নেতাজি ছাড়া বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামীরা ব্রাত্য প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে
স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষ পালন মহোৎসবের মেগা সরকারি কর্মসূচির সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী। মহাত্মা গান্ধীর ডান্ডি যাত্রার ৯১ তম বর্ষে শুক্রবার দেশের মধ্যে গুজরাতকেই বেছে নেওয়া হয়। আগামী এক বছর ধরে স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষপালন কর্মসূচি পালিত হবে। দেশের প্রতিটি রাজ্যেই এই কর্মসূচি পালিত হবে। স্বাধীনতা অমৃত মহোৎসব নামক এই বিরাট কর্মসূচির শুভারম্ভ করে আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের বিভিন্ন প্রান্তের স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং বীর শহীদদের নাম উল্লেখ করলেন। কিন্তু নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ছাড়া বাংলার আর কোনও বিপ্লবীর নাম প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত তালিকায় স্থান পায়নি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুক্রবার স্মরণ করলেন, ভগৎ সিং থেকে চন্দ্রশেখর আজাদকে। রামপ্রসাদ বিসমিল থেকে আশফাকউল্লা খান। গুরু রাম সিং থেকে পাল রামস্বামী। চকরা বিশাই থেকে লক্ষণ নায়েক। মাইয়াম বিরুড্ডু অথবা আল্লুরি সিরারাম রাজু। পাসালথা চেরা কিম্বা গোমধন কনবারকে। দেশের পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর দক্ষিণের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মহান বলিদানকে স্মরণ করে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধও করলেন তিনি। কিন্তু ক্ষুদিরাম বসু থেকে প্রফুল্ল চাকী। বাঘা যতীন থেকে বিনয় বাদল দীনেশ অথবা মাস্টারদা সূর্য সেনের মতো বাংলার বীর স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নাম প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের তালিকায় উচ্চারিত হল না।
প্রধানমন্ত্রী একমাত্র নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মরণ করেছেন তাঁর আজাদ হিন্দ বাহিনী কীভাবে আন্দোলন করেছিল, সেই গৌরবজ্জ্বল কাহিনী। মোদি বলেন, নেতাজি নিজে আন্দামানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষ পালনের কর্মসূচির সূত্রপাত করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বিভিন্ন প্রান্তের বিদ্রোহ ও আন্দোলনের উল্লেখ করেছেন গুজরাতের ওই সভায়। সন্ন্যাসী আন্দোলন থেকে চুয়াড় বিদ্রোহ। বরদোলি সত্যাগ্রহ থেকে চম্পারণ আন্দোলন। সম্বলপুর থেকে বুন্দেল সংঘর্ষ। কিন্তু এই বীরগাথাগুলির পাশাপাশি মেদিনীপুরে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় স্বাধীন তাম্রলিপ্ত সরকার গঠনের উল্লেখও তাঁর ভাষণে ছিল না।
১৯৪২ সালের ডিসেম্বর থেকে ১৯৪৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত এই ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীন সরকার গঠনের আন্দোলন ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। কিন্তু অন্তত প্রথম দিনের এই সূচনা পর্বে বিশেষভাবে বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নাম উঠে আসেনি প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে। যদিও প্রধানমন্ত্রী সংগ্রামের ভিত্তি হিসেবে ভারতের ভক্তি আন্দোলনকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। শ্রীচৈতন্যদেব থেকে শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের অবদানের কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে কর্মসূচির সূত্রপাত করে ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধের উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন পন্ডিত জওহরলাল নেহরু, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল,মৌলানা আবুল কালাম আজাদ, বাবাসাহেব আম্বেদকার এবং বিনায়ক দামোদর সাভারকরের নাম।