বিজেপির পরিবর্তন যাত্রায় ভিড় হল না দক্ষিণ দিনাজপুরে
না এলেন কোনও হেভিওয়েট নেতা-নেত্রী, রাস্তায় দেখা গেল না কোনও ভিড়। দক্ষিণ দিনাজপুর(South Dinajpur) জেলায় বিজেপির(BJP) পরিবর্তন যাত্রার(Parivartan Jatra) প্রথম দিনটি কার্যত ছিল ‘ফ্লপ’। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে, বিজেপির নেতাকর্মীদের গাড়িগুলিকেই রথের আগেপিছে ব্যবহার করে একটু ভিড় বাড়ানোর চেষ্টা করতে হল দলীয় নেতৃত্বকে। এদিন রথযাত্রার এই ‘বহরে’ গেরুয়া শিবিরের কর্মীরা যে যারপর নাই হতাশ ও মনমরা, সেকথা মেনে নিয়েছে খোদ বিজেপির জেলা নেতৃত্ব।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার রথযাত্রায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সহ রাজ্য স্তরের একগুচ্ছ নেতা অংশগ্রহণ করবেন, এমনটাই প্রচার চালানো হয়েছিল। বলা হয়েছিল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীও উপস্থিত থাকবেন। সেই মতো রাজ্যের নেতানেত্রীদের স্বাগত জানাতে কুশমণ্ডি, হরিরামপুর, গঙ্গারামপুরে রাস্তার দু’ধারে কিছু নেতাকর্মী জড়ো হয়েছিলেন। রথ আসার আগে কর্মীরা জানতে পারেন যে, দিলীপ ঘোষ বা রাজ্য ও কেন্দ্রের তেমন বড় কোনও নেতা কর্মসূচিতে যোগদান করেননি। তখন অনেকেই হতাশ হয়ে বাড়ি চলে যান। কেউ কেউ আবার জেলা নেতৃত্বের উপর চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এমনকী ভিড় কম দেখে খোদ জেলা নেতৃত্বের অনেকেই বিকেলের পরে কর্মসূচি ছেড়ে বালুরঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপির সভাপতি বিনয় বর্মন বলেন, পরিবর্তন যাত্রায় রাজ্য নেতৃত্ব ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অংশ নেওয়ার কথা ছিল। দিলীপ ঘোষ, দেবশ্রী চৌধুরীদের আসার কথা ছিল। তাঁরা কেন এলেন না, তা জানা নেই। হয়তো অন্য কোনও কর্মসূচিতে যোগদান করেছেন। কর্মীদের হতাশ হওয়া স্বাভাবিক। আশা করছি, শুক্রবার রাজ্য ও কেন্দ্রের নেতারা থাকবেন। আমি সকাল থেকে কর্মসূচিতে ছিলাম। বিকেলে বালুরঘাটে চলে এসেছি।
বালুঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, বারাকপুরে জেপি নাড্ডার কর্মসূচি ও বিশেষ বৈঠকের কারণে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ আমাদের পরিবর্তন যাত্রায় থাকতে পারেননি। শুক্রবার পরিবর্তন যাত্রা উপলক্ষে বালুরঘাট হাইস্কুল মাঠে রাজ্য সভাপতি ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং উপস্থিত থাকবেন।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌতম দাস বলেন, বিজেপি সরকার মানুষকে দিনের পর দিন বোকা বানিয়ে চলেছে। এখন তারা নিজেদের কর্মীদেরই বোকা বানাতে শুরু করেছে। কেন্দ্র ও রাজ্যের নেতারা থাকবে বলে প্রচার করে ওরা হয়তো ভিড় টানতে চেয়েছিল। কর্মীদের এভাবে বোকা বানানো ঠিক নয়। তিনি আরও বলেন, এখন বিজেপি নেতারা রথে চেপে ভগবান সাজার চেষ্টা করছেন। তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির রথ ঘুরেছে, সাধারণ মানুষের মধ্যে বিন্দুমাত্র উৎসাহ উদ্দীপনা নেই।
এদিন প্রথমে ফতেপুরে পরিবর্তন যাত্রার গাড়ি আসবে বলে কর্মীরা দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেন। হঠাৎ খবর আসে, দিলীপবাবু বা দেবশ্রীদেবী, কেউই আসতে পারবেন না। চাপে পড়ে রথে উঠে পড়েন সাংসদ সুকান্তবাবু ও বিনয়বাবু। এদিকে হেভিওয়েট নেতারা অনুপস্থিত থাকায় ক্ষোভ বাড়তে থাকে। দলের কর্মী-সমর্থকরা ক্ষুব্ধ হয়ে বাড়ি ফিরে যান। এদিন বিজেপির রথযাত্রায় অবশ্য রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি দীপেন প্রামাণিক সহ জেলার অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।