মালদার দলবদলু জেলা পরিষদ সদস্যরা ফিরতে চান তৃণমূলে
তৃণমূলের(TMC) হাতেই থাকছে মালদহ জেলা পরিষদের(Malda Jela Parishad) কর্তৃত্ব? এমনটাই দাবি করছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। আসলে মালদহ জেলা পরিষদের দলত্যাগী সদস্যরা ফের তৃণমূলে ফিরতে চেয়ে যোগাযোগ শুরু করেছেন বলে দাবি জোড়াফুল শিবিরের। বৃহস্পতিবার মালদহ জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে ওই দাবি করা হয়েছে। সাদা কাগজে সই করিয়ে তৃণমূল সদস্যদের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সম্মতি আদায় করা হয়েছিল বলে তৃণমূলের অভিযোগ। দলত্যাগী চার সদস্য তৃণমূল নেতৃত্বকে ওই বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছেন বলে শাসকদলের দাবি। যদিও দলে যোগ দেওয়া জেলা পরিষদ সদস্যরা বিজেপিতেই আছেন বলে গেরুয়া শিবিরের তরফে দাবি করা হয়েছে। দলত্যাগীদের তৃণমূল ভয় ও প্রলোভন দেখাচ্ছে বলে বিজেপির তরফে পাল্টা দাবি করা হয়েছে। গোটা ঘটনায় জেলার রাজনৈতিক মহলে শোড়গোল পড়ে গিয়েছে।
এ ব্যাপারে মালদহ জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুর(Mausam Noor) বলেন, বিজেপি নেতৃত্ব আমাদের দলের সদস্যদের ভুল বুঝিয়ে নিজেদের দলে টেনেছিল। তাঁদের সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছিল। পরে ওই কাগজে দলত্যাগের বিষয়টি লেখা হয়েছিল। ‘উন্নয়নমূলক কাজের’ জন্য আবেদন করা হবে বলে সদস্যদের জানানো হয়েছিল। ফলে সরল বিশ্বাসে তাঁরা সই করেছিলেন। হরিশ্চন্দ্রপুর, চাঁচল ও গাজোলের চার দলত্যাগী জেলা পরিষদ সদস্য তৃণমূলের ফিরে আসার কথা জানিয়েছেন। তাঁরা আমাদের কাছে লিখিত জমা দিয়েছেন। এরফলে মালদহ জেলা পরিষদে তৃণমূলের ২১ জন সদস্য হবে। বিজেপি ও কংগ্রেসের যথাক্রমে ১৫ এবং একজন সদস্য থাকবেন। জেলা পরিষদের ম্যাজিক ফিগার ১৯। ফলে আগামী দিনে বোর্ড তৃণমূলের হাতেই থাকবে। মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা বর্তমানে বিজেপি নেতা গৌরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, সাদা কাগজে সদস্যদের সই করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা। তৃণমূলের উপর বীতশ্রদ্ধ হয়ে সদস্যরা দল ছেড়েছেন। তাঁরা বিজেপিতে যোগ দিয়ে অনেক ভালো আছেন। প্রলোভন এবং ভয় দেখিয়ে দু-একজনকে তৃণমূল দলে টানার চেষ্টা করছে। তবে তাতে সাময়িক কাজ হলেও ২ মে’র পর ওই সদস্যরা বিজেপির পক্ষেই থাকবেন। বর্তমানে জেলা পরিষদে বিজেপিই সংখ্যাগরিষ্ঠ। সিংহভাগ সদস্যর সমর্থন আমাদের দিকে রয়েছে। সেখানে তৃণমূলের বোর্ড দখলের কোনও প্রশ্নই ওঠে না।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল মালদহ জেলা পরিষদ দখল করে। ৩৭ আসন বিশিষ্ট জেলা পরিষদে তৃণমূল ২৯টি, বিজেপি ছয়টি এবং কংগ্রেস দু’টি আসনে জয়লাভ করে। পরবর্তীকালে বিজেপি এবং কংগ্রেসের একজন করে সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। ফলে ঘাসফুল শিবিরের মোট ৩১ জন সদস্য ছিল। দিন দশেক আগে সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডলের নেতৃত্বে একঝাঁক সদস্য কলকাতায় গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন। ফলে বিজেপি জেলা পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে গিয়েছে বলে দাবি করে। বিধানসভা নির্বাচনের আবহে তৃণমূলের তরফে বিজেপিকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের ব্যাপারে কোনও চ্যালেঞ্জ করা হয়নি। বর্তমানে পরিস্থিতিতে চার-পাঁচজন সদস্যর এদিক-ওদিক করার উপর বোর্ডের ভাগ্য নির্ধারিত হতে পারে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। সেক্ষেত্রে বিজেপিতে যাওয়া সদস্যদের ফের তৃণমূলে ফেরাতে পারলে ঘাসফুল শিবিরের পক্ষে পরিস্থিতি অনুকুল হতে পারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, বিধানসভা নির্বাচনের ফলের উপরেই সবকিছু নির্ভর করছে। রাজ্যে কোন দল সরকার গড়ছে সেদিকেই সদস্যদের বড় অংশ তাকিয়ে।