দেশ বিভাগে ফিরে যান

বাংলায় নাগরিকত্বর প্রতিশ্রুতি, অসমে সিএএ ইস্যুতেই নীরব বিজেপি

March 24, 2021 | 2 min read

পরিস্থিতি এক। প্রেক্ষাপটও। অথচ অবস্থান পৃথক। বাংলায় ক্ষমতায় এসেই সিএএ(CAA) চালু করা হবে বলে নির্বাচনী ইস্তাহারে প্রকাশ করেছে বিজেপি(BJP)। ঘোষণা মঞ্চে সে কথা কবুল করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও(Amit Shah)। সেটা ছিল রবিবার। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রকাশিত বাংলা-লাগোয়া রাজ্য অসমের (Assam) নির্বাচনী ইস্তাহারে সম্পূর্ণ উল্টো এজেন্ডা। মঙ্গলবার অসমের ইস্তাহার প্রকাশ্যে এল, কিন্তু তাতে সিএএ চালু করা নিয়ে কোনও নিশ্চিত বাক্যই নেই।

অথচ দু‌ই রাজ্যই বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ও অনুপ্রবেশ ইস্যুতে একইভাবে সরগরম। আর কেন্দ্রীয় আইন একটি রাজ্যে চালু হবে, অন্য রাজ্যে হবে না—সেটাও সম্ভব নয়। এদিন অসমে যে নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশিত হল, সেখানে বিজেপি ১০ দফার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সংকল্প ঘোষণা করেছে। সেই সংকল্পের তালিকায় সিএএ নেই। শুধু জানানো হয়েছে, আরও উন্নত এনআরসি চালু করা হবে। এটাও বিজেপির কাছে যথেষ্ট অস্বস্তিকর। কারণ, অসমের ক্ষেত্রে  কেন্দ্র এবং রাজ্যে বিজেপির সরকার। অর্থাৎ ডবল ইঞ্জিন। কিন্তু ইস্তাহারে আরও উন্নত এনআরসি চালু করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার অর্থই হল বিজেপির স্বীকারোক্তি—অসমের বর্তমান এনআরসি ত্রুটিপূর্ণ। যা বিরোধীদের প্রধান অভিযোগ। উন্নত এনআরসি নিয়ে আশ্বাস দিয়েই বিজেপি অসমের নাগরিকত্ব ইস্যুর ক্ষেত্রে দায় সেরেছে। কিন্তু দলের ১০ দফা সংকল্পপত্রে নাগরিকত্ব আইন সিএএ নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করা হল না কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে বিজেপি সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা বলেছেন, সময় এলেই সিএএ চালু করা হবে। কবে হবে সময়? নাড্ডা সেটা স্পষ্ট জানাননি।

অথচ বাংলার ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রবিবারই ঘোষণা করেছেন, ক্ষমতায় এলে প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকেই সিএএ মঞ্জুর করে দেওয়া হবে। অসম এবং বাংলা, দুই রাজ্যই বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী। দুই রাজ্যেই অনুপ্রবেশ সমস্যা অন্যতম রাজনৈতিক ও সামাজিক ইস্যু। তাহলে বাংলায় সিএএ নিয়ে নিশ্চিত ঘোষণা, অথচ অসমে নীরবতা… বিজেপির এই দু’রকম অবস্থানের কারণ কী? এই প্রশ্ন কিন্তু উঠেছে। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, সিএএ নিয়ে অসমে চরম আপত্তি ও প্রতিবাদ চলছে ২০১৯ সাল থেকেই।

সংসদে আইন চালু হওয়ার পর সেই ক্ষোভ আরও বেড়েছে। অন্যদিকে অসমে উচ্চকণ্ঠে প্রচারের মাধ্যমে এনআরসি চালুর পর দেখা যাচ্ছে, তালিকা থেকে লক্ষ লক্ষ হিন্দুই বাদ চলে গিয়েছেন। নাম নেই বহু প্রকৃত নাগরিকেরই। যা নিয়ে চলছে চরম ক্ষোভ-বিক্ষোভ। সেই কারণেই অসমে পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার পর আর বিজেপি সিএএ নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করছে না। বস্তুত সিএএ ২০১৯ সালের আইন হলেও এখনও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রুলই তৈরি করতে পারেনি। আর যতক্ষণ না রুল গঠন হয়, সেই আইন কার্যকর করা যায় না। এই চর্চা ছাপিয়ে এই মুহূর্তের হাতেগরম প্রশ্ন কিন্তু অন্য—দু‌ই রাজ্যে দুই অবস্থান কেন? আর তাই আরও একবার রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রে বিজেপির ইস্তাহার।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Bengal, #assam, #bjp, #CAA

আরো দেখুন