মিটিং-মিছিলের আবেদনেও বিরোধীদের থেকে এগিয়ে তৃণমূল
মোট তিন দফায় ভোট হবে দক্ষিণ ২৪ পরগনায়(South 24 Pargana)। সব দলই তাদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে দিয়েছে। সেই মতো প্রচারও শুরু করেছে তারা। কিন্তু বাকি সব দলকে পিছনে ফেলে প্রচার কর্মসূচিতে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে তৃণমূল(TMC)। মানুষের সঙ্গে জনসংযোগে দ্বিতীয়স্থানে রয়েছে বিজেপি(BJP)। তারপর যথাক্রমে সিপিএম(CPIM), এসইউসিআই(SUCI) এবং কংগ্রেস(Congress)। সুবিধা অ্যাপে(Suvidha App) জমা পড়া আবেদনের নিরিখে এই তথ্য উঠে এসেছে। প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার পর থেকে বিজেপিতে যেভাবে কোন্দল শুরু হয়েছে, তাতে বেশিরভাগ জায়গায় তারা এখনও ঘর গুছিয়ে উঠতে পারেনি। প্রচারে তারা যে সময় দিতে পারছে না, তা আবেদনের সংখ্যাই বলে দিচ্ছে। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
নির্বাচন কমিশনের(ECI) নিয়ম অনুযায়ী, কোনও রাজনৈতিক দল প্রচার করতে গেলে তাদের এই অ্যাপে আগাম আবেদন করতে হয়। সেই মতো অনুমোদন দেওয়া হয়। মঙ্গলবারের হিসেব বলছে, তৃণমূলের আবেদনের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। সেখানে বিজেপি আবেদন করেছে ১,৩৭৯টি। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, মেটিয়াবুরুজে প্রচারের কোনও কর্মসূচি এখনও রাখেনি গেরুয়া শিবির। ফলতায় তাদের আবেদনের সংখ্যা মাত্র দুই। এই কেন্দ্রে প্রচার কর্মসূচিতে অধিপত্য রয়েছে তৃণমূলের। মগরাহাট পূর্বে বিজেপি মিটিং-মিছিল করার অনুমতি চেয়ে এখনও পর্যন্ত চারটি আবেদন জমা দিয়েছে। জেলায় প্রথম দফায় যে সব কেন্দ্রে ভোট হবে, তার মধ্যে রয়েছে গোসাবা। এই কেন্দ্রে প্রচারের জন্য তৃণমূল পাঁচশোরও বেশি আবেদন জমা দিয়েছে। বিজেপির আবেদনের সংখ্যা মাত্র ১১৯।
বিধানসভাওয়াড়ি যে চিত্র পাওয়া গিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, গোসাবার পাশাপাশি ডায়মন্ডহারবারে সর্বাধিক মিটিং-মিছিলের আবেদনপত্র জমা পড়েছে। তবে বারুইপুর পশ্চিমে তৃণমূলের (৩৯) থেকে বেশি আবেদন জমা দিয়েছে বিজেপি (৬৩)। এছাড়াও বেহালা পশ্চিম, সোনারপুর উত্তর, বিষ্ণুপুরের মতো কেন্দ্রে দু’দলের প্রচারের আবেদন প্রায় কাছাকাছি। বাসন্তী বা যাদবপুরেও বিজেপি’র প্রচারের আবেদনের সংখ্যা কম। সব মিলিয়ে জেলার ৩১টি কেন্দ্রের মধ্যে ২৭টিতে প্রচারে অনেকটাই এগিয়ে ঘাসফুল শিবির। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ৬টি কেন্দ্রে আবার বিজেপি’র তুলনায় সিপিএমের প্রচারের আবেদন বেশি। কুলতলি বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি ও এসইউসিআইয়ের প্রচারের হার প্রায় সমান সমান। সব মিলিয়ে এই জেলায় তৃণমূল ৩,১২৫টি, বিজেপি ১,৩৭৯টি, সিপিএম ৭৮৪টি, কংগ্রেস ৮৯টি এবং এসইউসিআই ২৫০টি আবেদন জমা দিয়েছে। সব মিলিয়ে জেলায় ৫ হাজার ৭৪৭টি আবেদন জমা পড়েছে। উল্লেখ্য, প্রতি দলেরই বেশ কিছু আবেদন বাতিলও হয়েছে।
কেন এই পরিস্থিতি? রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তৃণমূলই সর্বপ্রথম প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে। তারপরই তারা প্রচারে নেমে পড়েছে। সুবিধা অ্যাপে আবেদন করে বিভিন্ন স্লট ‘বুক’ করে ফেলেছে ঘাসফুল শিবির।
উল্টোদিকে, বিজেপি দফায় দফায় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। কিন্তু তারপর দলের অন্দরে যেভাবে ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছে, তাতে দলীয় কর্মীদের সামাল দিতেই বেশি সময় চলে যাচ্ছে। ফলে প্রচারে পিছিয়ে পড়ছেন গেরুয়া শিবিরের প্রার্থীরা। প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ না থাকলেও বাম-কংগ্রেস জোট তাদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে কিছুটা দেরি করেছে। ফলে তারাও প্রচারে নেমেছে অনেক পরে। এই ডামাডোলের ফায়দা তুলে প্রচারে কয়েক কদম এগিয়ে গিয়েছে তৃণমূল।