রানিবাঁধে অমিত শাহর অপপ্রচারের কড়ায় গন্ডায় হিসেবে দিল তৃণমূল
আজ রানিবাঁধে(Ranibandh) জনসভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ(Amit Shah)। কাটমানি থেকে কয়লা চুরি তৃণমূলকে(TMC) আক্রমণ করতে কোন কিছুরই কমতি রাখেননি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী।
এবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর প্রতিটি অভিযোগের ধরে ধরে জবাব দিল তৃণমূল। তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ ডেরেক ও’ ব্রায়েন(Derek oBrien) তৃণমূলের পক্ষের জবাব টুইট করে জানিয়েছেন।
দেখে নেওয়া যাক কী ছিল শাহী দাবি, আর কীই বা তৃণমূলের উত্তর।
দাবি ১:
রাজ্যে এই কবছরে রাজনৈতিক হিংসা বৃদ্ধি পেয়েছে।
তৃণমূলের জবাব:
৩০৩ জন বিজেপি সাংসদের মধ্যে ১১৬ জনেরই ক্রিমিনাল রেকর্ড রয়েছে। বাংলাকে রাজনৈতিক হিংসার কেন্দ্রবিন্দু বলে এই প্রচার আসলে রাজনৈতিক চাল। যেখানে এনসিআরবির তথ্যে বলা আছে ২০১৬ তে রাজ্যে একটিমাত্র রাজনৈতিক খুন হয়েছে, সেখানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তার বিরোধীতা করে বলছেন ওই সময় ৩৬ টি খুন হয়েছে।
দাবি ২:
তৃণমূলের শাসনকালে রাজ্যে দুর্নীতি অন্য মাত্রা পেয়েছে।
তৃণমূলের জবাব:
কেন্দ্রীয় তথ্য অনুযায়ী বাংলায় দুর্নীতির ঘটনা ০.২ শতাংশ। যেখানে গুজরাটে ৬ শতাংশ।
দাবি ৩:
একটা সময় ছিল যখন বাংলা দেশের মোট জিডিপির ২৫ শতাংশ দিত। এখন তা তলানিতে এসে ঠেকেছে।
তৃণমূলের জবাব
শেষ দশ বছরে বাংলার জিডিপি ৪.৫ লক্ষ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৬.৯ লক্ষ কোটি টাকা হয়েছে। মোট ৫৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
দাবি ৪:
প্রধানমন্ত্রী সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখছেন। আমরা সবাইকে আধুনিক বাড়ি প্রদান করব।
তৃণমূলের জবাব
২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১- এ বাংলা আবাস যোজনায় বাংলায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বাড়ির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মোট ৩১, ৩০, ৮২৪ টি বাড়ির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কম এবং মাঝারি আয়ের মানুষের জন্যে স্নেহালয় এবং নিজশ্রী প্রকল্প চালু করেছেন।
দাবি ৫:
জলশক্তি মন্ত্রক বাংলার জন্যে ৯৯৩ কোটি টাকা রাজ্য সরকারকে দিয়েছে। তার মাত্র ১২১ কোটি টাকা খরচ করেছে রাজ্য।
তৃণমূলের জবাব:
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই জল স্বপ্ন প্রকল্পে ৫৮ হাজার কোটি টাকা খরচের ঘোষণা করেছেন। এই প্রকল্পে ২ কোটি পরিবারে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পরিশুদ্ধ পাণীয় জল সরবরাহ করা হবে। ২০২১ সালে শুরু হয় জল ধর জল ভর প্রকল্প। তার আওতায় বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করে তা কাজে লাগানো হচ্ছে।
দাবি ৬
আদিবাসীদের জন্যে কিছুই করেনি তৃণমূল।
তৃণমূলের জবাব
দলিতদের বিরুদ্ধে উত্তরপ্রদেশে অপরাধ ২৫.৫ শতাংশ। যেখানে বাংলায় মাত্র ০.৩ শতাংশ।
শিক্ষা
সরকারের শিক্ষাশ্রী প্রকল্পে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণী অবধি ১, ৯৬, ১৩৫ জন আদিবাসী ছাত্র আবেদন করেছে। নবম ও দশম শ্রেণীর ২৯,০০৯ জন আদিবাসী পড়ুয়া মাধ্যমিক পূর্ব বৃত্তির জন্যে আবেদন করেছে। একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীর ৭৩, ৭০২ টি আবেদন মাধ্যমিক পরবর্তী বৃত্তির জন্যে এসেছে। রাজ্যে মোট ৩৬ টি কেন্দ্রে বিশেষভাবে আদিবাসী ছাত্রছাত্রীদের জেইই, এনইইটি, ডব্লিউবিজেইই পরীক্ষা নেওয়া হয়।
সামাজিক সুরক্ষা
জয় জোহর এবং তপশীলি বন্ধু প্রকল্পে রাজ্য সরকার ষাটোর্দ্ধ আদিবাসী এবং তপশীলিদের মাসে হাজার টাকা করে দিয়ে থাকে।
স্থানীয় অর্থনীতি
আদিবাসী মৎস জীবিদের জন্যে সরকার যথাক্রমে ১.২৯ কোটি এবং ২.৩৬ কোটি টাকা খরচ করে ৭৪৬ টি দেশী মাগুর কালচার কেন্দ্র এবং ৯৩২ টি আইএমসি কালচার কেন্দ্র তৈরি করেছে।