দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

উদয়নারায়ণপুরে তাঁতের হাট পেয়ে খুশি শিল্পীরা

February 26, 2021 | 2 min read

উদয়নারায়ণপুরের(Udaynarayanpur) তাঁতশিল্পীদের(Tant Shilpi) সমস্যা দূর করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) কাছে নিজের বিধানসভা এলাকায় একটি তাঁতের হাট নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছিলেন বিধায়ক সমীর পাঁজা(Samir Panja)। বিধায়কের প্রস্তাবে রাজি হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরেই ২০১৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ হস্তচালিত তাঁত দপ্তরের উদ্যোগে উদয়নারায়ণপুর বাসস্ট্যান্ডে প্রায় এক বিঘা জমির উপর তাঁতের হাট নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এমাসের শুরুতেই সেটি তাঁতশিল্পীদের জন্য খুলে দেওয়া হল।


জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রায় ৫ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই তাঁতের হাট চারটি ক্লাস্টারে ভাগ করা হয়েছে। তার মধ্যে একটি ক্লাস্টার প্রশাসনিক কাজে এবং বাকি তিনটি ক্লাস্টার তাঁতহাটের কাজে ব্যবহার করা হবে। ইতিমধ্যেই হাটের ৮৩টি দোকান বণ্টন করা হয়েছে। প্রাপকদের মধ্যে ১৩টি তন্তুবায় সমবায় সমিতি এবং বেশ কয়েকটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। এদিকে, নতুন বছরের শুরুতেই নিজেদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করার জন্য মাথার উপর ছাদ পাওয়ায় খুশি তাঁতিরা।


তাঁতশিল্পে রাজ্যের যে-ক’টি অঞ্চল উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করেছে তার মধ্যে উদয়নারায়ণপুর অন্যতম। এখানকার হরালি, সিংটি, গজা সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে তাঁতের কাপড়, গামছা, ধুতি প্রভৃতি বোনার রেওয়াজ চলে আসছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, এসব এলাকায় প্রায় ৪ হাজার নথিভুক্ত তাঁতশিল্পী আছেন। অতীতে এখানকার তাঁতশিল্পীরা কাঁচামাল পাওয়া থেকে উৎপাদিত পণ্যের বিক্রি নিয়ে নানা সমস্যায় পড়তেন। কাঁচামাল আনা থেকে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করা, সবটাই নির্ভর করতে হত হুগলির রাজবলহাটের উপর। আর নিজ এলাকার তাঁতিদের সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হলেন বিধায়ক সমীর পাঁজা। মূলত তাঁরই উদ্যোগে অবশেষে হাসি ফুটল কয়েক হাজার তাঁতি পরিবারে। এলাকার ১৩টি তন্তুবায় সমবায় সমিতির সদস্যদের মতে, বাম আমলে সরকারি উদাসীনতায় তাঁরা বেশ সঙ্কটে পড়েছিলেন। অনেকেই এই শিল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। এমনকী, সবচেয়ে বেশি হতাশ হয়ে পড়েছিল নতুন প্রজন্ম। যদিও এই আমলে তাঁদের অনেক উন্নতি হয়েছে। হরালি সহ কয়েকটি এলাকায় হস্তচালিত তাঁতের ক্লাস্টার তৈরি করা হয়েছে। ক্লাস্টারগুলিতে নথিভুক্ত তাঁতশিল্পীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে উন্নতমানের পণ্য উৎপাদনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তন্তুবায় দপ্তর তাঁতসাথী প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার তাঁতশিল্পীদের কাঁচামাল সহ নানা সরঞ্জাম, সহজ কিস্তিতে ঋণ, তাঁতশিল্পীদের বার্ধক্যভাতা, চিকিৎসার সুবিধার ব্যবস্থা করেছে। এবার তাঁদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রির জন্য ঘরের কাছেই হাট। তাঁদের মতে, এই হাট তাঁতশিল্পীদের সমস্যার সমাধানে অনেকটাই কার্যকরী ভূমিকা নেবে।

তন্তুজর ভাইস চেয়ারম্যান সমীর পাঁজা বলেন, রাজ্যে তাঁতের কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে। তন্তুজ ও বঙ্গশ্রী তাঁতিদের কাছে থেকে সরাসরি কাপড় কিনছে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে সরকার তার প্রয়োজনে তাঁতিদের কাছ থেকে কাপড় কিনছে। ফলে, তাঁতিদের দুশ্চিন্তা দূর হয়েছে। এতদিন এখানকার তাঁতিদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রির একটা সমস্যা ছিল। এবার থেকে সেটা দূর হল। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Mamata Banerjee, #Tantuja, #tant haat, #udaynaranpur

আরো দেখুন