এবার বীরভূম! পছন্দের প্রার্থী না পেয়ে আন্দোলনের হুমকি বিজেপি কর্মীদের
বিধানসভা ভোটের প্রার্থী তালিকা নিয়ে পদ্ম শিবিরে অস্বস্তি ক্রমশই বাড়ছে। বীরভূম জেলায় সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে। ইতিমধ্যে সাঁইথিয়ায় দলের মণ্ডল ও বুথস্তরের একশোর বেশি পদাধিকারী ভোট যুদ্ধে নিষ্ক্রিয় থাকার কথা সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন। দুবরাজপুরে টায়ার জ্বালিয়ে প্রার্থী প্রত্যাহারের দাবি তুলেছেন কর্মীরা। আবার নলহাটিতে জেলার শীর্ষস্তরের নেতা প্রার্থী হতে না পেরে ফেসবুক লাইভ করে ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন। এবার প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে মেল করলেন মুরারই কেন্দ্রের বিজেপির (BJP) নেতা কর্মীদের একাংশ। তাঁদের দাবি মানা না হলে দ্রুত আন্দোলনে নামা হবে বলে জানিয়েছেন দলের জেলা কমিটির সদস্য সুধীররঞ্জন দাসগোস্বামী। এদিন লাভপুরের এক বিজেপি নেতা তথা যোগগুরু টিকিট না পেয়ে হতাশ হয়ে তৃণমূলে যোগ দেন। তৃণমূল প্রার্থী অভিজিৎ সিংহর সঙ্গে তিনি প্রচারও করেন। যা নিয়ে অস্বস্তি বেড়েছে গেরুয়া শিবিরে। বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, যাঁরা প্রার্থী হতে ইচ্ছুক, তাঁদের আবেদনের জন্য রাজ্য পার্টি অফিসে বাক্স রাখা হয়েছিল। সেখানে নাম স্ক্রুটিনি করে ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে জেলার ১১টি কেন্দ্রের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। অনেকে দলের জন্য জেল খেটেছেন, তৃণমূলের অত্যাচারের শিকার হয়েছেন, তাঁরা প্রার্থী হতে পারেননি বলে দুঃখ ও কষ্ট হচ্ছে। তবে আমরা আশাবাদী তাঁরা সমস্ত কিছু ভুলে প্রার্থীদের হয়ে লড়াইয়ের ময়দানে নামবেন।
এদিন জেলার ১১টি কেন্দ্রের প্রার্থীকে নিয়ে তারাপীঠে বৈঠকের ডাক দেন জেলা সভাপতি। সেখানে বোলপুর এবং নলহাটি কেন্দ্রের প্রার্থী বাদে সকলেই হাজির হয়েছিলেন। এদিন তারা মায়ের কাছে সকল প্রার্থী পুজো দিয়ে বেরসরকারি লজে বৈঠকে যোগ দেন। সেখানে সংবাদমাধ্যমের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। প্রায় এক ঘণ্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। সূত্রের খবর, বৈঠকে প্রার্থী অসন্তোষের জেরে কর্মীদের ক্ষোভের কথা গুরুত্ব পেয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রার্থীদেরই নিজ নিজ কেন্দ্রের কর্মীদের ক্ষোভ বিক্ষোভ মেটানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যদিও সেই কাজ কতটা সহজ হবে, তা নিয়ে দলের একাংশের মধ্যেই প্রশ্ন রয়েছে। এদিন বিকেলে মুরারই বিধানসভার চার সাধারণ সম্পাদক, মণ্ডল ও বুথ শক্তিপ্রমুখ ও জেলা কমিটির দুই সদস্য বৈঠকে বসেন। সেখানে ঠিক হয়, ঘোষিত দেবাশিস রায়কে তাঁরা প্রার্থী হিসেবে মেনে নেবেন না। তাঁরা কর্মী সমর্থকদের নিয়ে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তৃণমূল প্রার্থী বলেন, বিজেপি যে ছলচাতুরি করে ভোট বৈতরণী পার হতে চাইছে, তা এই ঘটনাতেই স্পষ্ট হয়েছে। সুশীলবাবু আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ইতালি, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড প্রভৃতি দেশে যোগগুরু হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছেন। তাঁকে বিজেপি ব্যবহার করতে পারল না। তিনি তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় আমরা খুশি। এদিন তিনি আমার সঙ্গে প্রচারও করেন। যদিও বিজেপি নেতা দেবাশিস ওঝা বলেন, কেবলমাত্র প্রার্থী হওয়ার লোভে উনি বিজেপিতে এসেছিলেন। কিন্তু, বিজেপি সংগঠন বোঝে সদস্য নয়। উনি বিজেপি ছেড়ে যাওয়ায় দলের কোনও ক্ষতি হবে না।