দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

মুখ্যমন্ত্রীর জন্য ‘খেলা হবে’ স্মারক বানালেন ডোকরা শিল্পী

March 24, 2021 | 2 min read

মুখ্যমন্ত্রীর জন্য ‘খেলা হবে’ স্মারক বানালেন ডোকরা শিল্পী

‘খেলা হবে’(Khela Hobe)। বিধানসভা ভোট ঘোষণার আগে কয়েকমাস ধরেই বঙ্গ রাজনীতিতে নতুন এই শব্দবন্ধ মুখে-মুখে ঘুরছে। স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর গলাতেও প্রত্যেক নির্বাচনী জনসভায় এই স্লোগান শোনা যাচ্ছে। কীসের খেলা হবে! কীভাবে খেলা হবে! তা নিয়ে মানুষের মনে কৌতূহলের অন্ত নেই। এমন অবস্থায় ‘খেলা হবে’-র স্মারকই বানিয়ে ফেললেন বাঁকুড়ার বিকনায় শিল্পডাঙার ডোকরা(Dokra) শিল্পী হরেন্দ্রনাথ রানা(Harendranath Rana)। সেই স্মারক আজ, বুধবার বাঁকুড়ার সভায় তৃণমূল(TMC) নেত্রীর হাতে উপহার স্বরূপ তুলে দেবে তৃণমূল। 


বাঁকুড়া(Bankura) শহর লাগোয়া ওন্দা(Onda) বিধানসভার অধীন বিকনা গ্রামে প্রায় ২০০ জন ডোকরা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। বংশ পরম্পরায় সেখানকার শিল্পীরা এই কাজ করে আসছেন। বিভিন্ন দেব-দেবী, সাঁওতাল রমণী বা বাড়িতে সাজানোর শো-পিস তৈরি করেন শিল্পীরা। বিভিন্ন মেলা ছাড়াও ওই গ্রাম থেকেও কিনে নিয়ে যান অনেকে। প্রচারের দৌলতে ডোকরার সামগ্রীর কদর ছড়িয়েছ বিদেশেও। এবার সেই বিখ্যাত ডোকরা দিয়ে তৈরি হয়েছে আস্ত ক্রিকেট খেলার মাঠ। খেলোয়াড়ের পাশাপাশি আম্পায়ারও তাতে আছে। জোড়াফুলের প্রতীক সাজিয়ে তৈরি করা হয়েছে ওই স্মারক। 
বাঁকুড়ায় প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় ১২টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। তাই প্রায় বিধানসভা ধরে-ধরে তৃণমূল সুপ্রিমো প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচার করছেন। দু’দফায় তিনি নির্বাচনী জনসভা করে ফেলেছেন। আজ, বুধবার ফের তিনি বাঁকুড়া সফরে আসছেন। বিষ্ণুপুর, ওন্দা ও বাঁকুড়া শহরে তাঁর জনসভা হওয়ার কথা রয়েছে। তাই দলনেত্রীর সভার সম্ভাবনা নিশ্চিত হওয়ার পরই তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভানেত্রী তথা বাঁকুড়া পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন অলকা সেন মজুমদার বিকনা গ্রামে গিয়ে ‘খেলা হবে’-র স্মারক তৈরির অর্ডার দিয়ে আসেন। সাধারণত প্রিয় নেত্রী জেলায় এলে তাঁকে বরণ করেন নেতারা। এবার বাঁকুড়ার সভায় তাই তৃণমূল নেত্রীকে ‘খেলা হবে’-র স্মারক উপহার দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। 


কিন্তু উপহার হিসাবে ‘খেলা হবে’-র স্মারক কেন? অলকাদেবী বলেন, বর্তমানে খেলা হবে স্লোগান বাজারে হিট। দিদি নিজেও এই স্লোগান দিচ্ছেন। তাই তাঁর সঙ্গে আমরা যে খেলার সঙ্গী হিসাবে রয়েছি তার ভরসা দিতেই ডোকরার ‘খেলা হবে’-র স্মারক দেব। তাছাড়া দিদি ডোকরার সামগ্রী ভালোও বাসেন।    
পিতল, মাটি দিয়ে তৈরি করা ডোকরার ওই স্মারকে রয়েছে ব্যাটসম্যান, বোলার, উইকেটকিপার, রানার ও আম্পায়ারের মূর্তি। মাঠের চারপাশে চারটি ফ্লাডলাইট ও দু’পাশে তৃণমূলের জোড়াফুলের প্রতীক। মাঠে অন্য প্লোয়ার তৈরি করতে আরও সময় লাগত। চারদিনের মাথায় তড়িঘড়ি করে স্মারকটি বানিয়েছেন ৪৮ বছরের হরেন্দ্রনাথবাবু। 


তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তিনবার দেখা হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। তাই যখন শুনলাম আমার তৈরি ডোকরা সামগ্রী তাঁকে উপহার দেওয়া হবে তখনই অর্ডার নিয়ে দ্রুতগতিতে কাজ শুরু করেছি। 
ওই শিল্পীর দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ২০১৫ সালে দিল্লী এয়ারপোর্টে দেখা হয়েছিল। তিনি আমাদের সঙ্গে ছবি তুলে, খেয়েছি কি না খোঁজ নিয়েছিলেন। তখন থেকেই তার দিকে মন ঝুঁকে গিয়েছে। তাঁর বদান্যতায় ডোকরা শিল্পীরা এখন মহাজনি প্রথা থেকে বেরিয়ে এসেছেন। সমবায় থেকে টাকা পেয়ে শিল্পীরা সামগ্রী তৈরি করেন। তাছাড়া বিশ্ব বাংলা আমাদের কাছ থেকে প্রচুর মালও কেনে। ফলে আয় বেড়েছে শিল্পীদের পরিবারগুলিতে। বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজিত অগস্তি অবশ্য বলেন, তৃণমূল ‘খেলা হবে’ বললেও আমরা বলছি খেলা শেষ হয়ে গিয়েছে। আমরা বিকাশ করব।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Mamata Banerjee, #Bankura, #khela hobe, #Dokra Art

আরো দেখুন