কেষ্টর ঢাক, খেলা হবে – ভোট আবহাওয়ায় অভিনব মিষ্টিমুখ বাংলায়
ভোট-মাঠে খেলায় মেতেছে আম বাঙালি। রাজনীতির চালচিত্র ছাড়িয়ে এখন ড্রয়িং রুমে ঢুকে পড়েছে ‘খেলা হবে’ (Khela Hobe) গানের ছন্দ। মোবাইলে মোবাইলে যখন আছড়ে পড়ছে ‘রিদম’, তখন খাবারের পাতেই বা বাদ যায় কেন? এবার তাই মিষ্টিমুখেও ‘খেলা হবে’। প্রতিবারই ভোট বাজারের জেল্লা বাড়াতে হাজির হয় ‘রাজনৈতিক’ মিষ্টি। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে সেই তালিকায় এবার নতুন করে জায়গা করে নিয়েছে নিত্যনতুন আইটেম।
বলরাম মল্লিক ও রাধারমণ মল্লিকে এবার রেকাব সাজবে ‘খেলা হবে’ সন্দেশে। আর আছে সব দলের প্রতীকের সাজে সাজানো মিষ্টি। সেগুলি মূলত সন্দেশ। বসন্ত এসে গিয়েছে। সামনেই রামনবমী। ভোট-বাজারে এই উৎসব যে এখন অন্য মাত্রা নিয়ে আসছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই আগেভাগেই রামনবমী স্পেশাল কেক তৈরি করছে বলরাম। এখানকার কর্ণধার সুদীপ মল্লিকের কথায়, ‘আমরা চারশো টাকা দামের যে কেক আনছি, তাতে দুর্গাপুজো করবেন শ্রীরামচন্দ্র। আর সরাসরি রাজনীতির গন্ধ লাগা যে সন্দেশ তৈরি হচ্ছে, তার কোনওটিতে থাকছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ, আবার কোনওটিতে হাসিমুখে হাজির হচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি।’ রিষড়ার ফেলু মোদকে ইতিমধ্যেই সুপার হিট ‘খেলা হবে’ সন্দেশ। সেখানে চকোলেটের সঙ্গে মিলেছে সাদা নরম পাকের সন্দেশ। এখানকার কর্ণধার অমিতাভ দে’র কথায়, ‘আমরা গোড়া থেকেই দারুণ সাড়া পাচ্ছি এই সন্দেশে। খেলা হবে কথাটি এখন পুরোদস্তুর রাজনৈতিক। তাতে মেশানো আছে উচ্ছ্বাস, মজা। নতুন প্রজন্ম তাই এই সন্দেশে মজেছে।’
বীরভূমের তৃণমূল-কর্তা অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) ‘চড়াম চড়াম’ ঢাকের বাদ্যির মহিমা কে না জানে? উৎসব-পার্বণে যে ঢাক বাঙালির উঠোনে বাজত, ভোটের বাজার গরম করার জন্য তা নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন অনুব্রত। আর তাতে ‘অনুপ্রাণিত’ হয়ে ভিয়েন ঘরে নেমে পড়েছেন হাওড়ার ব্যাতাইতলার সৈকত পাল। ব্যাতাই মিষ্টান্ন ভাণ্ডার তৈরি করছে ‘কেষ্টর ঢাক’। ঢাকের গড়নে তৈরি হওয়া সন্দেশে লেখা থাকছে ‘কেষ্ট’র নাম। আর থাকছে সন্দেশে গড়া পদ্ম, জোড়া ফুল… পাশাপাশি। সৈকতবাবুর কথায়, ‘ভোটও তো এখন উৎসব। এই সময় যাঁরা উপহার হিসেবে মিষ্টি নিয়ে যান, তাঁরা রাজনৈতিক সমর্থকদের নির্দিষ্ট প্রতীকের মিষ্টি দিতে ভালোবাসেন। আমরাও তাঁদের চাহিদা মতো মিষ্টি বানাই।’
সতীশ ময়রার কর্ণধার সম্রাট দাসের কথায়, ‘খেলা হবে নিয়ে যখন এত মাতামাতি, তখন আমরাই বা পিছিয়ে থাকব কেন? আমরাও ওই সন্দেশ তৈরির জন্য ছাঁচের অর্ডার দিয়ে দিয়েছি। দু’একদিনের মধ্যেই তা চলে আসবে। এর সঙ্গে আমরাও বিভিন্ন দলের প্রতীক আনছি সন্দেশে। আপাতত সব দলের প্রতীকই বিক্রি হবে। আর ২ মে থেকে কয়েকদিন একটি মাত্র প্রতীক থাকবে। সেই প্রতীকটি কী, সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন!’
করোনা সংক্রমণ বাঙালিকে চিনিয়েছিল ইমিউনিটি সন্দেশ। আপাতত সেই স্বাদ বদলাচ্ছে বাঙালি। মিষ্টির রেকাবিতেও যে এখন ভোট ভোট গন্ধ।