দেশ বিভাগে ফিরে যান

বিজেপি শাসিত ত্রিপুরায় বেকারত্ব বাংলার ৩ গুণ

February 25, 2021 | 2 min read

‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকারের (Double Engine Govt) ‘সোনার’ ত্রিপুরা(Sonar Tripura) নিয়ে বিজেপির (BJP) দণ্ডমুণ্ডের কর্তাদের যাবতীয় প্রচার যে সম্পূর্ণ ফাঁপা, তার প্রমাণ দিল খোদ কেন্দ্রীয় সরকারি রিপোর্ট। যেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, বেকারত্বের(Unemployment) হারে দেশের মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে ত্রিপুরা(Tripura)। এই হার দেশের গড় বেকারত্বের প্রায় দ্বিগুণ। সম্প্রতি রাজ্যসভায় এই সংক্রান্ত তথ্যও পেশ করেছে শ্রমমন্ত্রক। স্ট্যাটিস্টিকস অ্যান্ড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশন মন্ত্রকের আওতায় ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্যাল অফিস (এনএসও) ২০১৭-১৮ এবং ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে দেশ জুড়ে বার্ষিক পিরিয়ডিক লেবার ফোর্স সার্ভে (পিএলএফএস) করেছে। সেই সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে বেকারত্বের জাতীয় হার ৫.৮ শতাংশ। আর ত্রিপুরায় এই পরিসংখ্যানই ১০ শতাংশ। অথচ, ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে পিএলএফএস সমীক্ষায় ত্রিপুরায় বেকারত্বের হার ছিল ৬.৮ শতাংশ। উল্লেখযোগ্যভাবে, লাগাতার বাংলাকে কর্মসংস্থান নিয়ে দুষে গেলেও এরাজ্যে কিন্তু বেকারত্বের হার ৩.৮ শতাংশ। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে তা ছিল ৪.৬ শতাংশ। দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনঘনত্ব হওয়া সত্ত্বেও। অর্থাৎ, পশ্চিমবঙ্গে বেকারত্বের হার এক বছরে কমেছে। নজর করার মতো বিষয় হল, ওই অর্থবর্ষেও বাংলায় বেকারত্বের পরিসংখ্যান জাতীয় গড়ের (৬ শতাংশ) থেকে ভালো ছিল।


আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে বাংলায় গিয়ে বারবার ত্রিপুরার ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকারের প্রসঙ্গ টানছেন নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, জে পি নাড্ডারা। উদ্দেশ্য একটাই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে অযোগ্য প্রমাণ। তাঁদের দাবি, কেন্দ্র এবং রাজ্য দু’টি ক্ষেত্রেই একই দলের সরকার থাকলে উন্নয়ন অনেক দ্রুতগতিতে এবং মসৃণভাবে হবে। এমনকী সদ্য তৃণমূল থেকে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়ে দলবদলুরাও দাবি করছেন, উন্নয়নের লক্ষ্যে কেন্দ্র এবং রাজ্যে এক দলের সরকার থাকা জরুরি। নেতারা মুখে যা বলছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্টই তার সঙ্গে মিলছে না। বরং সরকারি তথ্যেই স্পষ্ট যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলায় কর্মসংস্থান বহু রাজ্যের তুলনায় অনেক বেশি। এমনকী, যে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন, সেই তালিকাতেও সবার আগে রয়েছে বাংলা। অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যে বেকারত্বের হার ভোট-রাজ্যগুলির মধ্যে সবচেয়ে কম। সেখানে ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরের পিএলএফএস সমীক্ষা অনুযায়ী, কেরলে বেকারত্বের হার ৯ শতাংশ। তামিলনাড়ুতে ৬.৬ শতাংশ। পুদুচেরিতে এবং ৮.৩ শতাংশ। আর একটি ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকারের অসমও কিন্তু বাংলার থেকে পিছিয়েই। এই রাজ্যে বেকারত্বের হার ৬.৭ শতাংশ।


২০১৬-১৭ আর্থিক বছরে দেশের অর্থনীতির হাল এতটাও শোচনীয় ছিল না। কাজেই খুব স্বাভাবিকভাবে ওই অর্থবর্ষে কর্মসংস্থান অনেক বেশি হয়েছিল দেশজুড়ে। লেবার ব্যুরোর সমীক্ষায় ওই বছর বেকারত্বের জাতীয় হার ছিল ৩.৯ শতাংশ। তখনও কিন্তু বাংলার হার ছিল জাতীয় হারের থেকে ভালো—৩.৭ শতাংশ। আর ত্রিপুরা? বেকারত্বের হার ছিল ১৫ শতাংশ।


অর্থাৎ, ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকার হলেই যে উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান হবে, তার ভিত্তি কিন্তু কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যানেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।  

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bjp, #Jobless, #unemployment, #tripura

আরো দেখুন