উত্তরবঙ্গে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা না হওয়ায় বিজেপিতে ক্ষোভ
একে একে প্রধান প্রতিপক্ষরা তাদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে ভোটের প্রচারে পুরোদস্তুর নেমে পড়েছে। সেখানে বিজেপির উত্তরবঙ্গ সহ অনেক জায়গায় এখনও প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হয়নি। এতে শিলিগুড়ি ও তার লাগোয়া এলাকায় বিজেপির নিচুতলার নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করেছে। উল্টে সম্ভাব্য প্রার্থী নিয়ে নিত্যনতুন নাম ছড়িয়ে পড়ায় ক্ষোভ ব্যাপক আকার নিতে চলেছে। কারণ শিলিগুড়ি, মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি, ফাঁসিদেওয়া এবং ডাবগ্রাম- ফুলবাড়ি কেন্দ্রে বিজেপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এমন কিছু নাম ছড়িয়ে পড়েছে তাতে দলের একটি বড় অংশের মধ্যে বিক্ষোভ মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে।
শিলিগুড়িতে বিজেপির ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের বক্তব্য, প্রতিপক্ষরা ভোটের দিন ঘোষণার আগে থেকেই জনসংযোগ কর্মসূচি শুরু করেছে। তারপর প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হতে তারা জনসংযোগ যাত্রার পাশাপাশি ছোট ছোট বৈঠক, দেওয়াল লিখন, ফেস্টুন,ফ্লেক্স দিয়ে পুরোপুরি প্রচারে নেমে পড়েছে। সেখানে শিলিগুড়িতে বিজেপির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে তাঁরা স্বীকার করে নিয়েছেন।
আর এই পরিস্থিতির জন্য বিজেপির নেতা-কর্মীরা দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে দায়ী করছেন। তাঁরা ভেবে পাচ্ছেন না, সারা বছর ধরে যে লড়াই সংগ্রামের মধ্যদিয়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করে মানুষের আস্থা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বিজেপির মতো একটা বড় দলে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ নিয়ে কেন এত বিলম্ব হবে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক শিলিগুড়ি পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিজেপি কর্মী ও স্থানীয় নেতাদের একাংশ বলেন, প্রার্থী তালিকা প্রকাশে দেরি করার প্রভাব কিন্তু মানুষের মধ্যে পড়তে বাধ্য। সবথেকে বিপদের কারণ হয়ে উঠেছে শিলিগুড়ি, মাটিগাড়া- নকশালবাড়ি, ফাঁসিদেওয়া এবং ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি কেন্দ্রে বিজেপির সম্ভাব্য প্রার্থী নিয়ে নানা ধরনের খবর ছড়িয়ে পড়ায় আমরা দলীয় কর্মীরা বিভ্রান্ত হচ্ছি। অন্যদল থেকে বিতাড়িতদের প্রার্থী করার সম্ভাবনার খবর ছড়িয়ে পড়ায় সাধারণ মানুষের কাছেও ভুল বার্তা যাচ্ছে। কেননা সারা বছর লড়াই সংগ্রাম করে, প্রতিপক্ষের কাছে মারধর খেয়ে যারা সংগঠনকে শক্তিশালী করল এখন যদি তাদের প্রার্থী করার ব্যাপারে উপেক্ষা করা হয় তাহলে দলের মধ্যে তার প্রভাব পড়বে। কেননা এমনটা হলে দলের অনেকেই তা মেনে নেবে না।
বিরোধীরা যখন বিভিন্ন এলাকায় একাধিক বার চষে ফেলেছে, সেখানে বিজেপি সেভাবে প্রচারেই নামতে পারেনি। তাদের অভিযোগের আরও একটি দিক হল, সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা নিয়ে এমন কিছু কিছু নাম উঠে আসছে যেটা সাধারণ মানুষ ভালোভাবে নিচ্ছে না। কারণ প্রতিটি অঞ্চলে সেখানকার মানুষের জাতি বা ভাষাগত যে বিন্যাস রয়েছে তার নিরিখে তাদের একটা চাহিদা, অভাব অভিযোগ রয়েছে। তার উপর ভিত্তি করে কিন্তু ভোটে প্রতিটি দল প্রার্থী নির্বাচন করে থাকে।
এই গুঞ্জন যদি সত্যি হয় তাহলে লোকসভা নির্বাচনের সাফল্য বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ধরে রাখা কঠিন হবে বলেই মনে করছেন দলের নিচুতলার নেতা-কর্মীরা। বিজেপির সর্ব ভারতীয় মুখপাত্র দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা এদিন শুধু বলেন, আমরা শিলিগুড়িতে এমন প্রার্থী দেব যিনি সারা বছর মানুষের সঙ্গে থাকবেন, কাজ করবেন।