প্রতীক্ষার শেষ, আবেগে ভাসছে গোটা নন্দীগ্রাম
এ যেন শবরীর প্রতীক্ষা, ‘শাপমোচনের’ অপেক্ষা! যে প্রতীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ১৮ জানুয়ারি তেখালির(Tekhali) জনসমুদ্র থেকে। সেদিন জনজোয়ারে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন নিজের ইচ্ছে! মমতা(Mamata Banerjee) জানতে চেয়েছিলেন, ‘আমি যদি নন্দীগ্রামে প্রার্থী হই, কেমন হয়?’ উল্লাস, উচ্ছ্বাস আর সোল্লাসের সিংহগর্জনে ‘সায়’ ফিরিয়ে দিয়েছিল জনতা—হ্যাঁ, দিদি, খুব ভালো হয়! প্রতীক্ষার শুরু তখন থেকেই। এখন আবেগে ভাসছে গোটা নন্দীগ্রাম।
শুক্রবার দুপুরে কালীঘাটে তাঁর ঘোষণা পরেই প্রহর গুনছে নন্দীগ্রাম (Nandigram)। দেওয়াল লিখন শুরু হয়েছিল জনসভার দিনই। সে তো দেওয়ালে লেখা নাম—মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অপেক্ষা তাঁকে সশরীরে দেখার, তাঁর কথা শোনার, তাঁর ছোঁয়া পাওয়ার। নন্দীগ্রামবাসীর সেই প্রতীক্ষার অবসান হবে আগামী ৯ মার্চ বিকেলে। শুক্রবার দুপুরে দলীয় প্রার্থী তালিকা ঘোষণার শুরুতেই তৃণমূল সুপ্রিমো জানিয়ে দিলেন, তিনি লড়ছেন নন্দীগ্রাম থেকেই। প্রচারপর্বের শুরুতেই তিনি যাবেন নিজের কেন্দ্র হলদি নদী পাড়ের জনপদে। তাঁর কথায়, ‘আগামী মঙ্গলবার (৯ মার্চ) ইস্তাহার প্রকাশ করেই চলে যাব নন্দীগ্রামে। পরেরদিন ১০ তারিখ বিকেল সাড়ে তিনটের সময় মনোনয়নপত্র জমা দেব। পরেরদিন শিব চতুর্দশী, কলকাতায় ফিরে আসব।’
প্রার্থীর নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা হতেই এদিন আবেগের স্রোতে ভেসে যায় নন্দীগ্রাম। নেত্রীর ছবি সাঁটা টি-শার্ট গায়ে চাপিয়ে সীতানন্দ কলেজের সামনে তাঁর নামে জয়ধ্বনি শুরু করে টিএমসিপি’র কর্মী-সমর্থকরা। দল সুপ্রিমোকে জিতিয়ে আনার শপথও নেন তাঁরা। প্রার্থীর নাম ঘোষণা হতেই এদিন কেন্দামারি জলপাই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গোপীমোহনপুরে বড়সড় মিছিল করে তৃণমূল। মিছিলের উদ্যোক্তা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আবু তাহেরের কথায়, এখানে নেত্রীর জয়, শুধু সময়ের অপেক্ষা। তবুও কোনওরকম ফাঁকফোকর না রেখেই অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য সবাই ঝাঁপিয়েছি।
নির্বাচনী পর্বে মাথা গোঁজার ঠাঁই এবং রাজনৈতিক দপ্তরের জন্য ‘আস্তানা’ তৈরি হয়েছে প্রার্থী মমতার। সেই তালিকায় রয়েছে বটতলা ও জানকীনাথ মন্দির সংলগ্ন এলাকায় দু’টি এবং জহুরির মোড় ও রেগাপাড়ায় আরও দু’টি ঘর। এদিন মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু এবং রাজ্যসভার সদস্য দোলা সেন নন্দীগ্রামে এসে সেসব ‘আস্তানা’ সরেজমিনে দেখেও যান।