কোভিশিল্ডের দু’টি ডোজের ব্যবধান ৬-৮ সপ্তাহ করার নিদান কেন্দ্রের
দু’টি ডোজের মধ্যে সময়ের ব্যবধান বাড়লে কাজ দিচ্ছে অপেক্ষাকৃত বেশি। তাই করোনার(COVID19) সংক্রমণ রুখতে ২৮ দিনের পরিবর্তে এখন থেকে ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে ‘কোভিশিল্ড’(CoviShield) টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া যাবে। বিদেশের গবেষণার পাশাপাশি ভ্যাকসিন(Vaccine) সংক্রান্ত কেন্দ্রের দুই বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ মেনে করোনার টিকাকরণে এই সামান্য বদল আনল স্বাস্থ্যমন্ত্রক। রাজ্যগুলিকে চিঠি দিয়ে সেই কথা জানিয়েও দিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ। যদিও এই বদল শুধুমাত্র সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি কোভিশিল্ডের ক্ষেত্রেই। ভারত বায়োটেকের(Bharat Biotech) তৈরি ‘কোভ্যাকসিনে’র ক্ষেত্রে নয়। সেখানে ২৯ দিনের মাথাতেই টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে।
তবে সময়ের অন্তর বাড়লেও কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ নিতে যেন কোনওভাবেই আট সপ্তাহ বা ৫৬ দিন পেরিয়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে বলে সতর্ক করেছে কেন্দ্র। উল্লেখ্য, ব্রাজিল, ব্রিটেন, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন (যার ভারতীয় রূপ কোভিশিল্ড) ১২ সপ্তাহ বা তিন মাস পরে নিলেও সঠিকভাবে কাজ করছে বলেই সম্প্রতি মেডিকেল গবেষণার প্রসিদ্ধ পত্রিকা ‘ল্যানসেটে’ প্রকাশ পেয়েছে।
এদিকে, ভ্যাকসিন সংক্রান্ত কেন্দ্রের দুই বিশেষজ্ঞ কমিটি বিশ্লেষণ বৈঠকে বসে দেখেছে ছয় থেকে আট সপ্তাহের মধ্যে কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ নিলে তা ভালোই কাজ করছে। সেই মতো নতুন নিয়ম চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাজ্যগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোভিশিল্ডের ক্ষেত্রে বর্তমানে যে চার থেকে ছ’ সপ্তাহের তফাতে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার কর্মসূচি চলছে, তাতে সামান্য বদল হবে। দুটি ডোজের মধ্যে সময়ের অন্তর এখন থেকে চার থেকে আট সপ্তাহ করার সিদ্ধান্ত নিল স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ টি রাজ্যে করোনা আক্রান্তের মৃত্যুর কোনও খবর না থাকার পাশাপাশি মৃত্যুর হার ক্রমশ নিম্নমুখী (১.৩৭ শতাংশ) হলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রকের চোখ থেকে ঘুম উধাও হয়ে গিয়েছে। কারণ, লাগাতার বেড়েই চলেছে সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৪ হাজার ৯৫১ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে সোমবার বিবৃতিতে জানিয়েছে কেন্দ্র। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নিজের রাজ্য গুজরাত সহ মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা, কর্ণাটকের মতো চার বিজেপি শাসিত রাজ্যে কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না করোনা। গুজরাতে গত পাঁচদিনে প্রতিদিন ১ হাজারেরও বেশি মানুষ সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। একই হাল কর্ণাটকেও। হরিয়ানায় রোজ গড়ে বাড়ছে ৬০০ থেকে ৮০০ সংক্রমণ। তাই কেন্দ্রের কপালে চিন্তার ভাঁজ। তারই মধ্যে সোমবার উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তিরথ সিং রাওয়াত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁরই রাজ্যের হরিদ্বারে এবার মহাকুম্ভ। যেখানে অমৃত লাভের আশায় শাহি স্নানে আগামী ১২, ১৪ এবং ২৭ এপ্রিল লক্ষ লক্ষ পূণ্যার্থী অংশ নেবেন। সেই মতোই উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।