রিকশা চালিয়ে গিয়েই মনোনয়ন জমা দিলেন তৃণমূলের প্রার্থী লেখক মনোরঞ্জন ব্যাপারী
পরনে হাফ হাতা জামা। গলায় গামছা। একেবারে মেহনতি মানুষের পোশাকেই তিনি ধরা দিলেন শুক্রবার। চার পাশে কর্মী সমর্থকরা ঘিরে রয়েছেন, আর তিনি ধীরে ধীরে রিকশা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। তিনি ‘ইতিবৃত্তে চণ্ডাল জীবন’-এর লেখক মনোরঞ্জন ব্যাপারী (Monoranjan Byapari)। এ বারের নির্বাচনে বলাগড় থেকে তৃণমূলের (Trinamool) প্রার্থী।
শুক্রবার মনোনয়ন জমা দিতে চুঁচুড়ায় মহকুমা শাসকের দফতরে গিয়েছিলেন মনোরঞ্জন। পিপুলপাতি মোড় থেকে রিকশা চালিয়ে তিনি পৌঁছন মহকুমা শাসকের দফতরে। রিকশার যাত্রী আসনে সাজিয়ে রাখা ছিল তাঁর লেখা বইগুলো। তাঁর মনোনয়ন জমা দেওয়া ঘিরে কর্মী সমর্থকদের মধ্যে উৎসাহের খামতি ছিল না। ঢাকঢোল সহযোগে মনোনয়ন জমা দিতে যান তিনি। ডান হাতের চার আঙুলে জিজীবিষা লেখা আংটিও তুলে দেখান তিনি। এক দিন তাঁর রিকশায় সওয়ার মহাশ্বেতাদেবীকে এই ‘জিজীবিষা’ শব্দের অর্থ জিজ্ঞেস করেই যেন মনোরঞ্জনের অন্য একটি জন্ম হয়।
শুক্রবার মনোরঞ্জন বলেন, “আমি রিকশাওয়ালা। শ্রমিক, কৃষক, মেহনতি মানুষের প্রতিনিধি। তাঁদের মনোবল বাড়াতে চাই। তাঁদের মধ্যে থেকেও কেউ বিধানসভায় যেতে পারে সেটা দেখাতে চাই।”
মনোনয়ন জমা দিতে রিকশাকেই কেন বেছে নিলেন? উত্তরে মনোরঞ্জনের উত্তর, ‘‘পেট্রল, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। ফলে দৈনন্দিন জীবনে প্রবল সমস্যার মুখে সাধারণ মানুষ। আর সেই মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবেই রিকশায় চড়ে আসা।” নাম না করে বিজেপি-র বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন তিনি। বিজেপি-কে ‘বিভেদ সৃষ্টিকারী শক্তি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাঁর কথায়, “একটা শক্তি এসেছে। মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করছে। প্রচুর টাকা দিয়ে সব কিছু কিনতে চাইছে। সেটার প্রতিবাদ করতে হবে।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) যখন বলাগড়ের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করছিলেন, তখন তাঁর চোখেমুখেও ধরা পড়েছিল উৎসাহের ছাপ। একটু থেমে, বিশেষ ভাবে উল্লেখ করেছিলেন মনোরঞ্জনের নাম। প্রার্থী হওয়ার পরই তিনি মমতাকে কৃতজ্ঞতা জানান। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আগামী দিনে দলিত সমাজের হয়ে আওয়াজ তোলার জন্য যুব সমাজের মধ্যে থেকে নেতা তৈরির কাজও করতে চান বলে জানিয়েছিলেন তিনি। আরও বলছিলেন, “বিধানসভার বাইরে এবং ভিতরে সেই সব বঞ্চিত শ্রেণির জন্য লড়াই চালিয়ে যাব। কোনও আপস করব না।”