সাধারণ ট্রেনকে স্পেশাল হিসেবে চালিয়ে বেশি ভাড়া নিচ্ছে রেল, অভিযোগ কৃষিমন্ত্রীর
সাধারণ ট্রেনকে কোভিড স্পেশাল হিসেবে চালিয়ে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া নিচ্ছে রেল (Indian Railways)। ফলে সমস্যায় পড়ছেন বহু যাত্রী। সাধারণ মানুষের জন্য কোনও চিন্তা নেই রেলের। মঙ্গলবার রামপুরহাটে(Rampurhat) দলীয় কার্যালয়ে ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’(Bangla Nijer Meyekei Chay) স্লোগানের সূচনা উপলক্ষে সাংবাদিক বৈঠকে এভাবেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়(Asish Banerjee)।
করোনা ও তার জেরে লকডাউনে ধাক্কা খেয়েছিল ট্রেন চলাচল। গত ২ ডিসেম্বর থেকে রামপুরহাট-সাহেবগঞ্জ লুপ লাইনে লোকাল ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এরপর ধীরে ধীরে বেশকিছু এক্সপ্রেস ও প্যাসেঞ্জার ট্রেন চলতে শুরু করে। সম্প্রতি, রামপুরহাট-হাওড়া ময়ূরাক্ষী ফাস্ট প্যাসেঞ্জার ট্রেনও চলাচল শুরু করে। এগুলি কোভিড স্পেশাল এক্সপ্রেস হিসাবে চালায় রেল। ফলে ভাড়াও কিছুটা বাড়িয়ে দেয়। তৃণমূলের দাবি, পেট্রল, ডিজেল, রান্নার গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে হাহাকার শুরু হয়েছে। তার উপর সাধারণ ট্রেনকে কোভিড স্পেশাল হিসেবে চালিয়ে দ্বিগুণ ভাড়া নিয়ে মানুষের রক্ত শুষছে কেন্দ্র। কারণ, অনেক দিনমজুর আছেন, যাঁরা নিত্য ট্রেন ধরে বিভিন্ন জেলায় কাজে যান। অনেককে অফিস বা পড়াশোনার জন্য নিত্যদিন বর্ধমান, কলকাতা বা অন্য কোথাও যেতে হয়। সেক্ষেত্রে তাঁদের কয়েক গুণ বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। যা নিত্যযাত্রীদের ক্ষেত্রে বহন করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রামপুরহাট প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নিয়ামত আলি বলেন, বহু মানুষ রয়েছেন যারা ডেলি প্যাসেঞ্জারি করে পেট চালান। কলকাতা থেকে বিভিন্ন পণ্য এনে স্থানীয় দোকানে বিক্রি করেন। কেউবা নিজের দোকানের জন্য মালপত্র নিয়ে আসেন। দীর্ঘ লকডাউনে এঁদের অনেককেই চরম দুর্দশার মধ্যে কাটাতে হয়েছে। ফলে দ্রুত ট্রেন চালু হওয়া খুব দরকার ছিল। কিন্তু এত ভাড়া দিয়ে কলকাতা যাতায়াত করার ফলে লাভের মুখ দেখা দায় হয়ে পড়েছে। ট্রেন চালু হওয়ার সময় যতটা খুশি হয়েছিলাম এখন ততই হতাশ হয়ে পড়েছি। তিনি বলেন, আগে বিশ্বভারতী ফাস্ট প্যাসেঞ্জারের ভাড়া ছিল ৪৫ টাকা। এখন সেটা বেড়ে হয়েছে ৬৫ টাকা। একইভাবে ময়ূরাক্ষী ফাস্ট প্যাসেঞ্জারের ভাড়া ছিল ৬০ টাকা। সেটা এখন হয়েছে ১০৫ টাকা। দু’টি ট্রেনই বীরভূমবাসীর লাইফ লাইন।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রী স্লোগান উদ্বোধনের সঙ্গে রাজ্যের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এক পয়সাও ভাড়া বাড়াননি। আর বিজেপি সরকার ময়ূরাক্ষী ফাস্ট প্যাসেঞ্জারের মতো সাধারণ ট্রেনের ভাড়া দ্বিগুণ নিয়ে চালাচ্ছে। তাই বাংলা তাঁর নিজের মেয়েকেই চায়। কারণ, তিনি সাধারণ মানুষের কথা ভাবেন।
রেলের ভাড়া বৃদ্ধি প্রসঙ্গে সাংসদ শতাব্দী রায় বলেন, জীবন-জীবিকার জন্য বহু মানুষকে ট্রেনের উপর ভরসা করতে হয়। পেট্রল, ডিজেল, গ্যাসের দাম বাড়ার ফলে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। কারণ, এসবের উপরই নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম নির্ভর করে। তার উপরে রেলের ভাড়া বাড়ালে সাধারণ মানুষ বাঁচবে কী করে! কেন্দ্র সরকারকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।