মমতা ‘চা শ্রমিকদের মা’ মাদারিহাটে বললেন টাইগার
দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চা শ্রমিকদের মা। চা বাগানে এই বলেই প্রচার শুরু করলেন মাদারিহাটের তৃণমূল প্রার্থী রাজেশ লাকড়া (Rajesh Lakra), যিনি টাইগার নামেও পরিচিত। আর সেই মায়ের কথা বলতে নন্দীগ্রামেও যাবেন বলে বুধবার জানালেন রাজেশ। কেন তিনি মা? সেই ব্যাখ্যা দিয়ে প্রচারে রাজেশ বলছেন, চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি বৃদ্ধি করেছেন, চা সুন্দরী প্রকল্পে শ্রমিকদের ঘর দিয়েছেন, বন্ধ বাগানের শ্রমিকদের ফাউলাইয়ের টাকা বাড়িয়েছেন। লকডাউন ও করোনাকালে নিঃশুল্ক রেশনের ব্যবস্থা করে শ্রমিকদের বাঁচিয়েছেন, একেএকে বন্ধ বাগান খুলেছেন। সেই বাংলার মেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) চা শ্রমিকদের কাছে মা নয়তো কি? প্রচারে শ্রমিকদের সামনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘মা’ সম্বোধন করার সময় কখনও কখনও তৃণমূল (Trinamool) প্রার্থীর চোখের কোণে জল চিকচিক করে উঠছে।
রাজেশ লাকড়ার বাড়ি জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি ব্লকের লক্ষ্মীপাড়া বাগানে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডুয়ার্সে আদিবাসীদের এই তরুণ ডাকাবুকো নেতাকে মাদারিহাটে প্রার্থী করেছেন। তারপরেই বীরপাড়ায় মাদারিহাটের তৃণমূল প্রার্থী রাজেশবাবুকে ‘বহিরাগত’ প্রার্থীর তকমা শুনতে হয়েছে। বহিরাগত প্রার্থী চাই না বলে বীরপাড়ায় দলের কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিলও করেছিলেন।
কিন্তু মঙ্গলবার বীরপাড়ার মাড়োয়ারি ভবনে দলের ব্লক নির্বাচনী কমিটি গঠনের বৈঠকে কর্মীদের সেই ক্ষোভ-বিক্ষোভ একেবারে উধাও হয়ে যায়। বহিরাগত পরিচয় নিয়ে কর্মীদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ মিটে যাওয়া স্বস্তিতে রাজেশবাবুও। প্রার্থী বলেন, আমি ডুয়ার্সের আদিবাসীদেরই ছেলে। তাই আমি বহিরাগত নই। আমাকে নিয়ে দলের কারও কোনও ক্ষোভ-বিক্ষোভ নেই। প্রার্থী হিসেবে আমাকে নিয়ে যেটুকু ক্ষোভ ছিল মঙ্গলবারের ব্লক নির্বাচনী কমিটি গঠনের বৈঠকে তাও মিটে যাওয়ায় আমি খুশি।
মাদারিহাট বিধানসভায় ২৬টি চা বাগান। অর্থাৎ এখানে চা শ্রমিকরাই ভোটে নির্ণায়ক ভূমিকা নেয়। ভোটের প্রচারে তৃণমূল প্রার্থী চা শ্রমিকদের (Tea Workers) সামনে চা সুন্দরী প্রকল্প, শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি বৃদ্ধি, বন্ধ বাগানের শ্রমিকদের ফাউলাইয়ের টাকা বৃদ্ধির কথা বলছেন। জয় জোহার প্রকল্পে ষাটোর্ধ্ব শ্রমিকদের মাসিক ১০০০ টাকার ভাতা এবং লকডাউন ও করোনার বিপদের সময় নিঃশুল্ক রেশনের ব্যবস্থা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের চা শ্রমিকদের পাশে থাকার কথাও বলছেন।
ভোটের প্রচারে চা শ্রমিকদের জন্য এতকিছু উন্নয়নের কথা বলার সময় কোথাও কোথাও তৃণমূল প্রার্থী রাজেশবাবুকে চোখের জলও ফেলতে দেখা যাচ্ছে। বলেন, আমার মতো একজন আদিবাসী যুবককে প্রার্থী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডুয়ার্সের অবহেলিত চা শ্রমিকদের কল্যাণে যে বিভিন্ন প্রকল্প চালু করেছেন তাতে তিনি মা ছাড়া নয় তো কি।
ভোটের প্রচারের জন্য গয়েরকাটা, তেলিপাড়া, বীরপাড়া ও মাদারিহাটে নির্বাচনী কার্যালয় খুলছেন রাজেশবাবু। হান্টাপাড়া ও টোটোপাড়াতেও নির্বাচনী কার্যালয় খুলবেন বলে জানিয়েছেন। নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে প্রচার চালানোর ফাঁকে একদিন নন্দীগ্রামেও প্রচারে যাবেন বলে জানান।
তাঁর দাবি, নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে নন্দীগ্রামে যাওয়ার ডাক এসেছে। নন্দীগ্রামে গিয়ে স্থানীয় আদিবাসীদের বলবেন, বন্ধ বাগান না খুলে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি ডুয়ার্সের চা শ্রমিকদের কীভাবে ধোঁকা দিয়েছে।