বাংলায় এবার রেকর্ড আধাসেনা
নতুন করে প্রায় ৭৫ হাজারের বেশি কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে বাংলার নির্বাচনে। তারপরও দাবির শেষ নেই বিরোধী পক্ষের। শেষ পর্যন্ত বাংলার ভোটে এবার আগের সব রেকর্ড ভেঙে লক্ষাধিক আধাসেনা মোতায়েন হতে চলেছে বলেই অনুমান করা হচ্ছে। সিআরপিএফ(CRPF), সিআইএসএফ(CISF), এসএসবি(SSB) এবং বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স(BSF) এই চারটি বাহিনীর সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৭০০ কোম্পানি আসছে বাংলায়(West Bengal)। যার মধ্যে সিংহভাগই সেন্ট্রাল প্যারা মিলিটারি ফোর্স। অথচ তামিলনাড়ুতে ২৩৪ আসনে বাংলার মতো আট দফা নয়, ভোটও হবে মাত্র একদফায়। সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীও যাচ্ছে অপেক্ষায় অনেক কম। ভোট ঘোষণা হতেই পশ্চিমবঙ্গে যেখানে ১২৫ কোম্পানি বাহিনী পাঠানো হয়, সেখানে তামিলনাড়ুতে যায় মাত্র ৪৫ কোম্পানি। অর্থাৎ প্রায় এক তৃতীয়াংশ। কেরলেও নামমাত্র বাহিনী দিয়েই ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিশন(ECI)।
কার্যত বাংলার ভোটকে ঘিরে নজিরবিহীন এক নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে ফেলতে চাইছে নির্বাচন কমিশন। এই ইস্যুতে ইতিমধ্যেই চরম বিতর্কও শুরু হয়ে গিয়েছে। দেখা যাচ্ছে, অসম থেকে কেরল অথবা তামিলনাড়ু, সব রাজ্যকে ছাপিয়ে একমাত্র বাংলাকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম দফায় তামিলনাড়ুতে গিয়েছিল মাত্র ৪৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। শেষ পর্যন্ত ভোটের দিন সেখানে দুশো কোম্পানির বেশি আধাসনা লাগবে বলে মনে হয়না। আর কেরল ভোটের জন্য মাত্র ১৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছে।
বলা বাহুল্য, কেরলে আরএসএস এবং সিপিএমের মধ্যে রাজনৈতিক হিংসা ও হানাহানি দীর্ঘদিনই ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব বছরের পর বছর কেরলের হিংসা নিয়ে কমিশনের কাছে সরব। কিন্তু কেরলে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন স্বাভাবিক স্তরেই রাখা হয়েছে। তামিলনাড়ুতে একটি দফাতেই ভোট শেষ। অথচ সেখানে আসন সংখ্যা ২৩৪। সিআরপিএফ ডিরেক্টর জেনারেল কুলদীপ সিং বলেছেন, ইতিমধ্যেই ভোট শুরুর আগেই ৪৯৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী বাংলায় চলে গিয়েছে। তারপরও বাহিনী আসার বিরাম নেই, যেন যুদ্ধ লেগেছে!
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার প্রথম থেকেই অভিযোগ করেছেন, নির্বাচন কমিশন বিজেপির কথায় চলছে। দেখা যাচ্ছে বিজেপি যে দাবিই করছে, কমিশন তা মেনে নিয়েই পদক্ষেপ করছে। বস্তুত ভোট প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দেখা যাচ্ছে, একের পর এক আইপিএস ও আইএএস অফিসারকে সরিয়ে দিয়েছে কমিশন। এমনকী রাজ্য পুলিশের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় বাহিনীই বুথের দায়িত্বে থাকবে, এমন দাবিও করেছে বিজেপি। আর তারই জেরে দেখা যাচ্ছে, নিরন্তর কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে আসা হচ্ছে বাংলায়।
বৃহস্পতিবার সিআরপিএফের নতুন ডিরেক্টর জেনারেল কুলদীপ সিং বলেছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী নির্বাচনের ডিউটিতে থাকবে রাজ্য পুলিশকে সহায়তা করার জন্য। আধা সামরিক বাহিনী থাকবে তিনটি স্তরে। স্ট্রং রুম প্রহরা, পোলিং বুথের সুরক্ষা এবং কুইক রেসপন্স টিম নিয়েই দায়িত্ব পালন করবে তারা।