রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

আজ বিশ্বভারতীতে বসন্ত উৎসব, গোপনীয়তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন

March 16, 2021 | 2 min read

চূড়ান্ত গোপনীয়তায় নির্দিষ্ট দিনের আগেই আজ, মঙ্গলবার বসন্ত উৎসব (Basanta Utsav) পালন করতে চলেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। শান্তিনিকেতনের গৌর প্রাঙ্গণে সকালে উৎসবের পাশাপাশি রাতে অনুষ্ঠিত হবে চিত্রাঙ্গদা নৃত্যনাট্য। তবে বসন্ত উৎসবের মতো মেগা ইভেন্টকে নিয়ে কর্তৃপক্ষের এই লুকোচুরিতে হতচকিত বিশ্বভারতীর পড়ুয়া থেকে প্রবীণ আশ্রমিক, স্থানীয় বাসিন্দা সহ পর্যটকরা। তাঁদের অন্ধকারে রেখে এভাবে কেন বসন্ত উৎসব পালন করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সোমবার বিকেলে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এক বৈঠকে আজ, মঙ্গলবার বসন্ত উৎসব পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। তড়িঘড়ি এই সিদ্ধান্তে বিড়ম্বনায় পড়েছেন অংশ নেওয়া পড়ুয়ারা। প্রস্তুতির সামান্যতম সময় না মেলায় তাঁদের মাথায় হাত পড়েছে।

পৌষ উৎসব ও বসন্ত উৎসব বিশ্বভারতীর (Visva Bharati) অন্যতম দু’টি বড় অনুষ্ঠান। বছরভর পড়ুয়ারা এর অপেক্ষায় থাকেন। কিন্তু এবছর অতি গোপনে বসন্ত উৎসব হতে চলায় তাঁরা যথেষ্ট হতাশ। তাঁদের অভিযোগ, গত বছর করোনা অতিমারীর কারণে শেষ মুহূর্তে বসন্ত উৎসব বাতিল হয়। কিন্তু বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এবার কোনও আগাম নোটিস ছাড়াই বসন্ত উৎসব উদযাপন করতে চলেছে। যদিও কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সংগীত ভবনের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি নিলেও কবে উৎসব হবে তা নিয়ে তাঁদেরও অন্ধকারে রাখা হয় বলে অভিযোগ। এমনকী, এই বিষয়ে তাঁদের মুখ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিসের জন্য এত গোপনীয়তা তা নিয়ে সবাই ধন্দে। এমনকী, বিশ্বভারতীর অধ্যাপক থেকে শুরু করে কর্মীমণ্ডলীর একাংশের কাছেও কোনও আগাম খবর ছিল না বলে জানা গিয়েছে। এভাবে বসন্ত উৎসব হওয়ায় ও তাতে অংশ নিতে না পেরে ক্ষুব্ধ প্রবীণ আশ্রমিক থেকে শুরু করে বোলপুরের বাসিন্দা সহ পর্যটকরা। উল্লেখ্য, এবছর আগামী ২৮মার্চ, রবিবার দোল উৎসব।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অধ্যাপক বলেন, করোনা (Covid 19) আবহে ঘরোয়াভাবেই বসন্ত উৎসব উদযাপিত হতে চলেছে। অনুষ্ঠান সূচি সম্পর্কে তিনি বলেন, সোমবার রাত ও মঙ্গলবার সকালে চিরাচরিত বৈতালিকের পর সকাল ৭টায় উপাসনা গৃহে বিশেষ উপাসনা করা হবে। তারপর শান্তিনিকেতনের গৌর প্রাঙ্গণে উদযাপিত হবে বসন্ত উৎসব। শুরুতে চিরাচরিত ‘খোল দ্বার খোল’ গানে নাচের তালে তালে পড়ুয়ারা সমবেত নৃত্যে অংশ নেবেন। এরপর ‘আজি দখিনো দুয়ার খোলা’, ‘সব দিবি কে’, ‘দক্ষিণ হাওয়া জাগো জাগো’ সহ সবশেষে ‘রাঙিয়ে দিয়ে যাও’ এর তালে উৎসবে মাতবেন অংশ নেবে পড়ুয়ারা।

বিশ্বভারতীর এক পড়ুয়া বলেন, প্রায় দু’বছর পর ফের মুখরিত হবে গৌর প্রাঙ্গণ। কিন্তু শান্তিনিকেতনের এই প্রাণের উৎসব কেন এভাবে পালন করা হচ্ছে? কর্তৃপক্ষের কড়া নির্দেশ ছিল, খবর যেন বাইরে না যায়। বিশ্বভারতীতে পড়াশোনার সুবাদে অনেক মা-বাবাই পড়ুয়াদের অনুষ্ঠান চাক্ষুষ করতে চান। কিন্তু চূড়ান্ত গোপনীয়তার জন্য তা হচ্ছে না। ফলে হতাশ অভিভাবকরা।

প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, বিষয়টি কর্তৃপক্ষের সবাইকে জানানো উচিত ছিল। এর আগে কখনও এমনটা হয়নি। আর এক প্রবীণ আশ্রমিক উমা সেন বলেন, বসন্ত উৎসব হচ্ছে আনন্দের কথা। কিন্তু সবাইকে জানালে খুশি হতাম। তবে বর্তমান কর্তৃপক্ষের কাছে এই ঘটনা নতুন নয়। যদিও এনিয়ে বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকারের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#basanta utsav, #Visva Bharati

আরো দেখুন