হারার ভয়েই মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ? জল্পনা বাড়ছে শুভেন্দুর মন্তব্যে
সরগরম নন্দীগ্রাম(Nandigram)। মঙ্গলবার নন্দীগ্রামের সভায় এ এক অচেনা শুভেন্দু(Suvendu Adhikari)। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) উদ্দেশ্যে তাঁর একটি মন্তব্য ঘিরেই চর্চা তুঙ্গে। তবে কি নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয় গ্রাস করছে নন্দীগ্রামের ভূমিপুত্র শুভেন্দু অধিকারীকে? হারার আগেই কী হেরে গেলেন জননেতা? ‘‘মাননীয়া নন্দীগ্রামে প্রার্থী হয়ে আমরা রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে চাইছেন।’’ রাজনৈতিক মহল শুভেন্দুর এদিনের এই বক্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যেই কাটাছেঁড়া শুরু করে দিয়েছে।
গোটা দেশের নজর এখন নন্দীগ্রামে। বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকেই এবার লড়ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভবানীপুর কেন্দ্র ছেড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পূর্ব মেদিনীপুরের এই কেন্দ্রের প্রার্থী। মমতার বিপরীতে নন্দীগ্রামে বিজেপির বাজি ভূমিপুত্র শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু নিজেই এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নন্দীগ্রাম থেকে ভোটে লড়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন। দলও তাঁর ইচ্ছাকে মর্যাদা দিয়েছে। নন্দীগ্রাম থেকে বিজেপির টিকিট পেয়েছেন শিশির-পুত্র শুভেন্দু। এতদিন নন্দীগ্রাম হোক বা রাজ্যের অন্য কোথাও। কখনও হেরে যাওয়ার ভয় গ্রাস করেনি শুভেন্দুকে। তবে আজ শুভেন্দুর বক্তৃতায় ভোটে হেরে যাওয়ার আতঙ্কের ইঙ্গিত স্পষ্ট।
এদিন শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রামে বললেন, ‘‘মাননীয়া নন্দীগ্রামে প্রার্থী হয়ে আমরা রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে চাইছেন।’’ প্রশ্ন হচ্ছে, শুভেন্দু অধিকারী কি ভোটে হেরে যাওয়ার আশঙ্কা করেই এসব বলছেন? শুভেন্দু মমতার প্রতিপক্ষ।
তা হলে তিনি কী করে আশা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করবেন। রাজনৈতিক মহল ইতিমধ্যেই শুভেন্দুর এই মন্তব্য ঘিরে কাটাছেঁড়া শুরু করে দিয়েছেন। দিন কয়েক আগেই একটি প্রকাশ্য সভায় তাঁরই পুরনো দল তৃণমূলকে বিঁধতে গিয়ে ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের সময় নন্দীগ্রামের একটি প্রসঙ্গ টেনে আনেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘২০১৬ সালে বুথ দখল করে জিতেছিল তৃণমূল। আমি সব জানি। এবার আমি নেই। তৃণমূল বুঝবে।’’ শুভেন্দুর সেই বক্তব্যের পাল্টা সমালোনচনা করে উল্টে তাঁকেই কাঠগড়ায় তুলেছিলেন ফিরহাদ হাকিম। শুভেন্দুকে আক্রমণ করে সেদিন ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, ‘‘আমরা কাউকে বুথ দখল করতে বলিনি। ও নিজেই স্বীকার করছে যে ও বুথ দখল করে জিতেছে। ওই আপদ বিদায় হয়ে দলের ভালো হয়েছে।’’
নন্দীগ্রামে শুভেন্দু বিজেপির প্রার্থী হওয়ার পর থেকে তাঁর যে চেনা মেজাজ এতদিন চোখে পড়ছিল, আজ সভায় তাঁর সেই ঝাঁঝালো বক্তৃতা খানিকটা হলেও ফিকে হতে দেখা গেল। কারণটা স্পষ্ট নয়। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছেন, শুভেন্দু মুখে যতই নন্দীগ্রাম থেকে জয়ের প্রত্যাশা করুন না কেন, উল্টোদিকে তাঁর প্রতিপক্ষের আসনে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দীগ্রামের আন্দোলনই ২০১১ সাল তাঁকে বাংলার মসনদ দখলে অনেকটা মাইলেজ দিয়েছিল। তাই রাজ্যের সব আসনের মধ্যে এটিকেই এবার সেফ-সিট বলে মেনেছেন জননেত্রী। তাই নন্দীগ্রাম থেকে তাঁকে হারানো সহজ হবে না জেনেই বোধ হয় বিলম্বিত বোধোদয় শুভেন্দুর।