ব্রিগেড মঞ্চ থেকেই কংগ্রেসকে আক্রমণ আব্বাসের
বঙ্গ ভোটের (WB Assembly Election) নির্ঘণ্ট প্রকাশ হয়ে গিয়েছে। অথচ টানা কয়েকমাস ধরে আলোচনার টেবিলে বসেও বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ (ISF) জোটের জট কাটেনি। আইএসএফের দাবি মেনে জোটের বড় শরিক সিপিএম তাদের পছন্দমতো আসন ছেড়ে দিলেও, কংগ্রেস (Congress) এ ব্যাপারে এখনও সবুজ সংকেত দেয়নি। তা সত্ত্বেও তিন দল মিলে রবিবার ব্রিগেডের মেগা শো’য় শামিল। এটাই নির্বাচনের আগে বিজেপি ও তৃণমূল বিরোধী সবচেয়ে বড় প্রচারসভা। নেতাদের প্রতিটি শব্দে, প্রত্যেক কথায় তার প্রতিফলন। কিন্তু তার মাঝেই ‘সংযুক্ত মোর্চা’য় ঐক্যের তাল কেটে গেল আরেক জোট শরিক আইএসএফ প্রধান আব্বাসের বক্তব্যে। পছন্দমতো আসন পেয়ে তিনি যেমন বামেদের ধন্য ধন্য করলেন, তেমনই কড়া বার্তা দিলেন কংগ্রেসকেও। আর তা ঘিরেই এত বড় মঞ্চে ক্ষণিকের জন্য পরস্পরের মতানৈক্যের ছবি প্রকাশ্যে চলে এল। তা নজর এড়াল না কারও।
”ভিক্ষা চাই না, অংশীদারিত্ব চাই।” কথা বলতে এটুকুই ছিল। কিন্তু তাতেই বার্তা স্পষ্ট। যাঁদের উদ্দেশে একথা বলা, বুঝলেন তিনিও। রবিবার দুপুরে ব্রিগেডের মঞ্চে দাঁড়িয়ে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নির্বাচনী বার্তা দিতে গিয়ে আব্বাসের (Abbas Siddique)এটুকু মন্তব্যেই বোঝা গেল, কংগ্রেসকেই তিনি কাঠগড়ায় তুলছেন। কারণ, সিপিএমের সঙ্গে জোট রফা হয়ে গেলেও, কংগ্রেস সেভাবে আব্বাসের দলকে জায়গা ছেড়ে দিতে রাজি নয়। ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রণ্টের প্রধানের ভাষণে সেই অভিযোগের রেশ টের পেতেই বক্তব্যের মাঝেই মঞ্চ ছেড়ে চলে যেতে উদ্যত হন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)। তাঁকে কোনওক্রমে বুঝিয়ে তা আটকে দেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। আপাতভাবে তা মিটে গেলেও এই ঝাঁজালো আক্রমণ যে হজম করতে পারেননি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি, তা গোপন রইল না।
রাজ্য থেকে তৃণমূল সরকারকে হঠিয়ে দিতে বাম-কংগ্রেস জোট নতুন নয়। রাজনৈতিক আদর্শে একে অপরের বিপরীতমুখী হলেও, সময় বদলের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই কট্টর আদর্শ থেকে খানিক সরে এসেছে দুই দল। ২০১৬ সালে তাই তৃণমূল বিরোধী লড়াইয়ে হাতে হাত মেলাতে বিশেষ বেগ পেতে হয়নি কাউকেই। একুশে আবার পরিস্থিতি আরও কিছুটা আলাদা। মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বিজেপি। ফলে লড়াই এখন তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে। বিজেপির গায়ে আবার হিন্দুত্বের তকমা। ফলে তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের গুরুত্ব ভিন্ন। সেই কারণেই সম্ভবত বাম-কংগ্রেস জোটে এবার নতুন শরিক আব্বাসের আইএসএফ। কিন্তু বামেদের মতো কংগ্রেসও কি ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টকে এতটাই গুরুত্ব দিতে প্রস্তুত? এই প্রশ্ন আজ তুলে দিল ব্রিগেড মঞ্চে আব্বাস-অধীরের আচরণ।