মোদির সভা ভরাতে ভিন জেলা থেকে লোক আনাচ্ছে বিজেপি
হুগলির(Hooghly) ডানলপের(Dunlop) মাঠে প্রধানমন্ত্রীর সভায় লোক সমাগমের জন্য বিজেপি(BJP) নেতৃত্ব শুধু হুগলি নয়, একাধিক জেলার উপরে ভরসা করছে। মুখ্যত, হুগলিতে জনসভার কর্মসূচি থাকলেও মাঠ ভরাতে উত্তর ২৪ পরগনা, বর্ধমান ও হাওড়ার উপরেও নেতৃত্ব নির্ভর করছে। বিজেপি সূত্রেই জানা গিয়েছে, গাড়ি ব্যবহারের উপরে অবাধ ছাত্রপত্র দেওয়া হয়েছে। লোক ভরাতে ৪২-৫০ জন হলেই একটি গাড়ি বরাদ্দ করা দেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে থাকছে ‘ভিআইপি কার্ড’(VIP Card) এর টোপ। সভার সামনের সারিতে বসানোর প্রচার করেও লোক জমায়েতে জোর দিচ্ছে নেতৃত্ব। রাজনৈতিক মহল বলছে, আগেই দলীয় জনসভার সঙ্গে সরকারি অনুষ্ঠানকে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। তারপরেও প্রধানমন্ত্রীর সভা নিয়ে লোক জমায়েতে নিশ্চিত হতে পারছে না নেতৃত্ব। তাই বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপs করতে হচ্ছে। এদিন শুধু দলীয় জনসভাতেই নয়, পাশের অপর একটি মঞ্চ থেকে সম্প্রসারিত দক্ষিণেশ্বর-নোয়াপাড়া মেট্রো প্রকল্প সহ রাজ্যের বিভিন্ন অংশের আরও কয়েকটি রেল প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী(narendra modi)। রাজ্য সফরের প্রাক্কালে রবিবার বাংলা ট্যুইটবার্তায় প্রকল্পগুলির বিষয়ে নিজেই জানিয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত, ডানলপের ওই মাঠেই আগামী বুধবার সভা করবেন তৃণমূল(TMC) সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)।
নেতৃত্বের আশঙ্কা যে অমূলক নয়, সেটাও ওয়াকিবহাল মহল বলছে। কারণ, সম্প্রতি বিজেপির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার সভায় লোক সমাগম হচ্ছে না। কার্যত ফাঁকা মাঠে তাঁদের সভা করতে হয়েছে। সেই নিরিখে প্রধানমন্ত্রীর হুগলির সভার প্রাক্কালে তাই উদ্বেগে আছে নেতৃত্ব। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলা নেতা বলেন, তাও বাঁচোয়া যে প্রধানমন্ত্রীর সভা। অনেকেই স্রেফ প্রধানমন্ত্রীকে কাছে থেকে দেখতেই ভিড় জমাবেন। নইলে ভারি বিপদ হতো। নেতৃত্ব মুখে অবশ্য এসব স্বীকার করছে না। দলের একটি শাখা সংগঠনের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা হুগলির পরিচিত নেতা স্বপন পাল বলেন, প্রধানমন্ত্রীজির সভা নিয়ে মানুষের মধ্যে আগ্রহের সঙ্গে আমরা পাল্লা দিতে পারছি না। সাধারণ মানুষ নিজেরোই গাড়ির বন্দোবস্ত করে নিচ্ছেন। আমাদের কাছে শুধু ফ্ল্যাগ, ফেস্টুনের দাবি করা হচ্ছে। লোক জোগাড় নিয়ে ভয় দূরে থাক, আমরা আতঙ্কে আছি যে পরিমাণ মানুষ আসতে চাইছেন, তাতে মাঠে জায়গা দেওয়া যাবে কি না। স্থানীয় নেতৃত্ব একথা বললেও, দলের সর্বভারতীয় নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয় অবশ্য ইতিমধ্যেই কাঁদুনি গেয়ে রেখেছেন। শনিবারই মাঠ পরিদর্শনে এসে তিনি বলেছিলেন, তৃণমূল কংগ্রেস মাঠে লোক আসতে বাধা দিতে চাইছে। এনিয়ে তারা ষড়যন্ত্র করছে।
বিজেপির অন্দরমহল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সভা হুগলিতে হওয়া নিয়ে খুশিই ছিলেন নেতৃত্ব। কিন্তু রাজ্য নেতৃত্ব হুগলির তিনটি সাংগঠনিক জেলা মিলিয়ে ২ লক্ষ লোক সমাবেশ করার লক্ষ্যমাত্রা দেয়। তারপরেই গলা শুকিয়ে গিয়েছে জেলার নেতাকর্মীদের। এরপরই ভিন জেলা থেকে লোক আনার পরিকল্পনা করা হয়। দেদার গাড়ি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও নেতৃত্ব বিলোতে থাকে। এই অধ্যায়ের শেষ সংযোজন ‘ভিআইপি কার্ড’। এই কার্ড থাকলে একেবারে মঞ্চের কাছাকাছি বসা যাবে বলে প্রচার করে লোক জোটাতে উদ্যাগ শুরু হয়েছে। বিলি করা হচ্ছে দেদার কার্ড। কিন্তু এত কিছুর পরেও শেষ পর্যন্ত কতটা লোক সমাগম হবে, তা নিয়ে আতঙ্ক কাটছে না।