বিজেপির ডবল ইঞ্জিনের রাজ্যে নির্যাতিত মানুষ, সিঙ্গুরে বললেন মেধা
রবিবার কৃষকদের মহাপঞ্চায়েত থেকে পুরনো প্রশ্নটাকেই ফের উসকে দিয়ে গেলেন সমাজকর্মী মেধা পাটকর। রবিবার কৃষক আন্দোলনের ঐতিহাসিক মঞ্চ সিঙ্গুরের মাটিতে বসেছিল দেশজোড়া কৃষক আন্দোলনের উদ্যোক্তা সংযুক্ত কিষান মোর্চার মহাপঞ্চায়েত। সেখানেই বক্তব্য রাখতে এসে মেধা পাটকর (Medha Patkar) বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের নাম করে তাঁর বিজেপিতে যোগদান নিয়ে তুলোধোনা করেন। তিনি বলেন, একদিন কৃষকদের জমি রক্ষার আন্দোলন করেছিলেন। আজ কৃষকবিরোধীদের এত পছন্দ হয়ে গেল? আপনাকে স্পষ্ট করতে হবে, আপনি কৃষকদের পক্ষে না বিপক্ষে। দেশে নতুন স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয়েছে। বিজেপির হাত থেকে দেশমুক্তির এই সংগ্রামে কে কোন পক্ষে, তা পরিষ্কার করে দিতে হবে।
দেশজুড়ে চলা কৃষক আন্দোলনের ঢেউ এদিন প্রবলভাবেই আছড়ে পড়ে বাংলার কৃষক আন্দোলনের সূতিকাগার সিঙ্গুরে। মহাপঞ্চায়েতের ডাক শুনে এদিন হাজার হাজার কৃষক সিঙ্গুরে (Singur) জমায়েত হয়েছিলেন। সিঙ্গুর স্টেশনের কাছে ভিড়ে ঠাসা ময়দানে দেশব্যাপী কৃষক আন্দোলন সংগঠিত করা নেতৃত্ব দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দেন, বিজেপিকে একটি ভোটও নয়। যে সমস্ত রাজ্যে বিজেপি শাসন চলছে, সেখানে মানুষের জীবন, জীবিকা, কৃষিক্ষেত্র আজ নির্যাতনের শিকার। ডবল ইঞ্জিনে আমজনতা পিষ্ট হয়ে মারা পড়ছে। কৃষক বিরোধী শষ্যশ্যামলা বাংলায় তাই বিজেপিকে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। মহাপঞ্চায়েতের অন্যতম আহ্বায়ক অভীক সাহা বলেন, রাজ্যকে যদি মরুভূমি করতে না চান, তবে ডবল ইঞ্জিনের গল্প বিশ্বাস করবেন না। কৃষককে যদি বাঁচাতে চান, তবে বিজেপিকে ভোট নয়। যাকে খুশি ভোট দিন, কিন্তু বিজেপিমুক্ত বাংলা রাখুন। মেধা পাটকরও এদিন উদাহারণ দিয়ে দেখান, কীভাবে ডবল ইঞ্জিনের ফাঁদে পা দিয়ে আজ বিহার, ত্রিপুরায় কৃষক সমাজকে কাঁদতে হচ্ছে। যাঁকে মেধাদেবীরা কার্যত কৃষককুলের বিভীষণ হিসাবে এদিন চিহ্নিত করে দিয়ে গেলেন সেই বিধায়ক বলেন, আমি একটা অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি। এর বাইরে কিছু বলব না।
এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন কৃষক আন্দোলনের আরেক পরিচিত নেতা তথা সিঙ্গুরের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী বেচারাম মান্না। অরাজনৈতিক মহাপঞ্চায়েতের মঞ্চে অবশ্য তিনি সচেতনভাবেই ওঠেননি। তিনি বলেন, কোন অন্যায় করেছে দল? কৃষকদের বঞ্চিত করেছে, নাকি কৃষকদের রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে বাধ্য করেছে? দেশের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী সিঙ্গুর আন্দোলন যিনি করেছেন, তিনি কৃষকদের পিঠে শেষ পর্যন্ত ছুরি মেরেছেন, এটাই বাস্তব।
দেশজোড়া কৃষক আন্দোলনের প্রভাবে আগেই হুগলির কৃষিবলয় বিজেপির (BJP) জন্য সঙ্কট ডেকে এনেছিল। এদিন মহাপঞ্চায়েতের অরাজনৈতিক কৃষক নেতাদের ডাকে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকরা অংশ নেন। সেই ভিড় গেরুয়া শিবিরের নেতাদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলে দেবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।