এলেন না চিত্র তারকারা, মাঠ ছাড়লেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা
বিজেপির পরিবর্তন যাত্রার রথে নেই কোনও হেভিওয়েট নেতা। আসেননি কোনও অভিনেতা-অভিনেত্রীও। এতে হতাশ হয়ে মাঠ ছাড়লেন দলের কর্মী-সমর্থকরা। এই পরিবর্তন যাত্রাকে ঘিরে মাঠে যে ভিড় চোখে পড়েছিল তা নিমেষের মধ্যেই যেন ফাঁকা হয়ে যায়।
রবিবার বিজেপির পরিবর্তন যাত্রাকে কেন্দ্র করে বৈষ্ণবনগর ফুটবল খেলার মাঠে উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। তবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বা কোনও অভিনেতা-অভিনেত্রী পরিবর্তন যাত্রার রথে না থাকায় কর্মী-সমর্থকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জনসভার মাঠ ছেড়ে চলে যান। দিলীপ ঘোষ ও বাংলা সিনেমা জগতের তারকারা পরিবর্তন যাত্রার রথে উপস্থিত থাকবেন বলে বিজেপির তরফে ব্যাপক প্রচার চালানো হয়েছিল। কিন্তু এদিন কাউকেই দেখতে না পেয়ে কর্মী-সমর্থকরা হতাশ হয়ে জনসভা মাঠ ছাড়েন। ফলে প্রথমে উপচে পড়া ভিড় চোখে পড়লেও পরবর্তীতে মাঠ প্রায় খালি হয়ে যায়। তবে রথযাত্রা চলার সময় বৈষ্ণবনগরের রাস্তার দু’ধারে রথ দেখতে উৎসাহী মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
মালদা থেকে প্রথমে বিজেপির পরিবর্তন রথটি প্রবেশ করে কালিয়াচকে। পরিবর্তন যাত্রাতে উপস্থিত ছিলেন উত্তর মালদার সাংসদ খগেন মুর্মু, বিজেপি নেত্রী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী, মালদা জেলা পর্যবেক্ষক শংকর চক্রবর্তী প্রমুখ। কালিয়াচক চৌরঙ্গী এলাকায় জাতীয় সড়কে রথটি দাঁড় করিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেওয়ার পরেই বৈষ্ণবনগর অভিমুখে রওনা দেয়। বৈষ্ণবনগর এলাকার প্রাণকেন্দ্র ১৬ মাইল স্ট্যান্ড এলাকায় বিজেপির কর্মী-সমর্থক ও নেতৃত্বরা পরিবর্তন যাত্রা রথকে সংবর্ধনা জানাতে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি বিধায়ক স্বাধীন কুমার সরকার, মণ্ডল কমিটির সভাপতি অর্জুন মণ্ডল, মনোজ কুমার মণ্ডল ও সন্তোষ মণ্ডল প্রমুখ। সেখান থেকে বৈষ্ণবনগর অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন। বৈষ্ণবনগর ফুটবল খেলার মাঠে সমস্ত নেতৃত্বরা নেমে পড়েন এবং সেখানে একটি জনসভা করা হয়। জনসভা শেষে মধ্যাহ্নভোজন সেখানেই সারেন রথ আরোহীরা। জনসভা শুরুতে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেলেও সভা শেষ হওয়ার আগেই মাঠ প্রায় খালি হয়ে যায়।
সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, ‘এবার বাংলায় পরিবর্তনের পরিবর্তন করতে হবে। বাংলা থেকে বামফ্রন্টকে সরিয়ে ক্ষমতার পরিবর্তন করে দিদিকে নিয়ে এসেছিলেন বাংলার মানুষ। এবার সেই দিদিকে সরিয়ে পরিবর্তন করে বিজেপিকে নিয়ে আসতে হবে। আর সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আমরা পরিবর্তন যাত্রা শুরু করেছি। উত্তরবঙ্গের ৫৪টি বিধানসভা এলাকায় পরিবর্তন যাত্রা চলছে। পরিবর্তন যাত্রা রথ যেখানেই প্রবেশ করছে সেখানেই হাজার হাজার মানুষ রাস্তার দুই ধারে দাঁড়িয়ে আমাদের আশীর্বাদ করছেন। তৃণমূলের সন্ত্রাসে বাংলার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। তাই বাংলার মা-বোনেরা পরিবর্তনের পরিবর্তন চাইছেন। তাঁদের আশীর্বাদে বাংলায় পদ্মফুলের সরকার হবে। মালদার তথা বৈষ্ণবনগর মানুষকে আর ভিনরাজ্যে কাজে যেতে হবে না। প্রতিটি ঘরে ঘরে মানুষ কাজ পাবে। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এবং বাংলায় বিজেপি সরকার। ডবল ইঞ্জিনের সরকার হবে। বাংলার উন্নয়ন হবে। সোনার বাংলা গড়ে তোলা হবে।’
বিজেপি বিধায়ক স্বাধীন কুমার সরকার বলেন, ‘আগামী ২ মে পর্যন্তই তৃণমূলের রাজ চলবে। ৩ মে’র পর বাংলায় পদ্মফুলের সরকার হবে। তারই আভাস এই পরিবর্তন যাত্রার মধ্য দিয়ে আমরা পাচ্ছি। মালদা জেলার গাজোলে আমাদের এই পরিবর্তন যাত্রা শেষ হবে। সেখানে একটি প্রকাশ্য জনসভা করা হবে। জনসভায় উপস্থিত থাকবেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তারপর নির্বাচনের জন্য ভোটযুদ্ধে সকলকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’