ইস্তাহারে সিএএ বাতিলের দাবি শরিক এআইএডিএমকের, মুখ পুড়ল বিজেপির
অবশেষে দক্ষিণে দর্পচূর্ণ বিজেপির! একইসঙ্গে ডিগবাজি প্রয়াত জয়ললিতার দল এআইএডিএমকের (AIADMK)। ইস্যু, সিএএ (CAA)। ২০১৯ সালে মধ্যরাতে সংসদে বিল পাশের সময় বিজেপিকে সমর্থন দিলেও রাজ্যে ভোট আসতেই ভোলবদল। মোদি-অমিত শাহর দলের সঙ্গে জোট বেঁধে তামিলনাড়ুতে ভোট লড়লেও পৃথক নির্বাচনী ইস্তাহারে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধেই দাঁড়াল এআইএডিএমকে। জানিয়ে দিল, বিতর্কিত সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট বা সিএএ বাতিল করতে হবে। এই ব্যাপারে তারা কেন্দ্রীয় সরকারকে চাপ দেবে। ফলে যে নাগরিকত্ব আইন ইস্যু বিজেপি দাপটের সঙ্গে প্রচার এবং লাগু করতে চাইছে, ভোটের আগেই সেই দম্ভ দমিয়ে দিল সহযোগী দলই।
বিষয়টিতে ব্যাপক চাপে পড়ে গিয়েছে বিজেপি (BJP)। কারণ, একে দক্ষিণে দাঁত ফোটানোর ক্ষমতা নেই, তার উপর খোদ শরিক দলই ভোটের আগে দিল ধাক্কা। প্রচারে হম্বিতম্বি থাকলেও দক্ষিণে মোদি-শাহর যে তেমন দাপট নেই, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফলই তার উত্তর। ২৩৪ আসন বিশিষ্ট তামিলনাড়ু বিধানসভায় গতবার ১৮৮টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু ফোটেনি একটিও পদ্ম! খাতা খোলা তো দূর, ১৮০ জনের জামানত জব্দ হয়েছিল বলেই নির্বাচন কমিশনের তথ্যে প্রকাশ।
তাই কোনওক্রমে এবার ‘আম্মা’র দল এআইএডিএমকের শরিক হয়ে নির্বাচনী ময়দানে নেমেছে বিজেপি। বিজেপিকে দেওয়া হয়েছে মাত্র ২০ টি আসন। তাতেই খুশ গেরুয়া শিবির। তবে তারই মধ্যে আচমকা সিএএ ইস্যুতে যে এআইএডিএমকে ধাক্কা দেবে, তা ভোটের আগে বুঝে উঠতে পারেনি বিজেপি। যদিও তামিলনাড়ুর দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সি টি রবি ট্যুইট করে জানিয়েছেন, নাগরিকত্ব আইন ইস্যুতে যে যতই আপত্তিই করুক, কার্যকর হবেই।
এদিকে, বিজেপি বিপাকে পড়তেই সরব হয়েছে কংগ্রেস ও তৃণমূল। কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, গোড়া থেকেই নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতা করেছি। এখন বিজেপি যাকে ধরে দক্ষিণে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে চাইছে, সেই শরিক দলও সিএএ বাতিলের কথা বলছে। কী জবাব দেবে বিজেপি? কোথায় মুখ লুকোবেন মোদি? প্রশ্ন ছুঁড়ে অধীরবাবু বলেন, নাগরিকত্ব আইনের নামে সিএএ আদতে বিজেপির সাম্প্রদায়িক এজেন্ডা পূরণেরই চেষ্টা। বিভেদের রাজনীতি। তামিলনাড়ুতে এবার কংগ্রেস-ডিএমকের জোটই জিতবে বলেও দাবি করেন তিনি।
তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যসভায় দলের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়ান বলেন, দিদি যে ঠিক, এতদিনে বুঝেছে আম্মার দল। নাগরিকত্ব বিল বাতিলের দাবিতে সবার আগে সরব হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন সেই একই কথা বলছে এআইডিএমকে। এতেই স্পষ্ট হচ্ছে, বিজেপির কেউ বন্ধু বা শরিক হতে পারে না। মোদি-শাহর শরিক স্রেফ সিবিআই, ইডি। বাকি কেউ নয়, কটাক্ষের মন্তব্য ডেরেকের।
ওদিকে, সোমবার তামিলনাড়ুর কোলাথুর কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিলেন ডিএমকে সুপ্রিমো এম কে স্ট্যালিন। মনোনয়ন দিলেন অভিনেতা কমল হাসানও। কেরলে দ্বিতীয়বার জয়ের লক্ষ্যে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।