বাঙালির প্রেমদিবসে করোনাবিধিকে তোয়াক্কা করলেন না টিনএজাররা
উদাস হয়ে একে অন্যের চোখে চোখ রাখা। হাতে হাত রেখে একটু নিরিবিলিতে বসে থাকা। সঙ্গে ফুচকা থেকে মোগলাই। এটাই ছিল মঙ্গলবার বাঙালির ভ্যালেন্টাইনস ডে বা প্রেমদিবসের এক সাধারণ চিত্র। শীতের ইনিংসের শেষদিকের এই দিনে মুখে মাস্ক না পরে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে কার্যত করোনাকে বাই বাই জানাল টিনএজাররা। ভিড়ে জমজমাট থাকল স্কুল থেকে কলেজ রাস্তাঘাট থেকে রেস্তরাঁ। প্রায় দশমাস পরে ঘরবন্দি বাঙালি ভাসল নতুন অনাবিল আনন্দে। আর সরস্বতী পুজোর দিন সকাল থেকে রাস্তায় ভিড় দেখে সাধারণ মানুষের একটাই প্রশ্ন, তাহলে মঙ্গলবার থেকেই কি করোনা বাংলা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিল?
সোমবার সকাল থেকে স্কুল কলেজ ক্লাব প্রতিষ্ঠানে প্রতিমা যাওয়ার পাশাপাশি বাজারে ভিড় দেখে একটা ধারণা করা গিয়েছিল যে, অন্যান্য বছরের সরস্বতী পুজোর (Saraswati Pujo) মতো এবারেও পুজোর দিন সকাল থেকেই পার্ক থেকে কালীবাড়ি, রেস্তরাঁ থেকে রাস্তা সবকিছুরই দখল নেবে টিনএজাররা। আর মঙ্গলবার সকাল থেকেই সেই ধারণাটা বাস্তবে পরিণত হল। এদিন বাগ্দেবীর কাছে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার কারণে সকালে সেভাবে রাস্তাঘাটে ভিড় নাহলেও বেলা বাড়তেই কার্যত রাস্তাঘাটের দখল নেয় টিনএজাররা। মঙ্গলবার বেলা বাড়তেই স্কুল-কলেজ রেস্তরাঁর পাশাপাশি উলুবেড়িয়া কালীবাড়ি পার্কে ও ক্রমশ ভিড় বাড়তে থাকে। এমনকী, একটা সময় ভিড় এতটাই বেড়ে যায় যে নিরাপত্তার স্বার্থে ভিড় সামলাতে আসরে নামতে হয় পুলিসকে। অন্যদিকে, এদিন অন্যান্য দিনের তুলনায় রাস্তায় বাইক ও অন্য যানবাহনের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত বেশি থাকায় সকাল থেকেই ব্যাপক যানজটের কবলে পড়ে উলুবেড়িয়া শহর। সমস্যায় পড়ে সাধারণ মানুষ। একসময় যানজট এতটাই মারাত্মক আকার নেয় যে বাধ্য হয়ে উলুবেড়িয়া কালীবাড়িতে প্রবেশের রাস্তায় যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে উলুবেড়িয়া থানার পুলিস।
এদিকে, রাজ্য থেকে করোনা এখনোও পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন নাহলেও এইভাবে মাস্ক না-পরে রাস্তায় বের হওয়া এবং সকলে একসঙ্গে জমায়েত করা নিয়ে টিনএজারদের বক্তব্য করোনার আতঙ্কে স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় দীর্ঘদিন আমরা সকলে গৃহবন্দি ছিলাম। ঘরে বসে আমরা একের পর এক উৎসব পার করেছি। দুর্গাপুজোর সময় করোনার প্রকোপ কিছুটা কমলেও সেভাবে আনন্দ করতে পারিনি। যদিও এখন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি উলুবেড়িয়াতেও প্রকোপ প্রায় নেই বলেই সকলে মিলে একটু আনন্দ করতে বেরিয়েছি। আর দীর্ঘদিনের পর সকলের সঙ্গে দেখা হওয়ায় মাস্ক আর সামাজিক দূরত্বটা নাহয় একটা দিনের জন্য বাদ দিলাম।