বাংলায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা কৃষিঋণ পেয়েছেন চাষিরা
২০২০-’২১ অর্থবর্ষে বাংলার কৃষকরা সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকারও বেশি ঋণ পেয়েছেন। কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের (Kishan Credit Card) মাধ্যমেই এই ঋণ দিয়েছে সমবায়গুলি। সারা দেশে কেন্দ্র বিরোধী কৃষক আন্দোলন যখন তুমুল আকার নিয়েছে, তখন এরাজ্যে কৃষিঋণের এই অঙ্ক নিশ্চিতভাবেই বাড়তি গুরুত্ব দাবি করছে। এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
জানা গিয়েছে, গোটা রাজ্যে প্রায় সাড়ে ১২ লক্ষ ৬১ হাজার ৫৬৫ জন কৃষক এর ফলে উপকৃত হয়েছেন। আর এই ঋণ প্রাপকের তালিকার বিচারে শীর্ষে হুগলি জেলা। উল্লেখ্য, সমবায় দপ্তরের কর্তাদের ধারণা, ঋণের অঙ্ক আরও বাড়তে পারে। হুগলির জেলা পরিষদের কৃষি ও সমবায় কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ২০২০-’২১ অর্থবর্ষে কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের আওতায় রাজ্যের কৃষকরা সমবায় ব্যাঙ্কগুলি থেকে ৩,৬৭৩ কোটি ৭৭ লক্ষেরও বেশি টাকা ঋণ হিসেবে পেয়েছেন। শুধু হুগলি জেলাতেই ঋণ হিসেবে দেওয়া হয়েছে ৭১২ কোটি ৪১ লক্ষ টাকা। এই ঋণ পেয়েছেন দু’ লক্ষের বেশি কৃষক। যা সাম্প্রতিক বছরের নিরিখে নজির। এই বিপুল পরিমাণ কৃষিঋণ পাওয়ায় নিশ্চিতভাবেই জেলার কৃষকরা উপকৃত হবেন। যার সরাসরি প্রভাব পড়বে উৎপাদনে। রাজ্যওয়াড়ি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পূর্ব মেদিনীপুরের তিনটি সমবায় ব্যাঙ্ক কৃষিঋণের টাকা দিয়েছে। এর মধ্যে বলাগেরিয়া ১০৯ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা ঋণ দিয়েছে।
মুগবেড়িয়া দিয়েছে ২৫৭ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা। আর তমলুক-কণ্টাই সমবায় ব্যাঙ্ক দিয়েছে, ৩৭৯ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা। পশ্চিম মেদিনীপুরে বিদ্যাসাগর কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক ৪২১ কোটি ৬২ লক্ষ টাকা ঋণ দিয়েছে। বাঁকুড়া জেলা কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক (Co-Operative Bank) দিয়েছে ১৭৪ কোটি ০৩ লক্ষ টাকার ঋণ। বীরভূম জেলাতেও কৃষকরা ঋণ হিসেবে পেয়েছেন ১০৪ কোটি ৯৪ লক্ষ টাকা। রাজ্যের অন্যতম বৃহৎ কৃষিবলয় হিসেবে পরিচিত বর্ধমান জেলা। সেখানেও কৃষকদের ৩২২ কোটি ৫৯ লক্ষ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। আরেক কৃষিপ্রধান এলাকা হুগলি সবাইকে ছাপিয়ে ৭০০ কোটি টাকা কৃষিঋণ বিলি করেছে। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় যথাক্রমে ১০৪ কোটি ৫ লক্ষ এবং ১৩৫ কোটি ১০ লক্ষ টাকা কৃষিঋণ দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরে ৬৪ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা ঋণ পেয়েছেন কৃষকরা, পুরুলিয়ায় পেয়েছেন ৩৬ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা, উত্তর দিনাজপুরে কৃষিঋণ বিলির অঙ্ক ৩৮ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা, দার্জিলিংয়ে তা ৩১ কোটি ২৩ লক্ষ ও কোচবিহারে ৭২ কোটি ১৬ টাকা। পাশাপাশি, জলপাইগুড়ি জেলায় ১১২ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা এবং মালদহে ৮০ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা কৃষিঋণ বিলি করা হয়েছে। মুর্শিদাবাদে ৮৪ কোটি ৯৪ লক্ষ ও নদীয়ায় ৩৬৬ কোটি ১২ লক্ষ টাকা ঋণ পেয়েছেন কৃষকরা।