অভিমানী খণ্ডঘোষের গতবারের বিজেপি প্রার্থী
‘যখন তোমার কেউ ছিল না, ছিলাম শুধু আমি। এখন তোমার সব হয়েছে, পর হয়েছি আমি’। বিজেপির প্রার্থীতালিকা প্রকাশের পর অভিমানে এই গানের কলি গেয়েই প্রতিক্রিয়া দিলেন খণ্ডঘোষের গতবারের বিজেপি (BJP) প্রার্থী অশোক সাঁতরা (Ashok Santra)। প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর প্রকাশ্যে ক্ষোভ না দেখালেও ভোটে তাঁদের মতো একাধিক পুরনো নেতা ও অনুগত কর্মীরা বিজেপির প্রার্থীদের মানতে পারছেন না।
অশোকবাবু বলেন, অন্য দল থেকে বিজেপিতে এলে তবেই বেশি গুরুত্ব পাওয়া যায়। আমি যদি দলবদল করে বিজেপিতে যোগ দিতাম, তাহলে টিকিট পেতাম। যদি অভিনেতা হতাম, তাহলেও টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা থাকত। এখন এঁদেরই একমাত্র বিজেপি পার্টিতে মর্যাদা আছে। ১৯৮৮সাল থেকে দল করে আজ এটাই প্রাপ্য ছিল।
অশোকবাবুর মতো অনেকেই ক্ষোভে ফুঁসছেন। বিজেপির পুরনোরা আগেই সংগঠিত করে ফেলছেন নিজেদের। জেলার বেশিরভাগ আসনে তাঁরা বিজেপির বিরুদ্ধে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করাবেন স্বচ্ছ ভাবমূর্তির আদি নেতাদের। তাঁরা বলেন, আমরা জানতাম, বিজেপির ঘোষিত প্রার্থীতালিকা নিষ্কলঙ্ক হবে না। এখানে টাকার বিনিময়ে প্রার্থী হওয়ার রেওয়াজ চলছে। প্রকাশ্যে বিক্ষোভ দেখানোর থেকে আমাদের প্রতিবাদ হবে দুর্নীতিগ্রস্ত বিজেপি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্দল হিসেবে লড়াই করা। যে প্রাক্তন জেলা সদর সভাপতি সন্দীপ নন্দীকে নিয়ে ক্ষোভ ছিল, তাঁকেই দল বর্ধমান দক্ষিণের প্রার্থী করল। এবার আমাদের নেতা স্মৃতিকান্ত মণ্ডল ওঁর বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। জেলা সদরের ন’টি আসনেই প্রার্থী দেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে স্মৃতিকান্তবাবু বলেন, দল আমাকে আগেই বহিষ্কার করে দিয়েছে। তাই আমি দাঁড়ালেও সেটা দল বিরোধী কাজ হবে না। বিজেপি আসলে জিততে চায় না। তাই গোটা জেলাব্যাপী এমন কিছু প্রার্থী বাছাই করেছে, যাঁদের থেকে কলাগাছ দাঁড়ালে ভোট বেশি পেত। তাই বেশিরভাগ জায়গায় আমরা, আমাদের নেতাদের নির্দলে দাঁড় করাব।
দলের অন্দরেই চোরাস্রোত বইছে। জেলা বিজেপি সূত্রে খবর, দলের সঙ্গে থেকেই সবোতাজ করতে পারেন অনেক পদাধিকারী নেতাও। তাই প্রকাশ্যে বিক্ষোভ না দেখালেও ঘুঁটি সাজাচ্ছেন অনেকেই। পূর্ব বর্ধমানের বহু কেন্দ্রেই আদিরা লড়াইয়ে নামলে,তাঁদের নৈতিক সমর্থন করবেন জেলার অনেক নেতা। যদিও দলের অন্দরে এই ক্ষোভের কথা উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপির জেলা (সদর) সভাপতি অভিজিৎ তা। তিনি বলেন, জেলার প্রত্যেকটি কেন্দ্রে অনেক চিন্তাভাবনা করে প্রার্থী নির্বাচন যথাযথ হয়েছে। বিজেপির সকল কর্মী এক হয়ে প্রার্থীদের জয়ের জন্য লড়াই করবেন। যে বা যাঁরা এই ক্ষোভের কথা বলছেন, তাঁরা হয়তো দলের কেউ নন। তাই ক্ষোভের কথা বলে মাইলেজ নেওয়ার চেষ্টা করছেন। প্রার্থী নিয়ে পার্টির কর্মীরা খুবই খুশি ও উৎসাহিত।