বীরপাড়ায় এসে প্রধানমন্ত্রীর মতো একই প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। কিন্তু মোদি সরকার মাদারিহাটে ওই গ্রুপের একটি বন্ধ বাগানও খুলতে পারেনি।
পরে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ওই গ্রুপের বন্ধ থাকা পাঁচটি চা বাগান খুলে যায়। রাজ্য সরকারের সেই উদ্যোগেরই ফসল হিসেবে এবার খুলল বীরপাড়া বাগানটিও। মাদারিহাটে ওই গ্রুপের বন্ধ লঙ্কাপাড়া চা বাগানটি সহ এই মুহূর্তে জেলায় আর বন্ধ চা বাগান থাকল পাঁচটি। লঙ্কাপাড়া ছাড়া অন্য বাকি চারটি বন্ধ বাগান হল ঢেকলাপাড়া, বান্দাপানি, তোর্সা ও মধু।
শ্রমদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরপাড়া বাগানের শ্রমিক সংখ্যা ২২০০। প্রথম দিনেই প্রায় ৫০০ জন শ্রমিক বাগানের কাজে যোগ দেন। বাগান বন্ধ হওয়ার পর বহু শ্রমিক কাজের সন্ধান বাইরে চলে যান। তাঁরাও ধীরে ধীরে বাগানের কাজে যোগ দেবেন বলে শ্রমদপ্তর জানিয়েছে। নতুন মালিকপক্ষ বীরপাড়া চা বাগানের শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি ও দুর্গাপুজোর বোনাস মিলিয়ে ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা আগামী আটমাসে মিটিয়ে দেবে বলে জানিয়েছে।
এদিকে, এদিন স্থানীয় এমপি বিজেপির জন বারলা ও বিধায়ক মনোজ টিগ্গাও বীরপাড়া চা বাগানে যান। কিন্তু তাঁরা বাগানে বেশিক্ষণ ছিলেন না। বাগানে থেকে চা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেই তাঁরা বাগান ছেড়ে চলে যান।
এ নিয়ে চা বাগান তৃণমূল কংগ্রেস মজদুর ইউনিয়নের রাজ্য সভাপতি তথা জেলা পরিষদের মেন্টর মোহন শর্মা বলেন, শুনেছি এমপি জন বারলা ও বিধায়ক মনোজ টিগ্গা বাগানে এসেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও কেন্দ্র কোনও বাগান খুলতে পারেননি। ভোটে ফায়দা নিতে ও বাগান খোলার কৃতিত্বে ভাগ বসাতেই বিজেপির দুই প্রতিনিধি বাগানে গিয়েছিলেন।
বিধায়ক মনোজবাবু অবশ্য বলেন, বীরপাড়া চা বাগানটি আমার বিধানসভা এলাকার মধ্যেই পড়ে। এলাকার বিধায়ক হিসেবেই এমপি জন বারলাকে নিয়ে এদিন ওই বাগানে যাই। এরসঙ্গে বাগান খোলার কৃতিত্ব বা ভোটের ফায়দা নেওয়ার কোনও বিষয় নেই।