আরামবাগের ঘরের মেয়ে হতে চান সুজাতা
নেত্রী নয়, আরামবাগের(Arambag) ঘরের মেয়ে হতে চাই। বুধবার তারকেশ্বরে(Tarakeshwar) পুজো দিয়ে প্রচার শুরু করব। আরামবাগের মানুষ যদি জিতিয়ে আনেন বাকি জীবনটা কাটাব আরামবাগেই। মঙ্গলবার ফোনে এমনটাই জানালেন আরামবাগের তৃণমূল(TMC) প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল(Sujata Mondal)। তিনি আরও বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সৈনিক হয়ে, দূত হয়েই লড়াই করব।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার আরামবাগে আসছেন সুজাতাদেবী। ইতিমধ্যেই আরামবাগের জেলা নেতৃত্ব তাঁর জন্য ভাড়াবাড়ি দেখা শুরু করেছেন। যদিও সুজাতা মণ্ডল বলেন, আরামবাগের প্রতিটি বাড়িই আমার ঘর। ঘরের মেয়ে হয়ে আরামবাগবাসীর সুখে দুঃখে সবসময় থাকতে চাই।
আরামবাগ পুরসভার প্রশাসনিকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী বলেন, বুধবার সুজাতা মণ্ডল আসবেন। আলাপ আলোচনা করে আমরা রাজনৈতিক কর্মসূচি ঠিক করব। দিদি প্রার্থী হিসেবে তাঁকে মনোনীত করেছেন। এতে আমরা খুশি। ইতিমধ্যেই আমরা সবাই ভোটের কাজে নেমে পড়েছি। তাঁর জন্য আমরা ভাড়াবাড়ি দেখা শুরু করছি। উনি এলেই বাড়িটি ফাইনাল করব। নির্বাচনী কাজকর্ম দলীয় অফিস থেকেই হবে।
লড়াকু নেত্রী সুজাতা মণ্ডলকে তৃণমূল আরামবাগে প্রার্থী করায় খুশি কর্মী সমর্থকরাও। তৃণমূল নেতা রাজেশ চৌধুরী বলেন, আমরা দলের প্রতি অনুগত। দল সুজাতা মণ্ডলকে আরামবাগ বিধানসভা থেকে মনোনীত করেছে। আমরা দলবদ্ধভাবে একসঙ্গে লড়ব। কর্মী সমর্থকরা খুবই খুশি। তাঁরা ইতিমধ্যে প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। দেওয়াল লিখন চলছে জোর কদমে।
২০১১ সাল থেকে আরামবাগে জিতে আসছেন তৃণমূলের কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা। কিন্তু, এবার তাঁকে টিকিট দেয়নি দল। তবে তিনি দলের প্রতি আস্থা হারাননি। বরং এদিন তিনি সুজাতা মণ্ডলের হয়ে দেওয়াল লিখনে নেমে পড়েন। তিনি বলেন, দিদি আমাকে ভাইয়ের মতো স্নেহ করেন। এবার মানুষের সেবা করার সুযোগ পাইনি। তবে আগামী দিনে মানুষের সেবা করার সুযোগ দিদি নিশ্চিত দেবেন।
সুজাতা মণ্ডল বাংলায় পরিচিত নাম। গত লোকসভা নির্বাচনে স্বামীকে জেতাতে তাঁর লড়াকু ভূমিকা দেখেছে বাংলার মানুষ। এখন অবশ্য তিনি নিজেই তৃণমূলের প্রথম সারির মুখ। এবার তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে আরামবাগ থেকে প্রার্থী করেছেন। যদিও সুজাতাদেবী বলেন, আরামবাগে প্রার্থী একজনই তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমি এখানে তাঁর একজন সৈনিক, দূত। আরামবাগ আমার অন্তরের জায়গা। বিষ্ণুপুর মহকুমার কোতুলপুরের জয়রামবাটিতে মা সারদার জন্মস্থান। সেখান থেকে আমার রাজনৈতিক জীবনের উত্থান হয়েছিল। আর আমি যেখান থেকে টিকিট পেলাম, তার পাশেই রয়েছে কামারপুকুর। ঠাকুর পরমহংসের জেলা। আমার জীবনে আরামবাগের অভূতপূর্ব মাহাত্ম্য। আরামবাগের মানুষ কী চান , কী অসুবিধা রয়েছে জানব। তাঁদের পাশে থেকে সমস্যা দূর করব। আরামবাগের মানুষের মণিকোঠায় থাকতে চাই। নিজে মহিলা হয়ে আরামবাগের মহিলাদের বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, তোমাদের সুখ দুঃখের সঙ্গী হব। তোমাদের সঙ্গেই হাত ধরে চলব।
গত লোকসভা নির্বাচনে সারা রাজ্যের মতো আরামবাগেও বিজেপি ভালো ফল করে। সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই যে সহজ হবে না, তা মানছেন সুজাতা মণ্ডলও। তবে সুজাতাদেবী আশাবাদী আরামবাগের ঘরের মেয়ে হয়ে ২ মে বিজয়ীর শেষ হাসি তিনিই হাসবেন। যদিও বিজেপি নেতা অরবিন্দ সমাজি বলেন, সুজাতা মণ্ডল দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। আরামবাগের মানুষ ওঁকে ভোট দেবে না।