মহাজোটের জট কাটলো না ব্রিগেডের আগেও
আগামী কাল রবিবার বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষে বিজেপি ও তৃণমূল বিরোধী শিবিরের ব্রিগেড সমাবেশ। উদ্যোক্তাদের দাবি মোতাবেক বাম (Left), কংগ্রেস (Congress) ও আব্বাস সিদ্দিকির আইএসএফের (ISF) যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিতব্য এই সমাবেশ লোক সমাগমের নিরিখে ঐতিহাসিক চেহারা নেবে। এর মধ্যে আসন সমঝোতার বিষয়টি ফয়সালা না-হলেও ব্রিগেডের মঞ্চে আব্বাস অন্যতম বক্তা হিসেবে হাজির হবেন বলে ঘোষণা করায় উদ্যোক্তারা আরও উৎসাহী হয়েছে। নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এই সমাবেশের মঞ্চ থেকে মহাজোটের নেতৃত্ব রাজ্যে বিকল্প সরকার গঠনের ডাক দেবে। সমাবেশকে সব দিক দিয়ে সফল করার জন্য প্রচার ও প্রস্তুতিতেও কোনও খামতি রাখছে না যৌথ নেতৃত্ব। ব্রিগেডে মঞ্চ থেকে মাইক—সমাবেশের সব উপকরণও ধীরে ধীরে জড়ো করা হয়েছে।
কিন্তু এসব সত্ত্বেও আসন বাটোয়ারা নিয়ে মহাজোটের অন্দরের জট শুক্রবার রাত পর্যন্ত কাটেনি। মূলত কংগ্রেস ও আইএসএফের মধ্যে দর কষাকষির ফয়সালা না হওয়ায় এই জটিলতা থেকে গিয়েছে। যদিও আজ শনিবার কলকাতায় এসে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এই জট দূর করার প্রয়াস করবেন বলে আলিমুদ্দিনের কর্তাদের জানিয়েছেন। এজন্য আজ বিকেলে তিনি প্রথমে সিপিএম নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। তারপর প্রয়োজনে মুখোমুখি হবেন আইএসএফ নেতাদের। অধীররা অবশ্য আগে স্পষ্ট করে বুঝে নিতে চান, আব্বাসের দলের সঙ্গে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির মিমের কোনও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমঝোতা হচ্ছে কি না। মিমের সঙ্গে এই ধরনের কোনও সম্পর্ক থাকলে কংগ্রেস তাদের নিয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামবে না বলে সাফ জানিয়েছেন তিনি সিপিএম নেতৃত্বকে। সিপিএমও মিমকে তাদের জোটে অচ্ছ্যুৎ করার কথা আগেই জানিয়েছে। তারা অবশ্য মিমকে কোনও গুরুত্ব দিতেই নারাজ। আব্বাস প্রকাশ্যে মিমের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক না-রাখার কথা এখনও প্রকাশ্যে ঘোষণা করেননি। তা সত্ত্বেও আইএসএফের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আলিমুদ্দিনের দৃঢ় বিশ্বাস, তিন পক্ষের মহাজোটে মিমের কোনও অস্তিত্ব থাকবে না। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে খোলাখুলি সে কথাই জানিয়েছেন দলের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম।
আইএসএফ অবশ্য মিম নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা বজায় রেখেছে। এদিন ফুরফুরা শরিফে নিজের ডেরায় বসে আইএসএফের মূল কারিগর আব্বাস জানিয়েছেন, মিম প্রধানের সঙ্গে তাঁর মুখোমুখি একবার কথা হয়েছিল। তাঁরা যেসব আসনে লড়তে চান তার তালিকাও আইএসএফ নেতৃত্বকে পাঠিয়েছেন। তা নিয়ে আলোচনার দরজা দল বন্ধ করেনি। কারণ আইএসএফ চায়, ভোটে তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী ভোট যাতে কোনওভাবে ভাগাভাগি না হয়। তবে বাম ও কংগ্রেসের সঙ্গে মহাজোট করার ব্যাপারে আইএসএফ অত্যন্ত আগ্রহী। বামেরা ৩০টি আসন দেওয়ার ব্যাপারে ইতিমধ্যেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আরও ৪-৫টি আসন চাওয়া হয়েছে ওদের কাছে। পাশাপাশি কংগ্রেসের কাছে ২৫-৩০টি আসন চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে এনিয়ে ফয়সালা করার ব্যাপারে আইএসএফ অত্যন্ত আশাবাদী। আব্বাসের দাবি বা বক্তব্য প্রসঙ্গে এদিন বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান এদিন কোনও মন্তব্য করতে চাননি। অধীর-ঘনিষ্ঠ নেতা তথা বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী বলেন, মিম কোনও ফ্যাক্টর নয় এখানে। আলোচনার মাধ্যমে মহাজোট তৈরি হবেই।