বাড়ছে করোনা, প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ সব হাসপাতালকে
ফের করোনা(COVID19) যুদ্ধে ঝাঁপানোর জন্য সব কোভিড হাসপাতালকে(Covid Hospital) সতর্ক করল রাজ্য সরকার(Govt Of West Bengal)। অন্যতম স্বাস্থ্যসচিব সৌমিত্র মোহন রাজ্যের সবক’টি মেডিক্যাল কলেজের সুপার তথা এমএসভিপি এবং সব জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের উদ্দেশে এই বার্তা দিয়েছেন। এই নির্দেশকে তাঁরা যেন ‘জরুরি’ বলে মনে করেন, সেকথাও বলা হয়েছে সোমবার জারি করা ওই সরকারি নির্দেশে।
রাজ্যে ক্রমেই বেড়ে চলা করোনা মোকাবিলায় পাঁচ ধরনের বিষয় চটজলদি ঝালিয়ে নিতে বলা হয়েছে নির্দেশনামায়। সেগুলি হল—এক, করোনা মোকাবিলার সমস্ত জরুরি যন্ত্রপাতি, মেডিক্যাল গ্যাস পাইপলাইন সিস্টেমের বর্তমান অবস্থা ঠিকঠাক আছে কি না। প্রয়োজন পড়লে দ্রুত মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুই, প্রতিটি করোনা হাসপাতালে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে কি না, সেই স্টক খতিয়ে দেখতে হবে। প্রয়োজন পড়লে আগের মতোই সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সিলিন্ডার কিনতে হবে কর্তৃপক্ষকে। তিন, মাস্ক-পিপিই সহ করোনা যুদ্ধের অন্যান্য সরঞ্জাম কতটা মজুত আছে, সেটাও দেখে নেওয়া। চার, হাতের কাছে চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী কত আছেন, সেই হিসেব রাখা। দরকার পড়লে তাঁদের নিযুক্ত করা হবে। পাঁচ, রোগীদের ডায়েট, হাসপাতালের বর্জ্য নিষ্কাষণ ব্যবস্থা, সাফাইয়ের কাজ সহ জরুরি ব্যবস্থাগুলির বর্তমানে কী অবস্থা, তার হালহকিকতও দেখে নেওয়ার জন্য নির্দেশ জারি হয়েছে।
বর্তমানে রাজ্যে ৪৬টি করোনা হাসপাতাল আছে। ৩৫টি সরকারি ও ১১টি প্রাইভেট। পাঁচ মাস আগেও, করোনার প্রকোপের মধ্যবর্তী সময়ে পরিস্থিতি অনুযায়ী করোনা হাসপাতালের সংখ্যা ছিল এর প্রায় দ্বিগুণ। উদাহরণস্বরূপ, গত বছর ২২ অক্টোবর রাজ্যে ছিল ৯৩টি করোনা হাসপাতাল। ভর্তি ছিল ৩৭.৭১ শতাংশ শয্যা। ঠিক এক মাস পর নভেম্বরে করোনা হাসপাতালের সংখ্যা আরও বেড়ে হয় ১০১। কিন্তু রোগীর সংখ্যা কমে হয় ২৮.৮৯ শতাংশ। ২২ ডিসেম্বর রাজ্যে করোনা হাসপাতালের সংখ্যা ছিল ১০২। ভর্তি ছিলেন মাত্র ১৫.৮৬ শতাংশ রোগী। এক মাস পর ২২ জানুয়ারির হিসেব অনুযায়ীও রাজ্যে ছিল ১০১টি করোনা হাসপাতাল। কিন্তু রোগীর উপস্থিতির হার আরও কমে মাত্র ৫.৮০ শতাংশে দাঁড়ায়। এরপর পরিস্থিতি বিবেচনা করে অন্যান্য চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিক করতে কোভিড হাসপাতালের সংখ্যা অনেকটাই কমিয়ে দেয় রাজ্য। ২২ ফেব্রুয়ারি রাজ্যে করোনা হাসপাতাল কমে হয় ৬৫টি। আর ওইদিন সেখানে শয্যার অনুপাতে রোগী ছিলেন মাত্র ২.৪৮ শতাংশ।
১ মার্চ থেকে ক্রমেই পরিস্থিতি ‘ইউ টার্ন’ নিতে শুরু করে দেশজুড়ে। পাহাড়চূড়া থেকে পাদদেশের দিকে নামতে থাকা করোনাগ্রাফ ফের ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে। গত বছরের পুনরাবৃত্তির দিয়ে শুরু করে পরিসংখ্যান। সোমবার ২২ মার্চের সরকারি হিসেবই বলছে, শয্যা অনুপাতে করোনা হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা গত এক মাসে দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। ২২ ফেব্রুয়ারিতে যেখানে ছিল ২.৪৮ শতাংশ, ২২ মার্চ তা হয়ে দাঁড়িয়েছে ৫.২১ শতাংশ। পদস্থ এক আধিকারিক জানিয়েছেন, যখন যেমন পরিস্থিতি হবে, আমরাও সেইমতো হাসপাতালের সংখ্যা বা বেড বাড়াব। অহেতুক উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই।এই মুহূর্তে