অভিষেকের রোড-শোয় জনজোয়ারে ভাসল কাঁথি
মঙ্গলবার কাঁথিতে(Kathi) রাজ্য তৃণমূল যুব কংগ্রেস(TMYC) সভাপতি তথা সংসদ সদস্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Abhishek Banerjee) রোড-শোকে কেন্দ্র করে জনজোয়ারে ভাসল কাঁথি। এদিন দক্ষিণ কাঁথির প্রার্থী জ্যোতির্ময় কর(Jyotirmoy Kar) এবং উত্তর কাঁথির প্রার্থী তরুণ জানার(Tarun Jana) সমর্থনে রোড-শো(Road Show) করা হয়। বর্ণাঢ্য এই রোড-শোয় কয়েক হাজার মানুষ শামিল হন। পাশাপাশি এদিন পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরের আনন্দপুর হাইস্কুল মাঠে তৃণমূল(TMC) প্রার্থী শিউলি সাহার(Seuli Saha) সমর্থনে এবং ঘাটালের রামজীবনপুরে বাবুলাল বিদ্যাভবন মাঠে চন্দ্রকোণার তৃণমূল প্রার্থী অরূপ ধাড়ার(Arup Dhara) সমর্থনে জনসভায় বক্তব্য রাখেন অভিষেক। জনসভায় উপচে পড়া ভিড় ছিল। প্রতিটি সভায় বিজেপির ইস্তাহারের তীব্র সমালোচনা করেন অভিষেক।
এদিন বিকেলে কাঁথিতে অভিষেক হুডখোলা গাড়িতে রোড-শো করেন। চৌরঙ্গি মোড়, ক্যানেলপাড়, খড়্গপুর বাইপাস হয়ে সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত রোড-শো যতই এগিয়েছে মানুষের ভিড় তত বেড়েছে। অনেকে ফুল ছুড়ে অভ্যর্থনা জানান। অভিষেকও শুভেচ্ছা জানান। রোড-শোর পর সন্ধ্যায় সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে সভায় অভিষেক বলেন, রোড-শো’য়ে এত মানুষের ভিড় হয়েছে যে কোথায় মাথা আর কোথায় লেজ বোঝাই যাচ্ছে না। এটা প্রমাণ করছে মানুষ শুধু তৃণমূলকে সমর্থন জানাতে কিংবা ক্ষমতা প্রর্দশনের জন্য পা মেলাতে আসেননি। আগামীদিনে কাঁথির ‘মীরজাফর অ্যান্ড কোম্পানির’ জামানত বাজেয়াপ্ত করার জন্যই এসেছেন। মানুষের যা ভালোবাসা লক্ষ্য করলাম তা অবর্ণনীয়। বিজেপির পতাকা টাঙানো বাড়ি থেকেও অনেকে আর্শীবাদ করছেন। কারণ দশকের পর দশক ধরে একটি পরিবারের স্তাবকতা করে কাঁথির মানুষকে বেঁচে থাকতে হতো। সেই স্তাবকতার দিন শেষ। আজ ২৩মার্চ। মীরজাফর, বিশ্বাসঘাতকদের বাংলা এবং মেদিনীপুর থেকে বিতাড়িত করার খুঁটিপুজো মানুষ করেই দিয়েছেন। আগামী ২মে ফল ঘোষণা হবে আর তাঁদের বিসর্জন হবে।
এর আগে রামজীবনপুরের জনসভায় অভিষেক বলেন, গত ১০বছর এই রাজ্যে যা উন্নয়ন হয়েছে,তা ছিল ট্রেলার। তৃণমূল সরকার তৃতীয়বার সরকারে বসার পর যা উন্নয়ন হবে তা দেখে চমকে উঠবে সারা দেশ। অভিষেক বলেন, এবার বলুন আপনারা কোনটা চান। থালাভর্তি রেশন, না গালভরা ভাষণ? ওরা(বিজেপি) বারবার বলছে উম-পুনে রাজ্যকে এক হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। এটা চূড়ান্তই হাস্যকর। তিনি বলেন, বিজেপি পাঁচ বছরে এরাজ্য থেকে পাঁচ লক্ষ ২৫হাজার কোটি টাকা নিয়ে গিয়েছে। তার পরিবর্তে এক হাজার কোটি টাকা! যা নিয়ে গিয়েছে তার তুলনায় কিছুই নয়। অভিষেক বলেন, বিজেপির স্বভাব কুৎসা, আর আমাদের স্বভাব উন্নয়ন। ওরা যত কুৎসা করবে ততই গর্তে ঢুকবে। বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতামন্ত্রী এরাজ্যে ডেলি প্যাসেঞ্জারি করছেন। আসলে ওরা শ্যামাপোকার মতো। ভোটের সময় কয়েকদিনের জন্য দেখা যায়। পরে আর দেখা যায় না। রাজ্য চালাতে হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই একমাত্র ভরসা। গদ্দাররা নয়।
এদিন ঘাটালে অভিষেকের সভা ঘিরে সকাল থেকেই সাধারণ ভোটার ও কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ ছিল তুঙ্গে। দুপুর ২টোয় সভা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেশ কিছুটা দেরিতে শুরু হয়। কিন্তু তাতেও দলের নেতা-কর্মীদের উৎসাহের ঘাটতি ছিল না। দুপুর ১টা থেকেই দলীয় নেতা-কর্মীরা ঠা-ঠা রোদে অভিষেকের ভাষণ শোনার জন্য প্রতীক্ষায় ছিলেন। তাছাড়া ওই জনসভাটি চন্দ্রকোণা বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থীর জন্য হলেও পার্শ্ববর্তী হুগলি জেলা থেকেও উৎসাহী বহু নেতা-কর্মীদের আসতে দেখা গিয়েছে।