বাংলায় বেকারত্ব নিয়ে বিজেপির দাবি নস্যাৎ করে দিল কেন্দ্রীয় তথ্যই
ভোটের প্রাক্কালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে(Mamata Banerjee) আক্রমণ করাই বিজেপি(BJP) নিজের ধ্যান জ্ঞান করে নিয়েছে। মমতা নিজেই সেই আক্রমণকে শক্ত হাতে প্রতিহত করছেন। বিজেপির রাজ্য সরকারকে আক্রমণের মূল অস্ত্রই চাকরি(Job)। প্রধানমন্ত্রী থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিজেপির সব কেন্দ্রীয় নেতারাই দাবি করেছেন, বেকারদের চাকরি দিতে অক্ষম পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করে তাঁরা বার বার বলেছেন, রাজ্যে কাজ না পেয়েই শ্রমিকদের বাইরের রাজ্যে কাজের সন্ধানে যেতে হয়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর প্রত্যুত্তরে বরাবরই দাবি করেছেন যে ক্ষুদ্র, মাঝারি এবং কুটির শিল্পে(MSME industry) দেশের মধ্যে এক নম্বরে বাংলা। বেকারত্বর হারও(Unemployment Rate) এই কয়েক বছরে অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। তিনি এও দাবি করেন, যে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে(West Bengal) বেকারত্বের হার কম। আর এক্ষেত্রে তিনি যে একটুও ভুল বলেননি, তা প্রমাণ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় তথ্য।
সিএমআইই-র(CMIE) ২০২০ সালের তথ্য অনুযায়ী, বাংলায় বেকারত্বের হার এপ্রিল- মে মাসে ১৭.৪% থেকে কমে ডিসেম্বর মাসে ৬% তে এসে দাঁড়িয়েছে। যেখানে দেশে বেকারত্বের হার ৭.৬%। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে বাংলার ৮৮ লক্ষ ক্ষুদ্র কুটির শিল্প কেন্দ্রে ১৩৫ লক্ষ মানুষ কর্মরত। আম্পান, করোনার মতো দুর্যোগের মোকাবিলা করেও রাজ্য বেকারত্বের হার কমিয়েছে।
বিজেপির তরফে প্রায়ই গুজরাট মডেলের কথা বলা হয়। কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি সত্যিই অনেকটাই পিছিয়ে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের ক্ষেত্রে। গুজরাটে ৩৩ লক্ষ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কেন্দ্রে মাত্র ৬১ লক্ষ মানুষ কর্মরত। বিহার এবং মধ্যপ্রদেশে যথাক্রমে ৫৩ লক্ষ মানুষ ২৬ লক্ষ কেন্দ্রে এবং ৪৮ লক্ষ মানুষ ৩৪ লক্ষ কেন্দ্রে কর্মরত। বাংলায় এই সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি।
ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে মহিলাদের কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রেও দেশে এক নম্বরে বাংলা। বাংলায় ২৯,০১৩,২৪ জন মহিলা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের সাথে যুক্ত।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে জোর দিয়েছেন। শুধু যে এমএসএমই কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়িয়েছেন তাই নয়, পুরনো কেন্দ্রগুলিকে আরো উন্নত করেছেন। ২০১১ সাল থেকে বাংলার জিএসডিপি ২.৭ গুণ বৃদ্ধি করতেও ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে।
এমনকী কাজ হারানো পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ফিরিয়ে কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রেও ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের ভূমিকা অপরিসীম। করোনা লকডাউনের শুরুতে যেখানে রাজ্যে বেকারত্বের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ১৭.৪ শতাংশ সেখান থেকে কয়েক মাসেই তা ৬% তে পৌঁছেছে।
করোনা, আম্পান সামলেও বেকারত্ব হ্রাস করতে সক্ষম হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।