প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই বিক্ষোভে নাজেহাল বিজেপি
প্রার্থী ঘোষণার পর একাধিক জায়গায় রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপির(BJP) নেতা কর্মীরা। কোথাও আজসুকে আসন ছেড়ে দেওয়ার প্রতিবাদে বিজেপির পতাকা ও নেতাদের কুশপুতুল পোড়ানো হয়। কোথাও আবার রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে ক্ষোভ উগরে দেন নেতারা। গোটা ঘটনায় অস্বস্তি বেড়েছে গেরুয়া শিবিরে।
শনিবার বিকেলে বিজেপির প্রার্থী ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তারপরই দিকে দিকে শুরু হয় বিক্ষোভ। বাঘমুণ্ডি(Baghmundi), জয়পুর সহ একাধিক বিধানসভায় বিক্ষোভে শামিল হন বিজেপির নেতা কর্মীরা। বাঘমুণ্ডি বিধানসভার ঝালদা-১ ব্লকের জারগো মোড়ে বিজেপির পতাকা এবং দলের একাধিক জেলা নেতার কুশপুতুলও দাহ করে ক্ষোভে ফেটে পড়েন নেতা কর্মীরা। পরে বাঘমুণ্ডিতেও বিক্ষোভ দেখানো হয়। সেখানে বাঘমুণ্ডি পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপির সভাপতি কার্তিক চালক, বিজেপির জেডপি ১৫ মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক বিজয় মোহন সিংদেও, ওই মণ্ডলের দু’জন সহ সভাপতি, বাঘমুণ্ডি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও ওই মণ্ডলের যুব মোর্চার সভাপতি উপস্থিত ছিলেন।
বিজয়বাবু বলেন, গত লোকসভা ভোটে বাঘমুণ্ডি বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি সবচেয়ে বেশি ভোটে প্রায় ৫২ হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে ছিল। সেই আসন কেন আজসুকে ছাড়া হল? ওই আসনে আজসু দলের ১০ জন লোকও নেই। আজসুর প্রার্থী আমরা মেনে নেব না। বাঘমুণ্ডিতে বিজেপির পদ্মফুল প্রতীকে প্রার্থী দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
জয়পুরে বিজেপি প্রার্থী করেছে প্রাক্তন এমপি নরহরি মাহাতকে। ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে আসা ওই নেতাকে প্রার্থী হিসেবে মানতে নারাজ জয়পুর বিধানসভার বিজেপি নেতা কর্মীরা। এদিন বিক্ষুব্ধরা হেঁটবাটরি গ্রামে একটি বৈঠকও করেন। সেখানে বিজেপির একাধিক জেলা নেতা উপস্থিত ছিলেন। ঝালদা-২ ব্লকের জেডপি ১৮ মণ্ডলের সভাপতি নেপাল চন্দ্র মাহাত বলেন, ২০১১ সালে এবং ২০১৬ সালে এই এলাকায় হাতে গোনা কয়েকজন বিজেপি করত। সেই সময় নিজের বাড়ির অর্থ খরচ করে দলটা করেছি। এই এলাকার যে কোনও জেলা নেতা বা কোনও বুথ সভাপতিকে প্রার্থী করলে মেনে নিতাম। কিন্তু, অন্য দল থেকে আসা নেতাকে প্রার্থী মানতে পারব না।
বিজেপির পুরুলিয়া জেলার সহ সভাপতি শ্রীপতি মাহাত বলেন, নরহরিবাবুকে দলের জয়পুর বিধানসভার নেতাকর্মীরা মেনে নিতে পারছেন না। কর্মীরা নিজেদের ক্ষোভের কথা জানাতেই পারেন। এদিন বৈঠকও হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দলের বিভিন্ন সার্ভেতে যাঁদের নাম উঠে এসেছিল কিংবা সাধারণ মানুষ যাঁদের চাইছেন, তাঁদের মধ্যে যে কোনও পুরনো কর্মীকে প্রার্থী করলে আমাদের কোনও আপত্তি নেই।
এবিষয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। তাই তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
সবুজ শিবির অবশ্য সেই সব নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ। তারা নিজেদের প্রস্তুতিতেই ব্যস্ত রয়েছে। আজ, সোমবার তৃণমূল প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে চলেছেন। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রঘুনাথপুরের তৃণমূল প্রার্থী হাজারি বাউরি, কাশীপুরের স্বপন বেলথোরিয়া এবং বাঘমুণ্ডির প্রার্থী সুশান্ত মাহাত মনোনয়ন জমা দেবেন। বাকিরা মনোনয়ন জমা দেবেন মঙ্গলবার। তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি গুরুপদ টুডু বলেন, তিনটি বিধানসভার প্রার্থীরা সোমবার মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। বাকিদের প্রস্তুতির কাজ চলছে।