কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পেত পামেলা, বাঁচাতে টুঁ শব্দটি নেই বিজেপির আইটি সেলের
পামেলা গোস্বামী (Pamela Goswami) কান্ড কার্যত যে মোড় ঘোরাচ্ছে তাতে সূত্র বলছে কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে কেউটে না বেরিয়ে যায়! ২০১৯এ পামেলা বিজেপিতে (BJP) যোগ দিয়েছিলেন। অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি রাজ্য রাজনীতির বেশ সামনে সারিতে উঠে আসেন।
দলে যোগদানের অল্প দিনেই যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক এবং হুগলি জেলার দলীয় পর্যবেক্ষকের পদ পান। এতদূর পর্যন্ত ঠিক ছিল সবই। কিন্তু পামেলার গ্রেপ্তারির পর বেরিয়ে আসছে আরো কিছু বিষয়, যা রাজ্য বিজেপির কাছে বেশ অস্বস্তির হতে পারে। সূত্রের মারফত জানা যাচ্ছে পুলিশ যখন নিউ আলিপুর থেকে পামেলা কে গ্রেপ্তার করেন তখন বিজেপির ওই যুব নেত্রীর সঙ্গে ছিল দুই সিআইএসএফ জোয়ান। জানা গেছে একজন সাধারণ নেত্রী হয়েও নাকি তিনি পরিবেষ্টিত থাকতেন কেন্দ্রীয় বাহিনী দ্বারা।
এদিকে পাকড়াওয়ের দিন উপস্থিত থাকা ওই দুই জওয়ান জানিয়েছেন তাঁরা নাকি বিজেপির এক কেন্দ্রীয় নেতার নিরাপত্তায় থাকতেন, নেতার নির্দেশেই পামেলার নিরাপত্তার দায়িত্ব এসে পড়ে তাঁদের ওপর। এসবে প্রশ্ন উঠছে একাধিক। একজন সাধারণ নেত্রীর জন্য কোনো কেন্দ্রীয় নেতা কেনই বা কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেবেন? আর দিলেও এই ঘটনায় তিনি চুপ কেনো? এমনিতেও পামেলা গ্রেপ্তারি বেশ ভালো গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেই মনে করে ওয়াকিবহাল মহল।
এমনিতেও গতকাল শনিবার পামেলাকে আদালতে তোলার সময় সে জন্যই সমক্ষে কৈলাস বিজয়বর্গিয় ঘনিষ্ঠ রাকেশ সিং এর দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তোলেন। আদালত চত্বরে পামেলা স্পষ্টই জানান রাকেশ চক্রান্ত করে ফাঁসিয়েছে তাঁকে। রাকেশের গ্রেপ্তারি দাবি ও করেন তিনি। অন্যদিকে পামেলা ঘটনা সামনে আসার পরই গতকাল তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি জানিয়েছিলেন যদি পামেলা দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে শাস্তি হবে, আর যদি জানান যায় কেউ চক্রান্ত করেছে তাহলে আন্দোলনে যাবে বিজেপি।
দিলীপ বাবুর এই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পামেলা আঙুল তুলেছে তাঁরই দলের নেতার বিরুদ্ধে। এতে দল এবার কার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেবে সেটা দেখার। তার মধ্যেই আবার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তার বিষয় সামনে আসায় আরো বড়ো অস্বস্তিতে পড়ছে বিজেপি। বাকিদেরও প্রশ্ন সাধারণ নেত্রী কেনোই বা পেতেন এত নিরাপত্তা। আর সবকিছু ঠিক থাকলে এই মুহূর্তে কেনো সবকিছু এড়িয়ে যাচ্ছেন বিজেপির নেতারা? সূত্র বলছে পামেলা কাণ্ড স্পষ্ট করছে আদি – নব্য লড়াইয়ের পাশাপশি, বিজেপির রাজ্য সভাপতি বনাম কেন্দ্রীয় নেতাদের দূরত্ব।
এই ঘটনায় বিশেষ দ্রষ্টব্য যে পামেলাকে বাঁচাতে টুঁ শব্দটি করছে না বিজেপির আইটি সেল। দু-একজন ছোটখাটো নেতা হয়তো মুখ ফস্কে বলে ফেলেছেন, ষড়যন্ত্র হয়েছে, বাকিরা কিন্তু সবাই নিজেদের আড়াল করতে ব্যস্ত।