পরিবার-বিরোধী বিজেপির অন্দরেই পরিবারতন্ত্রের রমরমা!
ভোটের আগে উত্তাপ চড়ছে রাজ্যের। সব দলই একে অপরকে আক্রমণের খেলায় নেমেছে। লড়াই মূলত শাসক দল তৃণমূল (Trinamool) এবং বিরোধী দল বিজেপির মধ্যে। কেউ কাউকে আক্রমণ করার কোনরকম সুযোগ ছাড়ছে না। বিজেপি মূলত যে ইস্যুটি তুলে তৃণমূলকে আক্রমণ করে তা হল পরিবারতন্ত্র। যেহেতু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে, তাই বার বারই তৃণমূলকে ‘প্রাইভেট লিমিটেড’ কটাক্ষ করে বঙ্গ বিজেপির (BJP) নেতারা।
কিন্তু পরিবার-বিরোধী বিজেপির অন্দরেই পরিবারতন্ত্রের রমরমা নিয়ে মুখে কুলুপ নেতাদের। বিজেপি দলটিও কোনও অংশে ‘প্রাইভেট লিমিটেড’- এর কম না। এবং এই ইস্যুটি সুকৌশলে বার বার এড়িয়ে যান তারা। বঙ্গ বিজেপিতে পরিবারতন্ত্রের ছড়াছড়ি। ধরা যাক মুকুল রায়ের কথা। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া এই নেতার সুপুত্র বিজপুরের বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়। এবারেও বিজেপির টিকিট পেয়েছন শুভ্রাংশু।
বিজপুর যে লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত, সেই ব্যারাকপুরের বর্তমান সাংসদ অর্জুন সিংহ (Arjun Singh)। ব্যারাকপুর যেন তার বংশগত জমিদারি। আগে ভাটপাড়ার বিধায়ক ছিলেন অর্জুন। সাংসদ হওয়ার পর পদত্যাগ করেন। আর নিজের ছেড়ে যাওয়া আসনে ‘অভিষেক’ হয় ওনারই পুত্র পবন সিংহের। এছাড়া, নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিংহও অর্জুন সিংহের আত্মীয়। তিনি অর্জুনের ভগ্নীপতি।
পরিবারতন্ত্রের কথা বললে, পূর্ব মেদিনীপুরের অধিকারী পরিবারের কথা তো বলতেই হয়। শুভেন্দু অধিকারীর রাজনীতিতে আসা তার বাবা শিশির অধিকারীর হাত ধরে। ধীরে ধীরে তৃণমূলের সংগঠনে উত্থান, লোকসভা সাংসদ হওয়া, তারপর ২০১৬ সালে রাজ্যের মন্ত্রী। অন্যদিকে, শিশিরবাবুও ২০০৯ সালে সাংসদ হওয়ার পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রীত্ব পেয়েছিলেন। শুভেন্দুর ছোট ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী ছিলেন বিধায়ক। শুভেন্দু সাংসদ হিসেবে পদত্যাগ করলে সেই আসনে উনি জয়ী হন। অন্যদিকে তাঁর আরেক ভাই সৌমেন্দু অধিকারী কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান।
বিজেপির প্রার্থী তালিকা একটু ভালোভাবে খুঁটিয়ে দেখলেই অনেক রাজনৈতিক নেতার স্ত্রী, সন্তান, জ্ঞাতিগুষ্টির নাম পাবেন। সেই আলোচনা তোলা থাক অন্য কোনও দিনের জন্য। অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন, শুধুই কি বিজেপিতে পরিবারতন্ত্র আছে? অবশ্যই না। কিন্তু নিজেদের পরিবার-বিরোধী প্রতিপন্ন করতে চায় একটাই দল – বিজেপি। তাই, সত্যটাও মানুষের সামনে আসা উচিত।