রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

প্রদীপের নীচে অন্ধকারের সব থেকে বড় উদাহরণ গুজরাটঃ তৃণমূল

February 19, 2021 | 2 min read

তৃণমূল ভবনের সাংবাদিক সম্মেলনে অমিত শাহের মিথ্যে প্রতিশ্রুতিকে ভোঁদড় বাহাদুরের সাথে তুলনা করলেন তৃনমূলের (Trinamool) মন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। তিলি বলেন, ‘কাল অমিত শাহ এসে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেছেন, তা শুনে গগনেন্দ্র নাথ ঠাকুরের ভোঁদড় বাহাদুরের কথা মনে পড়ে যায়। ভোঁদড় বাহাদুর যেভাবে মিথ্যে কথা বলত, সেভাবেই তিনি এসে শিক্ষক, মৎস্যজীবী, নারী এবং কৃষকদের প্রসঙ্গে কথা বলেছেন।’

অমিত শাহর (Amit Shah) গতকালের বক্তব্যের প্রত্যুত্তরে মন্ত্রী তুলে ধরেন গুজরাটের শিক্ষক, মৎস্যজীবীদের সামাজিক অবস্থান এবং দেশে কোথায় দাঁড়িয়ে আছে নারী, কৃষক, স্বাস্থ্য পরিস্থিতি এবং বেকাররা।

এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কি বললেন তিনিঃ

• পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষকদের নিয়ে কিছু করার আগে গুজরাটের শিক্ষকদের কথা জানা দরকার। গুজরাটের আয়ের সিংহভাগ ব্যয় হয়, জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রী এবং বাকিটা কর্পোরেট সংস্থার পেছেনে। মূল বাজেটের ৫- ৬ শতাংশ যেখানে শিক্ষা খাতে ব্যয় করা উচিৎ, সেখানে গত দুবছর ধরে মূল বাজেটের ২ শতাংশ খরচ হচ্ছে শিক্ষা খাতে। ফলত গুজরাটের বেশিরভাগ শ্রমিকই নিরক্ষর। বা পঞ্চম শ্রেণি অবধি সর্বোচ্চ পড়াশোনা। শিক্ষকদের মাইনে অনিয়মিত। শিক্ষকদের পেনশন নিয়ে চরম টালবাহানা চলছে গুজরাটে। সেই অমিত শাহ এসে শিক্ষকদের নিশ্চয়তার কথা বলছেন।

• গুজরাটে স্বাস্থ্যের পেছনে ব্যয় করা হয় ০.৮ শতাংশ। যেখানে নিয়ম ৪-৬ শতাংশ ব্যয় করার। গুজরাটে ৪৫ শতাংশ শিশু অপুষ্টিতে ভোগে।

• গুজরাটের (Gujarat) ৯৪ শতাংশ শ্রমিক দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম মজুরি পায়। সমীক্ষায় দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম শ্রমিক ভাতা গুজরাটে।

• আদালত পাঁচবার গুজরাট সরকারকে সতর্ক করে বলেছে আপনারা আদিবাসী, মৎস্যজীবিদের বিয়ে ভাবুন।

• হাজার হাজার আদিবাসী মৎস্যজীবি বাস্তুচ্যুত হয়েছে উন্নয়নের নামে। প্রদীপের নীচে অন্ধকারের সব থেকে বড় প্রমাণ গুজরাট।

• ২০১৯- এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি (BJP) ঘোষণা করেছিল, নারীদের উন্নয়নে এই সরকার সব থেকে বেশি অগ্রাধিকার দেবে। লোকসভা এবং রাজ্যসভায় মহিলাদের জন্যে ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করতে বিল আনা হবে। কৃষি বিল সবাইকে লুকিয়ে পাশ করা হয়, কিন্তু মহিলা সংরক্ষণ বিল এখনো পেশই করা হল না।

• বেটি বাঁচাও বাটি পড়াও প্রকল্পে কোন টাকা দেওয়া হয়নি এই বাজেটে। কিন্তু বিজ্ঞাপণে খরচ হয়েছে ৪০০ কোটি টাকা। কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধে রাজ্যের ৬৭ লক্ষ ছাত্রী পায়।

• লোকসভায় তৃনমূলের মহিলা সাংসদ ৪০ শতাংশ। যেখানে দেশের গড় ১৩ শতাংশ এবং বিজেপির ১১ শতাংশ।

• ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় মহিলাদের জন্যে ৫০ শতাংশ সংরক্ষণ আছে।

• প্রতিবছর ১ কোটি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি। সেখানে ৪৫ বছরের মধ্যে দেশে বেকারত্বের হার সর্বোচ্চ। অতিমারি চলাকালীন এক কোটি চাকরি খোয়া গেছে। বাংলায় করোনা কালেও বেকারত্ব কমেছে ৪০ শতাংশ।

• স্বাস্থ্যসাথী শুরু হয়েছে ২০১৬-তে, আয়ুষ্মান ভারত ২০১৮ সালে শুরু হয়েছে। দুই প্রকল্পের মধ্যে তুলনাও করেন মন্ত্রী।

এছাড়াও কৃষি আন্দোলনের নিয়েও এদিন কেন্দ্র সরকারকে কটাক্ষ করেন মন্ত্রী। বলেন, ‘২০২৮ সালের আগে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করা সম্ভব নয় কেন্দ্র সরকারের। বাংলায় কৃষকদের আয় ইতিমধ্যেই তিনগুণ বাড়েছে।’

এরপর কৃষকবন্ধু এবং পিএম কিষাণ যোজনারও তুলনামূলক খতিয়ান তুলে ধরেন মন্ত্রী।

তিনি আরো বলেন, ‘বাংলার শষ্যবীমা প্রকল্পে পুরো প্রিমিয়াম রাজ্য দেয়। প্রধানমন্ত্রীর ফসল বীমা যোজনায় প্রিমিয়াম কৃষকদের দিতে হয়।’

জিএসটি, নোটবন্দীর অসফলতা নিয়েও আজ কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করেন মন্ত্রী।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#gujarat, #Bratya Basu, #Trinamool Congress

আরো দেখুন